দিন কয়েক আগের ঘটনা। যাত্রীদের না নামিয়েই চুঁচুড়া স্টেশন পার করেছিল বর্ধমানগামী লোকাল ট্রেন। যা নিয়ে হইচই কম হয়নি। সেই রেশ কাটতে না কাটতেই এবার অন্য বিপত্তি হাওড়া ডিভিশনে। ভুল ঘোষণার জেরে আতঙ্ক তৈরি হল হাওড়া স্টেশনে। কারণ, গার্ড ছাড়াই ট্রেন রওনা দিতে গেখে হুড়োহুড়ি বেঁধে গেল হাওড়ায়। নির্ধারিত সময়ের অনেক আগেই রওনা দিল লোকাল ট্রেন। যা নিয়ে যাত্রীদের মধ্যে কৌতুহল শুরু হয়েছিল সবে। এর মাঝেই জানা গেল ওই ট্রেনে নেই কোনও গার্ড। ফলে আতঙ্কে অনেকেই লাফ দিয়ে নেমে পড়তে শুরু করেন প্ল্যাটফর্মে। এমনকি মহিলা যাত্রীদের অনেকেই আতঙ্কে চিল চিৎকার জুড়ে দেন। হইচই শুরু হতেই থামলো ট্রেন। স্বস্তি ফিরল যাত্রীদের। আর শেষ পর্যন্ত জানা গেল ওই ট্রেনটি যাচ্ছিল কারশেডে।
ঘটনাটি রবিবার রাতের। হাওড়া স্টেশন থেকে শেষ ব্যান্ডেল লোকাল ছেড়ে যাওয়ার কথা রাত ১১টা ৪৫ মিনিটে। যথারীতি সময়ের কিছুটা আগেই ঘোষণা হয় শেষ ব্যান্ডেল লোকাল ছাড়া হবে সাত নম্বর প্ল্যাটফর্ম থেকে। স্টেশনের ডিসপ্লে বোর্ডেও তাই দেখায়। ফলে যাত্রীরা সাত নম্বর প্ল্যাটফর্মের দিকে এগিয়ে যান। সেখানে তখন একটি লোকাল ট্রেন দাঁড়িয়ে ছিল। ফলে যাত্রীরাও উঠে পড়েন তাতে। কিন্তু রাত ১১টা ৩৪ মিনিট নাগাদ আচমকাই সাত নম্বরে দাঁড়িয়ে থাকা ট্রেনটির চাকা গড়াতে শুরু করে। কেউ কেউ বলতে থাকেন গার্ড ছাড়াই ট্রেনটি রওনা দিয়েছে। ফলে যাত্রীদের মধ্যে তীব্র আতঙ্ক ছড়ায়। দূর্ঘটনার আশঙ্কায় অনেকেই সেই চলন্ত ট্রেন থেকে প্ল্যাটফর্মে লাফিয়ে নেমে পড়েন। জানা যায়, দুই মহিলা প্ল্যাটফর্মে পড়েও যান। অবশেষে যাত্রীদের চিল চিৎকারে থেমে যায় ট্রেনটি। হাফ ছেড়ে বাঁচেন যাত্রীরা।
এই ঘটনার পরই হাওড়া স্টেশনে তুমুল বিক্ষোভ শুরু হয়। ছুটে আসেন রেলের আধিকারিক এবং আরপিএফ জওয়ানরাও। পরে জানা যায়, ভুল বোঝাবুঝির জেরেই এই ঘটনা। আসলে সাত নম্বর প্ল্যাটফর্মে দাঁড়িয়ে থাকা ফাঁকা ট্রেনটি কারশেডে যাওয়ার কথা ছিল। তারপর অন্য একটি ট্রেন ওই প্ল্যাটফর্মে এসে শেষ ব্যান্ডেল লোকাল হয়ে ছাড়ার কথা ছিল। কিন্তু সেটা ঘোষণা হয়নি। ফলে যাত্রীরা দাঁড়িয়ে থাকা ফাঁকা ট্রেনেই উঠে পড়েন। তবে শেষ পর্যন্ত মধুরেণ সমাপয়েৎ হয়েছে। শেষ ব্যন্ডেল লোকাল রাত ১১টা ৪৫ মিনিটের কিছু সময় পরে ওই সাত নম্বর প্ল্যাটফর্ম থেকেই যাত্রীদের নিয়ে ছেড়ে যায়। উল্লেখ্য, কোনও ট্রেন প্ল্যাটফর্ম ছেড়ে কারশেড যাওয়ার সময় কোনও গার্ড থাকেন না। একজন সান্টার ট্রেনটিকে চালিয়ে কারশেডের দিকে নিয়ে যান। এটা অনেকেই জানেন না, তাই আতঙ্ক ছড়ায় হাওড়া স্টেশনে।
Discussion about this post