চট্টগ্রাম সীমান্তে সঙ্কটে পড়তে চলছে বাংলাদেশ ? মায়ানমার -বাংলাদেশ সীমান্তের ২৭১ কিলোমিটার এখন আরাকান আর্মির দখলে। রোহিঙ্গা উৎখাতে বড় ভূমিকা নিয়েছিল এই আরাকান আর্মি। নাফ নদীর ওপারে মায়ানমার। এপারে বাংলাদেশের চট্টগ্রাম। পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর মংডো দখল করে এই নাফ নদী বরাবর ২৭১ কিলোমিটার দীর্ঘ সীমান্ত-এর দখল নিয়ে নিয়েছে আরাকান আর্মি। মংডো শহরের শেষ সেনাঘাঁটি দখলের মাধ্যমে বাংলাদেশের কক্সবাজার লাগোয়া মায়ানমারের রাখাইন প্রদেশের সম্পূর্ণ এলাকা নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে এই আরাকান আর্মি । মংডো দখলের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আরাকান আর্মির মুখপাত্র খাইং থুখা। আরাকান আর্মি রবিবার জানিয়েছে, তারা নাফ নদীর উপরে যে কোনও ধরনের পরিবহণ বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে। মায়ানমারের জুন্টা সরকারের সেনাবাহিনীর সঙ্গে যুক্ত পুলিশ এবং স্থানীয়রা নৌকা করে বাংলাদেশে পালানোর চেষ্টা করছিল বলে এই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলেও তারা জানিয়েছে। অন্যদিকে নাফ নদীর দখল নিজেদের হাতে রেখে বাংলাদেশকেও চাপে ফেলে দিয়েছে আরাকান আর্মি। ইতিমধ্যেই চট্টগ্রাম থেকে কয়েকজন বাংলাদেশিকে তুলে নিয়ে গেছেন আরাকানরা। ফলে হাসিনার সরকারের পতনের পর চট্টগ্রামে আক্রান্ত সংখ্যালঘুরা খানিক বল পেয়েছে মনে। রোগিঙ্গাদের তাড়ানোর পাশাপাশি চট্টগ্রামে সংখ্যালঘু নির্যাতনের বিরুদ্ধে লড়াই দিয়ে যাচ্ছে মায়ানমারের এই বিদ্রোহী গোষ্ঠী। এরা স্বাধীন চট্টগ্রাম পক্ষে বলে খবর। ফলে এখন বেশ চাপে ভারতকে লাগাতার হুমকি দেওয়া বাংলাদেশের মৌলবাদীর। গত ১০ ডিসেম্বর চট্টোগ্রাম সীমান্ত সংলগ্ন মংডু শহর দখল নিয়েছে মায়ানমারের বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মি। চট্টগ্রাম সীমান্তে বয়ে চলা নাফ নদীর পুরো নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে এই গোষ্ঠীটি। রোহিঙ্গা অধুষ্যিত রাখাইন প্রদেশ থেকে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ এই মুহূর্তে সবথেকে বড় মাথাব্যাথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। আর এখন বাংলাদেশিদের কাছে আতঙ্কের অপর নাম আর নাফ নদী । কারণ কোনও বাংলাদেশি দেখলেই গুলি চালাতে এক সেকেন্ডও ভাবছে না আরাকাররা। কূটনৈতিকমহলের মতে এমন ভাবে চললে অদূর ভবিষ্যতে হয়তো চট্টগ্রাম হারাতে হতে পারে বাংলাদেশকে। অন্যদিকে, উত্তর-পূর্ব ভারতের সঙ্গে দ্রুত যোগাযোগ গড়ে তুলতে মায়ানমারের সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়তে চাইছে ভারত। সেই কারণেই মায়ানমারের সিতওয়েতে ভারতের কালাদান বন্দর, সড়ক যোগাযোগ ও গ্যাস পাইপলাইন সহ একাধিক ক্ষেত্রে বিনিয়োগ করেছে নয়াদিল্লি। সেই আর্থিক স্বার্থেই বিদ্রোহীদের সঙ্গে সম্পর্কস্থাপন করেছে সাউথব্লক। কারণ ওই বিনিয়োগগুলির স্বার্থ সুরক্ষিত থাকলে আগামীতে দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ায় ভারতের প্রভাব অক্ষুন্ন থাকবে বলেই মনে করে কূটনৈতিক মহল। চিনকে রুখতে এবার মায়ানমারের বিদ্রোহীদের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদার করেছে ভারত। একদিকে চিন মদতপুষ্ঠ মায়ানমারের সামরিক জুন্টা সরকারের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক খুব একটা সুমধুর নয় নয়াদিল্লির। তারমধ্যে বাংলাদেশে মৌলবাদের উত্থাণ চিন্তার ভাঁজ ফেলেছে নয়াদিল্লির কপালে। এমন অবস্থায় উত্তর-পূর্ব ভারতের নিরাপত্তা ও চিনের প্রভাব প্রতিহত করার স্বার্থে মায়ানমারের বিদ্রোহীদের সঙ্গে সম্পর্ক গড়তে চাইছে সাউথব্লক। নাফ নদীর ঝুঁকিপূর্ণ স্থান এবং বাংলাদেশের জলসীমায় বিদ্যমান দ্বীপের আধিপত্য বিস্তারের জন্য নৌ টহলও জোরদার করা হয়েছে বলে স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। গত ফেব্রুয়ারিতে আরাকান আর্মির হামলার মুখে কয়েকটি রোহিঙ্গা সংগঠনের নেতারা অস্ত্রসহ বাংলাদেশে আশ্রয়ের পর তাদের আটক করে বাংলাদেশের পুলিশ। বাংলাদেশের কক্সবাজার জেলার স্থানীয় প্রশাসন বলছে, এমন অবস্থায় নতুন করে বাংলাদেশে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের এক ধরনের শঙ্কা রয়েছে। ২০১৭ সাল থেকে মায়ানমারের রাখাইন প্রদেশ থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছেন প্রায় ৮ লক্ষ রোহিঙ্গা। বর্তমানে এই সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১২ লক্ষ। তাঁরা বাংলাদেশের কক্সবাজার ও বান্দরবানের ৩৩টি শিবিরে বসবাস করছেন। তবে রাখাইনে এখনও প্রায় ৫ লক্ষ রোহিঙ্গা রয়ে গেছেন। বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী, কোস্টগার্ড ও বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ ইতিমধ্যে সীমান্তে নিরাপত্তা বৃদ্ধি করেছে। কিন্তু তাতেও রোহিঙ্গাদের অনুপ্রবেশ আটকানো সহজ হবে না।
গত বছর শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর বাংলাদেশের সঙ্গে পাকিস্তানের সম্পর্কের নতুন রসায়ন খুবই মধুর হতে শুরু করেছে। প্রায় ৫০...
Read more
Discussion about this post