মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়ী হওয়ার পর ডোনাল্ড ট্রাম্প আগামী বছরের ২০ জানুয়ারি দেশের ৪৭ তম প্রেসিডেন্ট হিসাবে শপথ নিতে চলেছেন। ট্রাম্পের জয়ে বিশ্বজুড়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। তবে কিছু দেশ এবং তাদের রাষ্ট্রপ্রধানরা ট্রাম্পের বিজয়ে অস্বস্তিকর অবস্থায় পড়েছেন বলেই মনে হচ্ছে। এর মধ্যে রয়েছে কানাডা, ইউক্রেন ও বাংলাদেশের মতো দেশ। হাসিনা সরকারের পতনের পর অন্তর্বর্তীকালীন ইউনুস সরকারের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছিলেন জো বাইডেন। তবে সময় বদলেছে। পালাবদল হয়েছে আমেরিকায়। নয়া ট্রাম্প সরকারের বিদেশনীতি বাংলাদেশের পক্ষে যাবে কিনা তা নিয়ে যথেষ্ট উদ্বিগ্ন মহম্মদ ইউনুস। এই অবস্থায় নয়া মার্কিন রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে সম্পর্কের উন্নতিতে আগ্রহী বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন প্রধানমন্ত্রী। সম্প্রতি আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ইউনুস জানিয়েছেন, ট্রাম্পের সঙ্গে তাঁর এখনও কথা হয়নি, তবে রিপাবলিকান পার্টিতে বন্ধু রয়েছে তাঁর। কার্যত বুঝিয়ে দিলেন, সেই সূত্রেই ট্রাম্পের সম্পর্কের মালা গাঁথতে আগ্রহী ইউনুস। ইউনূসের মতে, ”ট্রাম্পের সঙ্গে অতীতে কোনও আলাপ আলোচনা হয়নি আমার। তাঁর সঙ্গে ব্যক্তিগতভাবে তাঁর সঙ্গে আমার কোনো সমস্যাও নেই। আর আপনি যদি রিপাবলিকান পার্টির কথা বলেন, তাহলে বলব, আমার ডেমোক্রেটিক পার্টির মতো রিপাবলিকান পার্টিতেও বন্ধু রয়েছে।” যদিও ট্রাম্প আমেরিকার প্রেসিডেন্ট হওয়ায় দুই দেশের সম্পর্কে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে না বলে আশা করছেন ইউনুস। এই প্রসঙ্গেই জানিয়ে রাখি, তিনি ঘোষিত ‘ট্রাম্প বিরোধী’। অন্তত ২০১৬ সালে তাই ছিলেন। তবে এখন তিনি বাংলাদেশের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান। মার্কিন নির্বাচনে ট্রাম্পের জয়ে তিনি অস্বস্তিতে আছেন বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশ। ইউনুসের সঙ্গে মার্কিন ডেমোক্র্যাটদের সুসম্পর্কের কথা অনেকেই জানেন। এর আগে ২০১৬ সালে ট্রাম্প জেতার পরে প্যারিসে এক অনুষ্ঠানে ইউনুস বলেছিলেন, ‘ট্রাম্পের এই জয় সূর্য গ্রহণের মতো। কালো দিন আসছে। তা যেন আমাদের গ্রাস না করে, আত্মশক্তিকে দুর্বল না করে দেয়।’ আর পরে যখন বাংলাদেশের প্রতিনিধিদল ট্রাম্পকে শুভেচ্ছা জানাতে গিয়েছিল, তখন নাকি ইউনুসের নাম না নিয়েই ট্রাম্প বলেছিলেন, ‘ঢাকার মাইক্রোফাইন্যান্সের সেই ব্যক্তি কোথায়? শুনেছি, তিনি আমাকে হারাতে চাঁদা দিয়েছিলেন।’ সেবার ট্রাম্প হারিয়েছিলেন হিলারি ক্লিনটনকে। আর ক্লিনটন পরিবারের সঙ্গে ইউনুসের ঘনিষ্ঠতা সবাই জানে। বাংলাদেশের তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রধান মোহাম্মদ ইউনূস ট্রাম্পের জয়ে অস্বস্তিতে রয়েছেন। এর কারণ হলো, বাংলাদেশে অভ্যুত্থানের পর অগাস্ট মাসে ইউনূসের হাতে ক্ষমতার লাগাম তুলে দেওয়া হয়। তাকে সাধারণত আমেরিকার মানুষ বলে মনে করা হয়।এদিকে কয়েকদিন আগে দিওয়ালি উপলক্ষে নিজের সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে আবার ডোনাল্ড ট্রাম্প বাংলাদেশ নিয়ে সরব হয়েছিলেন। ট্রাম্প নিজের এক্স হ্যান্ডেলে লিখেছিলেন, ‘অশান্ত বাংলাদেশে হিন্দু, খ্রিস্টান ও অন্যান্য সংখ্যালঘুরা প্রতিনিয়ত দুষ্কৃতীদের হাতে আক্রান্ত হচ্ছেন। সেখানে লুঠপাট চলছে। আমি এর তীব্র ভাষায় নিন্দা জানাচ্ছি। আমি ক্ষমতায় থাকলে, এমন কখনও হত না। কমলা হ্যারিস ও জো বাইডেন আমেরিকায় এবং বিশ্বজুড়ে হিন্দুদের গুরুত্ব দেননি। ইজরায়েল থেকে ইউক্রেন, এমনকী আমাদের নিজেদের দক্ষিণ সীমান্তেও বিপর্যয় ঘটিয়েছে। তবে আমরা ফের আমেরিকাকে শক্তিশালী করব এবং শক্তির মাধ্যমেই শান্তি ফিরিয়ে আনব। আমরা হিন্দু মার্কিন নাগরিকদেরও কট্টর বামপন্থীদের ধর্ম-বিরোধী অ্যাজেন্ডা থেকে রক্ষা করব। আমরা আপনাদের স্বাধীনতার জন্য লড়ব। আমার প্রশাসনের অধীনে ভারত ও আমার ভাল বন্ধু নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গেও সুসম্পর্ক আরও মজবুত করব।’ অর্থাৎ একটি পোষ্টের মাধ্যমেই বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার, জো বাইডেন এবং কমলা কে নিশানা করেছিলেন ট্রাম্প। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ট্রাম্পের সঙ্গে ইউনূসের টানপোড়নের সম্পর্কের বিষয়টি ‘ওপেন সিক্রেট’। কিন্তু বাংলাদেশের সঙ্গে যেহেতু ভারত ও চীনের ‘কৌশলগত ভালো সম্পর্ক’ রয়েছে। তাই বাংলাদেশকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রয়োজন রয়েছে।
ওয়াকফ আইন নিয়ে পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদে অশান্তির ঘটনায় বাংলাদেশকে জড়ানো হচ্ছে বলে অভিযোগ তুলল সে দেশের অন্তবর্তী সরকার। যদিও ভারতের তরফে...
Read more
Discussion about this post