আবারও রেল দুর্ঘটনা। বিগত দুই মাসে বেশ কয়েকটি রেল দুর্ঘটনা ঘটেছে ভারতে। শনিবার ভোরে ফের দুর্ঘটনার কবলে পড়ল সেকেন্দ্রাবাদ থেকে শালিমারের দিকে আসা ডাউন সাপ্তাহিক এক্সপ্রেস। রেল সূত্রে খবর, যাত্রীবাহী ট্রেনটির তিনটি কামরা লাইনচ্যুত হয়েছে শালিমারের আগে নলপুরের কাছে। ঘটনাস্থলে পৌঁছেছেন দক্ষিণ-পূর্ব রেলের আধিকারিকেরা, হতাহতের কোনও খবর নেই।
দক্ষিণ-পূর্ব রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, শনিবার ভোর ৫টা ৩১ মিনিট নাগাদ ডাউন সেকেন্দ্রাবাদ-শালিমার সাপ্তাহিক এক্সপ্রেসের দু’টি কামরা এবং একটি পার্সেল ভ্যান খড়্গপুর ডিভিশনের নলপুরের কাছ দিয়ে যাওয়ার সময় লাইনচ্যুত হয়েছে। এই ঘটনায় যাত্রীদের কারও বড় কোনও আঘাত লাগেনি। ওই ট্রেনের যাত্রীদের জন্য বিশেষ লোকাল ট্রেন ও কয়েকটি বাসের ব্যবস্থা করা হয়েছে। সেই সঙ্গে চলছে ট্রেনের লাইনচ্যুত কামরাগুলি সরানোর কাজ। জানা যাচ্ছে এই দুর্ঘটনার ফলে দক্ষিণ-পূর্ব শাখায় ট্রেন চলাচলে ব্যাপক প্রভাব পড়েছে। বহু দূরপাল্লার ও লোকাল ট্রেন আটকে পড়েছে বিভিন্ন স্টেশনে। ফলে যাত্রী ভোগান্তি অব্যাহত।
প্রত্যক্ষদর্শীদের কথায়, শনিবার ভোরে প্রচণ্ড শব্দে কেঁপে ওঠে ট্রেনটি। সেই সঙ্গে প্রবল ঝাঁকুনি দিয়ে থেমে যায় ট্রেনটি। রেল সূত্রে জানা যাচ্ছে, ট্রেনটি যথারীতি ডাউন লাইনে চলছিল। কিন্তু ইঞ্জিন আচমকা মাঝের লুপ লাইনের দিকে ঢুকে ফের ডাউন লাইনের দিকে চলে আসে। এর ফলেই ইঞ্জিনের পিছনে থাকা পার্সেল ভ্যান ও দুটি কামরা লাইনচ্যুত হয়ে যায়। কী ভাবে তা সম্ভব হল, তা নিয়ে এখনও ধন্দে রেল আধিকারিকেরা। ওই ডাউন লাইনটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এমনকি বেঁকে গিয়েছে লাইনের একাংশ। যে লোহার ক্লিপ দিয়ে লাইন সংযুক্ত রাখা হয়, সেগুলিও ভেঙে টুকরো হয়ে চারদিকে ছিটকে পড়েছে। লাইনের সিমেন্টের ঢালাই স্লিপারও ভেঙে পড়েছে। রেল কর্মীদের গাফিলতি নাকি নাশকতা, তা জানতে ইতিমধ্যেই বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে দক্ষিণ পূর্ব রেলের শীর্ষ কর্তারা।
তবে রেল কর্তাদের বক্তব্য, এখন দুর্ঘটনাগ্রস্ত কামরাগুলি সরানো ও রেললাইন মেরামত করে ট্রেন পরিষেবা দ্রুত স্বাভাবিক করাই এখন লক্ষ্য। জানা যাচ্ছে নলপুরের কাছে যেখানে দুর্ঘটনা ঘটেছিল সেখানে তিনটি লাইন রয়েছে। দুই পাশে আপ ও ডাউন লাইন, মাঝখানে মিডল লাইন। এই মিডল লাইনে দু-দিকেই ট্রেন চালানো হয় প্রয়োজন মতো। দুর্ঘটনার সময় ডাউন শালিমার এক্সপ্রেসের গতি ছিল ঘণ্টায় ১৫ থেকে ২০ কিলোমিটারের মধ্যে। ফলে বড়সড় বিপদ হয়নি। তবে যদি ওই সময় অন্য কোনও দিক থেকে ট্রেন চলে আসতো, তবে কি হতো সেটা ভেবেই কেঁপে উঠছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
Discussion about this post