এখন ভারতের সাফ বক্তব্য হাসিনাকে ফেরত চাওয়ার আগে,বাংলাদেশের সেনাপ্রধান ওয়াকার উদ জামানের সঙ্গে কথা বলুন ইউনূস। আর ভারতের এই বক্তব্য কুটনীতিতে ভারতকে আরও একধাপ এগিয়ে রাখছে বলে মনে করছেন দুই-দেশেরই কুটনৈতিক মহল। অনেকেই বলছেন ভারতের কাছে হাসিনার ফেরত চাওয়া নিয়ে কোন মন্তব্য করার আগে, বাংলাদেশের ইউনূসের উচিৎ সেনাপ্রধানের কাছে কৈফিয়ৎ তলব করুন। সেজেগুজে মিডিয়ার সামনে গলা ফাটানো ছাত্রদের সেই দম কি আছে।
ভারত এমন একটি দেশ, যাকে সারা বিশ্ব কোন না কোন ভাবে সমীহ করে। সেখানে সেজেগুজে মিডিয়ার সামনে বসা কিছু ভুঁইফোড়ে ছাত্র নেতার কথায় কি, ভারত হাসিনাকে বাংলাদেশে পাঠানোর ব্যবস্থা করবে। ভারতের বক্তব্য, কেন তারা সেখ হাসিনাকে বাংলাদেশে পাঠাবেন। বাংলাদেশেরই সেনা ভারতের সঙ্গে কথা বলে সবরকম সহযোগীতার অনুরোধ জানিয়ে হাসিনাকে ভারতে পাঠিয়েছেন। ঘটনা হল গত ৫ই আগস্ট সেখ হাসিনাকে বাংলাদেশের সেনাবাহিনী সামরিক বিমানে করে দিল্লীর কাছে হিন্দন বিমানবন্দরে অবতরণ করেন। আর তার পরদিন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয় শঙ্কর জানান, শেখ হাসিনার বিমান যাতে দিল্লীর কাছে নামতে পারে তার জন্য সবরকমের ক্লিয়ারেন্সের জন্য ভারতের কাছে অনুরোধ জানানো হয়েছিল। এবং এই অনুরোধ করা হয়েছিল সেনাপ্রধানের তরফ থেকে। এখন প্রশ্ন এই তথ্য কি বাংলাদেশ ইউনূস সরকার জানে। যদি জানে তাহলে সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে যাওয়ার ক্ষমতা বা সাহস কি আছে ছাত্রনেতাদের। কারণ হাসিনার সময় যিনি সেনাপ্রধান ছিলেন,এখনও তিনিই সেনা প্রধান আছেন। অর্থাৎ সেনাবাহীনির নেতৃত্বের কোন পরিবর্তন হয়নি। ভারতের কুটনীতিকদের কথায়, হাসিনা আমাদের অতিথি হতে পারেন, কিন্তু তাকে আমরা ডেকে আনিনি বা তাকে হাইজ্যাক করে বাংলাদেশ থেকে ভারতে আনা হয়নি। তাছাড়া হাসিনা তো আর নিজে নিজে প্লেন চালিয়ে চলে আসেনি। রাষ্ট্রের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান বা স্তম্ভ হল সেনাবাহীনি,যার মদতে বা সহযোগীতায় হাসিনা ভারতে আসেন। আর হাসিনা যখন দেশ ছাড়ে তখন পর্যন্ত তার বিরুদ্ধে কোন ফৌজদারি মামলা ছিল না। এখন যে হাজার হাজার মামলা করা হচ্ছে, সেটা পাকিস্তানি মদতে কিছু ষড়যন্ত্রীকারিদের ষড়যন্ত্র ছাড়া আর কিছুই নয়। আর ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের যে বন্দি প্রত্যার্পণ চুক্তি আছে তাতে একটি ধারা রয়েছে, যেখানে বলা আছে যাকে ফেরৎ চাওয়া হচ্ছে তাকে প্রত্যার্পণ যুক্ত কোন মামলায় ফেরারী আসামী হতে হবে। হাসিনার ক্ষেত্রে সে যুক্তি খাটে না।
অতয়েব হাসিনাকে প্রত্যার্পনের কোন প্রশ্নই ওঠে না। সেনাবাহিনীর বিমানে এবং সহযোগীতায় যখন হাসিনা দেশ ছাড়লেন, তখনতো সেনাকেই প্রশ্ন করা উচিৎ। কিন্তু সেটা না করে, বাংলাদেশের জনগনকে বিভ্রান্ত করার জন্য, ইউনূস সরকার বলছে যে তারা ভারতের উপর চাপ তৈরী করছ হাসিনাকে ফেরত পেতে। ভয দেখাচ্ছে সেভেন সিস্টার আলাদা করার। পিছন থেকে সমর্থন যারা করছে, তাদের অবস্থা কি সেটা সারা বিশ্ব জানে। ত্রিশ লক্ষ্য মানুষকে মেরেছে যারা, তারাই নাকি বন্ধু। পাকিস্তানের সহযোগীতা নিয়ে ভারতকে সেভেন সিস্টারের ভয় না দেখিয়ে, আরাকান আর্মির হাত থেকে দেশের সীমান্ত বাঁচানোর চেষ্টা করুন। নয়তো একদিন ভারত দখলের স্বপ্ন দেখতে দেখতে নিজেদের দেশটাই না অন্যের দখলে চলে যায়। তাছাড়া আপনাদের অধিকার কি আপনাদের দেশের জনগন মেনে নিয়েছে, যে আপনারা হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে তার বিচার করবেন। ভারত তো জানতে চাইবে কে বা কারা তাকে বিচারের জন্য চাইছেন। যারা চাইছেন তারা কি নির্বাচিত কোন প্রতিনীধি। তা তো নয়। বলা হচ্ছে হাসিনা জোর করে ভোট দখল করে নির্বাচিত হয়েছেন। তো এখন যে প্রতিবাদটা করেছেন, সেটা তখন করেন নি কেন। আর ভোট নিয়ে, কোন দেশের কোন বিরোধীই সন্তুষ্ট হননি। এমনকি গত নির্বাচনে ট্রাম্পও হেরে গিয়ে বলেছিলেন তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হয়েছে। আপনাদের দেশের অনেকের মতই অনেক ভারতীয় মনে করেন যে সুষ্ঠ নির্বাচন হলে,এবং আওয়ামিলীগ দলটিকে ভোটে অংশ গ্রহন করতে দিলে, তারাই আবার ভোটে জিতবে। আর যদি বিএনপি জেতে, তাহলে বিএনপি জনগনের দ্বারা নির্বাচিত সরকার হিসাবে হাসিনাকে ফেরত চাইতে পারেন। হাসিনাকে নিয়ে ভারত যে সঠিক পদক্ষেপ করবে তা পাকিস্তানপন্থি বাংলাদেশীরা বুঝতে না পারলেও সারা পৃথিবী বুঝেছে, তাই তারা এ নিয়ে কোন মন্তব্য করেনি।
Discussion about this post