দুর্গাপুর মেডিকেল কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ডাক্তারি পড়ুয়া ছাত্রী রাতে সহপাঠীর সাথে খাওয়ার খেতে ক্যাম্পাস থেকে বেরিয়েছিলেন। এরপরই ভয়ঙ্কর অভিযোগ ওঠে মোহনবাগান এভিনিউয়ের পাশে গণধর্ষণের স্বীকার ওই তরুণী। CCTV ফুটেজে পাওয়া তথ্য অনুসারে ঘটনাটি এমন জায়গায় ঘটেছে যা আশেপাশে রয়েছে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ কার্যালয় বা ভবন। ঘটনাস্থল থেকে মোহনবাগান এভিনিউ ধরে প্রায় দেড় কিলোমিটার গেলেই রয়েছে CRPF ক্যাম্প। তিন কিলোমিটার দূরে দুর্গাপুর গভর্মেন্ট কলেজ এবং পাঁচ কিলোমিটার দূরত্বে দুর্গাপুর নিউ টাউনশিপ থানা। এছাড়াও সাড়ে চার কিলোমিটার দূরে দুর্গাপুর থানার B জোন আউটপোস্ট ও সাড়ে সাত কিলোমিটার দূরে দুর্গাপুর থানা এবং দুর্গাপুর কমিশনারেটের ডিসি ইস্টের অফিস। এছাড়াও সাড়ে আট কিলোমিটার দূরে দুর্গাপুরের অন্যতম জমজমাট এলাকা সিটি সেন্টার। ঘটনাস্থল মোহনবাগান এভিনিউ ও জওহরলাল নেহেরু রোডের সংযোগস্থল থেকে আই কিউ সিটি হাসপাতালের দূরত্ব তিন দশমিক নয় কিলোমিটার।
রবিবার উত্তরবঙ্গ সফরে যাওয়ার আগে দুর্গাপুর কাণ্ডে মন্তব্য করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, মেয়েদের রাতে বাইরে বেড়ানো ঠিক নয়। রাত সাড়ে বারোটায় ওই তরুণী কিভাবে বাইরে বেরলো ? আর এই মন্তব্যের পরই শুরু হয়েছে জোড় বিতর্ক।
নির্যাতিতা তরুণীর বাবা জানান, মেয়ের ওপর হওয়া অত্যাচারের ঘটনার খবর তিনি শুক্রবার রাত সাড়ে ৯ টায় পান। তিনি বলেন, মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন রাত ১২ টার সময় বেরিয়ে ঘটনাটি ঘটেছে। অথচ আমার কাছে রাত সাড়ে ৯ টার সময় খবর এসেছে আপনার মেয়ে ধর্ষণ হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন সন্ধ্যে ৭ টার সময় বাড়ি থেকে বেরোবেনা। তাহলে কোথায় যাবে ? তাহলে ওরা চাকরি করবে না ? আমরা তাহলে কি আশা করবো ? মেয়েরা পুরো অসুরক্ষিত।
মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্যের প্রেক্ষিতে প্রাক্তন পুলিশ কর্তারা প্রশ্ন তুলেছেন, মুখ্যমন্ত্রী রাত সাড়ে ১২ টার তথ্য পেলেন কোথা থেকে ?
ইতিমধ্যে ঘটনায় জড়িত পাঁচজন অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। অভিযুক্তদের মধ্যে অন্যতম হল, শেখ রিয়াজউদ্দিন, শেখ নাসির উদ্দিন, অপু বাউরি ও ফিরদৌস শেখ। মঙ্গলবার সকালে তদন্তের স্বার্থে ধৃত শেখ রিয়াজউদ্দিন ও নাসির উদ্দিনকে দুর্গাপুরের বিজরা গ্রামে নিয়ে যাওয়া হয়। পুলিশের ধারণা ওই এলাকা থেকে মিলতে পারে গুরুত্বপূর্ণ প্রমান। পুলিশ সূত্রের খবর, এখনও অজানা রয়েছে ঘটনাস্থলের আশপাশের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য। তাই মঙ্গলবার সকাল থেকে নিউ টাউনশিপ থানা ও দূর্গাপুর থানার যৌথ টিম ওই এলাকায় অভিযান চালায়। সন্দেহভাজনদের চিহ্নিত করতে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে স্থানীয়দের।












Discussion about this post