মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হুঁশিয়ারির পরে নড়ে চরে বসেছে পুলিশ ও প্রশাসন। বেআইনি ভাবে দখল করে রাখা সরকারি জমিকে মুক্ত করতে ময়দানে নেমেছে প্রশাসন। নবান্নে প্রশাসনিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন আসানসোল শহরে পুকুর ভরাট করে আরএসএস এর একটি তিনতলা ভবন তৈরি করা হয়েছে। তারপরেই সক্রিয় হয়ে নড়েচড়ে বসে আসানসোলর পুরনিগম ও বিএলআরও দপ্তর। বৃহস্পতিবার তারা আসানসোলের ধাতকা অঞ্চলের আরএসএস এর ভবনে অভিযান চালায়। সকল কাগজ পত্র খতিয়ে দেখেন। স্বাভাবিক ভাবেই গোটা এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে সেখানে চলে আসেন আরএসএস সহ একাধিক হিন্দু সংগঠনের উপদেষ্টা এবং বিজেপির লিগাল সেলের অন্যতম প্রবীণ আইনজীবী পীযূষকান্তি গোস্বামী। আসানসোল পুরনিগমের প্রাক্তন বিজেপি কাউন্সিলর ভৃগু ঠাকুর সহ অন্যান্যরাও সেখানে পৌঁছান।
পরে পীযূষবাবু বলেন, ‘পুর ইঞ্জিনিয়ার সহ যে আধিকারিকরা এসেছিলেন, তাঁরা আমাদের কাছে বাড়ির দলিল, ট্যাক্স ও অন্যান্য কাগজ দেখতে চান। যদিও কোনও নোটিশ আধিকারিকদের পক্ষ থেকে আমাদের দেওয়া হয়নি।’ তিনি আরও বলেন, ‘অফিস সংক্রান্ত কোনও কিছুই এখানে থাকে না। সব আরএসএসের সদর দপ্তর কেশব ভবনে থাকে। আমি তাঁদেরকে বলেছি, আপনারা আমাদের চিঠি দিয়ে যা যা চাইবেন আমরা সেগুলো অবশ্যই আপনাদের হাতে তুলে দেব।’ পীযূষবাবু জানান, তিন-চার কাঠা জমিতে পুকুর হয় না। তাহলে এখানে কি পাশাপাশি সব বাড়ি সহ গোটা এলাকাটাই পুকুর ছিল? গোটা বিষয়টি রাজনৈতিক যড়যন্ত্র বলে দাবি করেন প্রবীণ এই আইনজীবী। এদিকে, আসানসোলের প্রাক্তন বিজেপি সভাপতি তথা আরএসএসের প্রচারক দিলীপ দে বলেন, ‘এই ভবন দেড় দশকের বেশি সময় আগে তৈরি হয়েছে।’
এদিকে আসানসোল দূর্গাপুর পুলিশের এক আধিকারিক সুব্রত দেবনাথ বলেন, ‘বিষয়টা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এদিন বলেছেন বলে আমরা এসেছি, এমনটা নয়। অভিযোগ আগেই আমরা পেয়েছিলাম। তাই তা দেখতে এসেছি। সবকিছু দেখে গেলাম।’ আসানসোল পুরনিগমের ইঞ্জিনিয়ার নয়ন নস্কর বলেন, ‘আমি পুরনিগমের পক্ষ থেকে সরকারি টিমের সঙ্গে গিয়ে দেখেছি। আমরা লিখিতভাবে তাদের কাছ থেকে পুরনিগমের পাশ করা নকশা বা প্ল্যান থেকে শুরু করে জমির যাবতীয় কাগজ, আসানসোল দূর্গাপুর উন্নয়ন পর্ষদ বা আড্ডার নো অবজেকশন সার্টিফিকেট সহ সমস্ত কাগজপত্র চেয়ে পাঠিয়েছি।’ এই বিষয়ে আর এস এস সংগঠনের পক্ষ থেকে ১০ দিনের সময় চাওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।
Discussion about this post