আরওসএস থেকে প্রধানমন্ত্রী ও বিজেপিকেও তাঁর ভাষণে নিশানা করলেন রাহুল গান্ধী। লোকসভায় তাঁর ভাষণের ঝাঁঝ আজ টের পেয়েছে রিরোধীরা। খোদ প্রধানমন্ত্রীও দুবার তাঁর কথা প্রতিবাদ করে ওঠেন। রাষ্ট্রপতির প্রারম্ভিক ভাষণ নিয়ে আলোচনায় বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধীর হিন্দু মন্তব্যের জেরে উত্তাল হল লোকসভা। এমনকি রাহুলের বক্তব্যের মাঝেই নিজের আসন থেকে উঠে দাঁড়িয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। রাহুলের ক্ষমা চাওয়া উচিত বলে দাবি করেন, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধীর হিন্দু মন্তব্যের জেরে উত্তাল হল লোকসভা। রাষ্ট্রপতির প্রারম্ভিক ভাষণ নিয়ে আলোচনায় বক্তব্য রাখেন রাহুল। এনডিএ জোটের সাংসদদের উদ্দেশে বিরোধী দলনেতা বলেন, “যাঁরা নিজেদের হিন্দু বলেন, তাঁরা কেবল হিংসার কথা বলেন, ঘৃণার কথা এবং অসত্য কথা বলেন।”
এরপরই এনডিএ জোটের সাংসদরা হইচই শুরু করেন। রাহুলকে ক্ষমা চাইতে হবে বলে দাবি তোলেন। এমনকি রাহুলের বক্তব্যের মাঝেই নিজের আসন থেকে উঠে দাঁড়িয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেন, “গোটা হিন্দু সম্প্রদায়কে হিংসাশ্রয়ী বলে দেগে দেওয়া খুবই বিপজ্জনক।” রাহুলকে ক্ষমা চাইতে বলে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বলেন, “উনি জানেন কোটি কোটি মানুষ নিজেকে গর্বভরে হিন্দু বলে থাকেন। কোনও ধর্মের সঙ্গে হিংসাকে জড়িয়ে দেওয়া ভুল। তাঁর ক্ষমা চাওয়া উচিত।” রাহুলের এমন মন্তব্যের তীব্র বিরোধিতায় সরব হয় শাসকদল। এর বিরোধিতা করে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেন, “আপনি এভাবে গোটা হিন্দু সম্প্রদায়কে দোষারোপ করতে পারেন না।” অমিত শাহ বলেন, “বিরোধী নেতা বলেছেন, যাঁরা নিজেকে হিন্দু বলেন তাঁরা হিংসা করেন। এই দেশে কোটি কোটি মানুষ গর্বের সঙ্গে নিজেকে হিন্দু বলেন। তাহলে তারা সকলেই কী হিংসা করেন? হিংসার ভাবনাকে কোনও ধর্মের সঙ্গে জুড়ে দেওয়া অত্যন্ত অন্যায়। ওনার উচিত ক্ষমা চাওয়া। রাহুলকে আক্রমণ করতে গিয়ে কংগ্রেস আমলের জরুরি অবস্থা এবং শিখ বিরোধী হিংসার প্রসঙ্গ তোলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। সব মিলে লোকসভা উত্তালময়।
এদিকে রাহুল গান্ধীর মন্তব্য নিয়ে প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে সংবাদসংস্থাকে অরুণ গোভিল বলেন, “অত্যন্ত ভুলভাল কথা বলেছেন। ওনার এমন কথা বলা উচিত হয়নি। আমি একজন হিন্দু। গর্বিতভাবে বলছি, আমি হিন্দু। শুধু আমার সামনে নয়, সমস্ত হিন্দুদের কাছে ওনার ক্ষমা চাওয়া উচিত। উনি(রাহুল গান্ধী) বিস্তর নাটক করার চেষ্টা করেছেন। কিন্তু বলতে খারাপ লাগছে উনি তা পারেন না। নাটক করতে গেলেও জানতে হবে কী বলতে হয়। এখন বড় হতে পারেননি। বিপক্ষে অপরিণত এমন নেতা দেখে সত্যিই খারাপ লাগে।” তিনি লোকসভায় যা বলেছেন, তার মধ্যে কোনও অসত্য কিছু নেই। ‘হিন্দুত্ব’, নিট এবং অগ্নিপথ প্রকল্প প্রসঙ্গে তাঁর মন্তব্য নিয়ে শাসকজোটের শোরগোলের পরই মঙ্গলবার তার পাল্টা জবাব দিয়েছেন লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধী। সংসদে ঢোকার আগে সাংবাদিকের প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, “মোদীজির জমানায় সত্যের কণ্ঠরোধ করা হয়। কিন্তু বাস্তবে সত্যকে চাপা দিয়ে রাখা যায় না। তারা যত খুশি কণ্ঠরোধ করার চেষ্টা করুক না কেন, আমার যা বলার, তাই বলেছি। সত্যিটা সত্যিই।”
Discussion about this post