প্রথমে জানা গিয়েছিল আরজি করে খুন হওয়া তরুণী চিকিৎসকের দেহের কলার বোন ও পেলভিস ভেঙে গিয়েছে। সোমবার ময়নাতদন্তে রিপোর্টের পরে পুলিশ জানাচ্ছে কোনও হাড় ভাঙেনি। তবে হাড় না ভাঙলেও যে ধরনের আঘাত এবং বীভৎসতার কথা বলছে ময়নাতদন্তের রিপোর্ট, তা শিউরে উঠার মত। তাতে সন্দেহ আরও দৃঢ় হয়, যে সে রাতে তরুণীর উপর এক নয় একাধিক জন অত্যাচার চালিয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট বিস্তারিত ভাবে খুঁটিয়ে দেখে পুলিশের দাবি, ধর্ষণের আগে প্রচন্ড মারধর করা হয়েছিল তরুণীকে। তার পরেও তিনি প্রতিরোধ করলে, প্রবল বল প্রয়োগ করা হয়েছিল তাঁর উপর।
মৃতার বুকে আঘাত লাগে, শ্বাসরোধ করে দমবন্ধ করা হয়। ভেঙে যায় থাইরয়েড কার্টিলেজ, গলার হাড়েও নির্যাতনের চিহ্ন পাওয়া গিয়েছে। গলা টিপেই খুন করা হয়েছে। ধস্তাধস্তির সময় চশমার কাচ ভেঙে চোখে ঢুকে রক্ত বেরিয়ে যায় তরুণীর। ধস্তাধস্তির সময়ে নির্যাতিতার মুখ চেপে দেওয়ালে ঠুকে দেওয়া হয়েছিল মাথা। মুখে আঁচড়ের ক্ষত রয়েছে। নিজেকে বাঁচাতে প্রাণপণ চেষ্টা চালিয়েছিলেন নির্যাতিতা।পাশাপাশি, তাঁর যৌনাঙ্গে গভীর ক্ষত রয়েছে। এতই ভয়ানক পেনিট্রেশন হয়, যার জেরে বিপুল রক্তপাত ঘটে এবং হাইমেন ফেটে যায়। রিপোর্ট বলছে, নির্যাতিতার যোনির ভিতরে ১৫০ গ্রাম বীর্য মিলেছে।
যা ইতিমধ্যেই ফরেনসিক ল্যাবে পাঠানো হয়েছে। এবং সেই ১৫০ গ্রাম বীর্য এক ব্যক্তির হতে পারে না। এবং যে একাধিকবার পেনিট্রেশন হয়েছে তা এক ব্যক্তি করেনি। অর্থাৎ ময়নাতদন্তে যা তথ্য উঠে এসেছে তা গণধর্ষণের। পূর্ব বর্ধমানের উপ মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক এ প্রসঙ্গে বলেন, নিহত তরুণীর যৌনাঙ্গের ভেতর থেকে প্রায় ১৫০ গ্রামের বেশি তরল নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। এর মধ্যে কিছুটা হয়তো রক্তমাখা বীর্য হতে পারে। চিকিৎসক গোস্বামী আরো বলেন, ‘আমাদের যেটা মনে হয় এটা একজনের বীর্য হতে পারে না। নমুনা ঠিক করে পরীক্ষা করলে দেখা যেতে পারে তিন-চারজনের বীর্য হতে পারে। মেয়ের মা-বাবা, পরিবারের যা আশঙ্কা, আমাদেরও তাই আশঙ্কা যে এটা একজনের ধর্ষণ নয়, এটা গণধর্ষণের ঘটনা। মৃতার শরীরে এত আঘাত একজনের পক্ষে সম্ভব নয়। তাঁকে শ্বাসরোধ করে অথবা ঝুলিয়ে মারা একার পক্ষে সম্ভব ছিল না’।
Discussion about this post