বাংলাদেশের সঙ্গে সম্প্রতি কূটনৈতিক সম্পর্কের টানাপোড়েন চলছে ভারতের। বিভিন্ন কারণে দুই দেশের মধ্যে তৈরি হয়েছে দূরত্ব। তবে ভারতের সঙ্গে ভাল সম্পর্ক চাইছেন বাংলাদেশের সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান। ছাত্র জনতার আন্দোলন, শেখ হাসিনার পতন, সরকার বদল। গত কয়েকমাসে অনেক জল বয়ে গিয়েছে পদ্মা দিয়ে। সম্প্রতি বাংলাদেশে লাগামছাড়া হারে বেড়েছে হিন্দু নির্যাতন। যা নিয়ে ভারতের সঙ্গে সংঘাতের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে ঢাকার। হাসিনাকে নিয়েও চাপানউতোর বাড়ছে দুদেশের মধ্যে। এই পরিস্থিতিতে আগামী দিনে ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক কেমন হবে ঢাকার? এনিয়েই মুখ খুললেন বাংলাদেশের সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান। বুধবার সাক্ষাৎকার দেওয়ার জন্য বাংলাদেশের এক সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হন। ভারতের কৌশলগত দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলোর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে দিল্লির সঙ্গে সহযোগিতা করবে ঢাকা? উত্তরে সেনাপ্রধান বলেন, “ভারত আমাদের গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেশি। বাংলাদেশ অনেক ক্ষেত্রে ভারতের উপর নির্ভরশীল। আবার ভারতও কিছু ক্ষেত্রে বাংলাদেশের থেকে সুবিধা পায়। বহু ভারতীয় এখানে কাজ করেন। আমাদেরও অনেক মানুষ সেখানে চিকিৎসার জন্য যান। আমরা ভারতের সঙ্গে অনেক পণ্য আমদানি করি। এটা একটা দেওয়া-নেওয়ার সম্পর্ক। এদেশের স্থিতিশীলতা দিল্লির কাছেও সমান গুরুত্বপূর্ণ। ঢাকার এমন কিছু করা উচিত নয় যা ভারতের ভুকৌশলগত স্বার্থকে বিঘ্নিত করে।” এরই পাশাপাশি জামান বলেন, ‘একইসঙ্গে, আমরাও এটা আশা করি যে আমাদের প্রতিবেশী এমন কোনও পদক্ষেপ করবে না, যা আমাদের স্বার্থের পরিপন্থী। আমরা যদি তাদের স্বার্থ রক্ষা করে চলি, তাহলে তাদেরও সমান গুরুত্ব সহকারে আমাদের স্বার্থরক্ষা করতে হবে।’ ঘটনা হল, শেখ হাসিনার আমলে সেই সমস্ত ভারত-বিরোধী শক্তি, যারা উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলিতে অশান্তি ছড়ানোর জন্য বাংলাদেশে ঘাঁটি গেড়েছিল, তাদের বিরুদ্ধে প্রবল দমননীতি গ্রহণ করেছিল তৎকালীন সরকার। কিন্তু, পূর্বের ইতিহাস বলছে, আগের সরকারগুলির আমলে ঢাকার গুপ্তচর বিভাগ এই সন্ত্রবাদীদেরই মদত দিয়েছে। উল্লেখ্য, শেখ হাসিনাহীন বাংলাদেশে ক্রমেই সক্রিয় হচ্ছে জেহাদি শক্তি। যাদের সঙ্গে পাকিস্তানের জঙ্গিরা হাত মেলাচ্ছে বলে খবর। ওপার বাংলায় বসেই ভারতে সন্ত্রাসী কার্যকলাপ চালানোর ছক কষা হচ্ছে। ভারতকে রক্তাক্ত করতে উঠে পড়ে লেগেছে বাংলাদেশের জঙ্গি সংগঠন আনসারুল্লা বাংলা টিম। যারা আল কায়দার ছায়া সংগঠন হিসাবেই পরিচিত। পাশাপাশি এদের যোগ রয়েছে বাংলাদেশের জামাত-উল-মুজাহিদিন, হিজবুত তাহারির মতো জেহাদি গোষ্ঠীর সঙ্গে। গত কয়েকদিনে এবিটির অন্তত ১১ জন জঙ্গি ধরা পড়েছে অসম, কেরল, পশ্চিমবঙ্গের মতো একাধিক রাজ্য থেকে। ধৃতদের কাছ থেকে বিভিন্ন বই, উস্কানিমূলক নথিপত্র-সহ একাধিক মোবাইল ফোন, প্রচুর অস্ত্রসস্ত্র, বারুদ উদ্ধার হয়েছে। পুলিশের তদন্তে জানা গিয়েছে, ভারতের বিভিন্ন প্রান্তে জেহাদের বিষ ছড়ানোই জেহাদি সংগঠনটির উদ্দেশ্য। লক্ষ্য ভারতের বিভিন্ন কোণায় পৃথক স্লিপার সেল তৈরি করা। এছাড়া অনুপ্রবেশ ঘটাচ্ছে বহু বাংলাদেশি। এতে স্বাভাবিকভাবেই উদ্বিগ্ন দিল্লি। যা নিয়ে ফাটল চওড়া হতে পারে ঢাকার সঙ্গে। বিশ্লেষকদের মতে, বাংলাদেশে এখন নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম আকাশছোঁয়া। টান পড়েছে বিদেশি মুদ্রার ভাঁড়ারে। কিন্তু মতবিরোধ সত্ত্বেও চাল, ডিম, আলু, লঙ্কা রপ্তানি জারি রেখেছে ভারত। তাই এদিন ওয়াকার-উজ-জামান স্পষ্ট করে দিলেন নিজেদের স্বার্থেই দিল্লির সঙ্গে সম্পর্ক ঠিক রাখতে হবে ঢাকাকে।
বাংলাদেশে গণঅভ্যুত্থান এবং শেখ হাসিনার পতন যে বাংলাদেশের আভ্যন্তরীণ কোনও বিষয় না, এটা এখন দিনের আলোর মতোই পরিস্কার। এই পুরো...
Read more
Discussion about this post