তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষের এক ফোনেই সমাধান। কাটল অর্ণব দাম ওরফে ‘কমরেড বিক্রমে’র ভর্তির জট। নির্ধারিত সময়ের প্রায় ঘণ্টাখানেক আগে তাঁকে বর্ধমান কেন্দ্রীয় সংশোধনাগার থেকে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ে আনা হয়। সোমবার দুপুর তিনটেয় তাঁর কাউন্সেলিং শুরু হয়। গোলাপবাগ ক্যাম্পাসের কম্পোজিট আর্টস বিল্ডিংয়ের কাদম্বিনী গঙ্গোপাধ্যায় মেমোরিয়ালে কাউন্সেলিং হয় তাঁর। ইতিহাস বিভাগে পিএইচডি-তে ভর্তি হন। কাউন্সেলিংয়ের পর বেরিয়ে সকলকে ধন্যবাদ জানান অর্ণব। শনিবার বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য গৌতম চন্দ্রের সঙ্গে টেলিফোনে কথা হয় কুণাল ঘোষের। আলোচনা ইতিবাচক হয়েছে বলেই জানিয়েছিলেন তৃণমূল নেতা। সোমবার অর্ণবের কাউন্সেলিং শুরুর আগেই সাংবাদিক বৈঠক করেন উপাচার্য। তিনি বলেন, “প্রাক্তন সাংসদ কুণাল ঘোষের আশ্বাসে অর্ণবের ভর্তি প্রক্রিয়ার জট কেটেছে। কাউন্সেলিং শুরু করা হয়েছে। আমরা কারাদপ্তর থেকে যা জানতে চেয়েছিলাম তার সব আশ্বাস পেয়েছি। কারাদপ্তরের চিঠিও এসে যাবে আশা করি।”
প্রসঙ্গত, জেলে বসে পড়াশোনা করে পিএইচডি-র প্রবেশিকা পরীক্ষায় প্রথম হয়েছেন মাওবাদী নেতা অর্ণব দাম। তারপরেও তাঁর পিএইচডি করার ক্ষেত্রে ‘অনাবশ্যক জটিলতা’ তৈরি করে বাধা সৃষ্টি করা হচ্ছে জানিয়ে ময়দানে নেমেছিলেন তৃণমূল। ওই বিষয়ে কথা বলেছিলেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু এবং কারামন্ত্রী অখিল গিরিরও। অর্ণব নিজের যোগ্যতা প্রমাণ করেছে। ওকে পিএইচডি করতে দিতে হবে। এই দাবিতে সোশাল মিডিয়ায় সরব হয়েছিলেন কুণাল। তাঁর অভিযোগ ছিল, ওই মাও নেতার ভর্তিতে অহেতুক জটিলতা তৈরি করছেন বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য।
কারণ হিসাবে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের তরফে নিয়মের দোহাই দেওয়া হয়। বলা হয়েছে, গবেষণা করতে হলে অন্ত্যত প্রথম ৬ মাসের কোর্স ওয়ার্ক বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে হাজির থেকে করতে হয়। জেলবন্দি অর্ণব তা করবেন কীভাবে ? প্রশ্ন তুলেছিল বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এ বিষয়ে ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য গৌতম চন্দ্র মঙ্গলবার বলেছিলেন, “অর্ণবকে কীভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়ে আসা হবে তাঁর নিরাপত্তার বিষয়টি কীভাবে কী করা হবে, এই সমস্ত বিষয়গুলি বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে হুগলি সংশোধনাগারের সুপারের কাছে চিঠি দিয়ে জানতে চাওয়া হয়েছে। তাই আপাতত কাউন্সেলিং স্থগিত রাখা হয়েছে। সংশোধনাগার কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে উত্তর আসার পরেই আমরা এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেব।” অবশেষে কুনাল ঘোষ এর এক ফোনেই সমস্ত জটিলতা কাটলো।
Discussion about this post