মানিকতলায় জয় প্রয়াত নেতা সাধন পাণ্ডের স্ত্রী সুপ্তি পাণ্ডের। রাস্তায় নেমে উল্লাস কন্যা শ্রেয়ার। মালার একটা জ্বালা আছে। বাবা সাধন পাণ্ডের কথা স্মরণ করে বললেন কন্যা শ্রেয়া। ফল ঘোষণা হল উপনির্বাচনের। বাংলার ৪ টি আসনের মধ্যে ৩ টি আসনে নতুন করে ফুটল জোড়াফুল। মানিকতলা আসনটি আগে থেকেই তৃণমূলের হাতে ছিল। লোকসভা ভোটের পর বাংলায় বিধানসভা উপনির্বাচনেও জয়ের ধারা অব্যাহত রাখল ঘাসফুল শিবির। আমাদের আলোচনার কেন্দ্রতে মানিকতলা বিধানসভা কেন্দ্র। ২০২১ সালে সংশ্লিষ্ট কেন্দ্র থেকে জয় পায় তৃণমূল। ভোটে জয়ী হন প্রয়াত নেতা সাধন পাণ্ডে। পরের বছরেই মৃত্যু হয় বর্ষিয়ান নেতার। সেই থেকে আসনটি ফাঁকা পড়েছিল। সাধন পাণ্ডে ভোটে লড়ে ছিলেন বিজেপির কল্যাণ চৌবের বিরুদ্ধে। কল্যাণ চৌবে সাধন পাণ্ডের বিরুদ্ধে নির্বাচনে হস্তক্ষেপের অভিযোগ তুলেছিলেন।
বিজেপি প্রার্থীর দাবি ছিল তৃণমূল প্রার্থী সাধন ক্রেতা সুরক্ষা দফতরের মন্ত্রী হওয়ার সুবাদে স্বনির্ভর গোষ্ঠীকে কাজে লাগিয়ে বিধানসভার ভোটারদের ৫০০ টাকা করে দিয়ে ভোট কিনেছেন। গত ২ বছর ধরে মামলা ঝুলেছিল হাইকোর্টে।এরপর মামলা গড়ায় সুপ্রিম কোর্টে। শীর্ষ আদালতের ভৎসর্নার মুখে পড়েন কল্যাণ। প্রশ্নের মুখে পড়ে যায় তাঁর অল ইন্ডিয়া ফুটবল ফেডারেশনের সভাপতির পদ। তারই মধ্যে হাই কোর্ট থেকে ব্যক্তিগত কারণে মামলা প্রত্যাহার করার আর্জি জানান কল্যাণ। আইনি জট মিটতেই বিধানসভা উপ-নির্বাচনে প্রার্থীর নাম ঘোষণা করতে দেরি করেনি তৃণমূল। প্রথমে এই আসনে লড়ার জন্য সাধন কন্যা শ্রেয়া পাণ্ডের নাম উঠে আসে। শ্রেয়াকে নিয়ে দলের মধ্যে দ্বিমত থাকায় শ্রেয়ার বদলে প্রয়াত নেতার স্ত্রী সুপ্তি পাণ্ডের নাম ঘোষণা করেন মমতা। মানিকতলা আসন থেকে জয়ের বিষয়ে প্রথম থেকেই আত্মবিশ্বাসী ছিলেন সুপ্তি। ভোটের ফল বেরোতেই উচ্ছ্বাসে মাতল উত্তর কলকাতার তৃণমূল কর্মী-সমর্থকরা।
মায়ের জয়ে রাস্তায় নেমে কর্মী-সমর্থকদের সঙ্গে উল্লাসে মাতলেন শ্রেয়াও। উচ্ছ্বসিত তৃণমূল কর্মী-সমর্থকরা শ্রেয়ার গলায় মালা পরিয়ে দিলেন। সবুজ আবির খেলায় মেতে উঠলেন সকলে। এদিকে প্রার্থী কল্যাণের হারে গান ধরলেন কুণাল। ২০২১ এর মতো ২০২৪ এর উপনির্বাচনেও প্রার্থী ছিলেন বিজেপির কল্যাণ চৌবে। রায়গঞ্জ, বাগদা, রানাঘাট দক্ষিণে উপনির্বাচন হয়েছে বিধায়কেরা দলবদল করায়। লোকসভা ভোটের আগে তিনটি আসনে ২০২১ এর বিধানসভা ভোটে জয়ী প্রার্থীরা তৃণমূলে যোগদান করেন। তাদেরকেই লোকসভা ভোটে দাঁড় করায় তৃণমূল। জিততে পারেননি তাঁরা। তবে হার মানেনি ঘাসফুল শিবির। বাগদা ও মানিকতলা বাদে রায়গঞ্জ ও রানাঘাট লোকসভা থেকে হেরে যান কৃষ্ণ কল্যাণী ও মুকুটমণি অধিকারী। লোকসভা ভোটে দলের মান রাখতে না পারলেও বিধানসভা ভোটে জয়ের মুকুট ছিনিয়ে আনলেন তাঁরা। ওদিকে মানিকতলা ও বাগদা থেকে জিতে গেলেন সুপ্তি পাণ্ডে ও মধুপর্ণা ঠাকুর। সবমিলিয়ে রাজ্য বিধানসভায় আসন কমল বিজেপির।
Discussion about this post