গত শনিবার আওয়ামী লীগকে বাংলাদেশে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে মহম্মদ ইউনুস কি নিজের বিপদ ডেকে আনলেন! সেদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ডঃ মোহাম্মদ ইউনুস এবং তার বাহিনী ক্ষমতায় আসার পর থেকেই বাংলাদেশ ছুড়ে একের পর এক দুর্নীতি শুরু করে দেশটিকে একটি সন্ত্রাসী রাষ্ট্রে পরিণত করার দিকে এগিয়ে নিয়ে চলেছে। অন্যদিকে মানবিক করিডোর দিয়ে মিয়ানমারের বিদ্রোহী গোষ্ঠীর হাতে মার্কিন অস্ত্র পৌঁছে দেওয়ার কাজটিও তার নিরাপত্তা উপদেষ্টার সাহায্যে করে ফেলেছে প্রধান উপদেষ্টা মোহাম্মদ ইউনুস, তবে এই বিষয়টিতে দেশের সেনাবাহিনীকে রাজি করানো সম্ভব হয়নি বলে জল্পনা ছড়িয়েছে বিভিন্ন মহলে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন ভারত-পাক সংঘাত শুরু হওয়ার পর ভারতের উত্তর পূর্বাঞ্চলীয় সাতটি রাজ্যকে অশান্ত করে তোলার জন্য বাংলাদেশে অবাধে প্রবেশ করছে পাকিস্তানি সন্ত্রাসীরা। ইতিমধ্যেই দেখা গিয়েছে ভারতের জঙ্গি হামলা ঘটানো এবং জঙ্গিবাদে মদত দেওয়ার অভিযোগে পাকিস্তানের মিসাইল হামলা শুরু করেছে ভারত এছাড়াও নিয়েছে বেশ কিছু কূটনৈতিক পদক্ষেপ। তেমনি বাংলাদেশ একের পর এক দুর্নীতির ঘটনার সঙ্গে জড়িয়ে যাওয়াতে এখনো পর্যন্ত সরাসরি না হলেও বাংলাদেশকে যে আন্তর্জাতিক স্তরে প্রশ্নের মুখে দাঁড় করাবে ভারত তা বলাই বাহুল্য।
বাংলাদেশে বর্তমানে অর্থনীতি একেবারে তলানিতে গিয়ে ঠেকেছে। কোন বিদেশী বিনিয়োগ নেই, লক্ষ লক্ষ শ্রমিক বেকার কারণ সমস্ত শিল্প প্রতিষ্ঠান ও কারখানা বন্ধ হয়ে গিয়েছে। আবার ভারত ট্রান্সশিপমেন্ট চুক্তি বাতিল করায়, পণ্য পরিবহনে ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় স্বল্প খরচে পণ্য রপ্তানি করার যে আশ্বাস দেওয়া হয়েছিল বিদেশী কোম্পানিগুলিকে বাংলাদেশের তরফে, সেগুলিও কার্যত বন্ধ হওয়ার জোগাড়। মোহাম্মদ ইউনুসের শাসনামলে এই নয় মাসে শেয়ার বাজার থেকে ৮৫ হাজার কোটি টাকা উধাও হয়ে গিয়েছে, ২৫ হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার হয়ে গিয়েছে। বিদ্যুৎ সরবরাহ থেকে দ্রব্যমূল্য কোন কিছুর সঙ্গেই এটি উঠতে পারছে না মোহাম্মদ ইউনুসের প্রশাসন। তাই এখন তাদের ক্ষমতা ধরে রাখতে একটাই অস্ত্র তাদের হাতে ছিল তা হল আওয়ামী লীগকে বাংলাদেশে নিষিদ্ধ করা বলছেন বিশেষজ্ঞরা।
বেশ কিছু মাস আগে সংবাদ মাধ্যমের সাক্ষাৎকারে অন্তর্বর্তীকালের সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মোহাম্মদ ইউনুস স্পষ্টভাবে জানিয়েছিলেন দেশে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার কোন পরিকল্পনা তার সরকারের নেই। জুলাই আন্দোলন ও গণহত্যা নিয়ে আওয়ামী লীগের উপর দায়িত্ব আপনার জন্য জাতিসংঘকে দিয়ে একটি রিপোর্ট তৈরি করেছিল ডঃ মোহাম্মদ ইউনুস। রিপোর্টে ৩৭০ নম্বর অনুচ্ছেদে বলা হয়েচ্ছিল রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ করা থেকে বিরত থাকুন, যা বাংলাদেশকে বহুত দলীয় গণতন্ত্রের দিকে এগিয়ে যেতে বাধা সৃষ্টি করবে। এবং বাংলাদেশে একটা বিরাট অংশের ভোটারদের ভোটকে অস্বীকার করা হবে। এখানে প্রশ্ন হচ্ছে ডঃ মুহাম্মদ ইউনুস এর মত একজন মানুষ কি বুঝতে পারছিলেন না যে বাংলাদেশে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করলে তাকে কোন কোন বিপদের মুখে পড়তে হবে?
এর উত্তরে বিশেষজ্ঞরা বলছেন আসলে মোহাম্মদ ইউনুস কোনভাবেই বাংলাদেশ আওয়ামী দেখতে ভাঙতে পারছিলেন না। গত বছর ৫ই আগস্টে গণঅভ্যুত্থানে অচেনা সরকারের পতনের পর থেকে অন্তর্ভুক্তি সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মোহাম্মদ ইউনুস তিনি দেশে-বিদেশী নানারকম শক্তি কাজে লাগিয়ে বাংলাদেশ থেকে আওয়ামীলীগকে ভেঙে দিয়ে নতুন একটি রাজনৈতিক দল গড়ার জন্য নানা রকম প্রচেষ্টা চালিয়ে ছিলেন। যে কারণে তার দলের সন্ত্রাসীরা সমস্ত দোষ সেনাবাহিনীর উপর চাপিয়ে দিয়ে একটি বিফ্রমড আওয়ামী লীগের গল্প তৈরি করার চেষ্টা করেছিল। তবে এটা সত্যতা যে কতটা সেটা বুঝতে কারোরই অসুবিধা হয়নি, যার ফলে হাসনাত এবং সারাজিসদের রাজনৈতিক ক্যারিয়ার হুমকির মুখে পড়ে। আর দেশের সেনাবাহিনীকে চটিয়ে তারা দেশের রাজনীতি করবে তেমন শক্তিহীন সেনাবাহিনী হয়তো সে দেশে নেই বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞ মহল। সে কারণেই নিজেদেরকে আরও শক্তিশালী করে তুলতে এবং রাজনৈতিক অঙ্গনে নিজেদের প্রভাব বিস্তার করতে দেশে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়ে মাঠে নেমে পড়ে নিজেদের অবস্থান দৃঢ় করতে।
Discussion about this post