বাংলাদেশে ইতিমধ্যেই ইসকনকে নিষিদ্ধ করার দাবি তুলেছে একাধিক ইসলামপন্থী সংগঠন। এমনকি ইসকনকে নিষিদ্ধ করার ব্যাপারে বাংলাদেশের হাইকোর্টেও আবেদন জানানো হয়েছে। বাংলাদেশ সরকারের অ্যাটর্নি জেনারেল মহম্মদ আসাদুজ্জামানও ইসকনকে ধর্মীয় মৌলবাদী সংগঠন’ বলে উল্লেখ করেছেন। এই পরিস্থিতিতেই এবার বাংলাদেশে ইসকনের একটি সেন্টার জোর করে বন্ধ করে দেওয়ার অভিযোগ উঠল। অফিসের সামনে থেকে ইসকন প্রতিষ্ঠাতা স্বামী প্রভুপাদের ছবি সহ বোর্ডটি নামিয়ে দেওয়া হয়। সেখানে থাকা ভক্তদের নাকি সেনার গাড়িতে করে সেখান থেকে অন্যত্র নিয়ে যাওয়া হয়। ইসকন সূত্রের খবর, ঢাকার মাদারিহাট জেলার শিবচর উপজেলায় ইসকনের একটি অফিস বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ওই অফিস শিবচরের টিএনটি মোড় এলাকায় অবস্থিত। অভিযোগ, সেখান থেকে ইসকনের প্রতিষ্ঠাতা স্বামী প্রভুপাদের ছবি সহ বোর্ডটি নামিয়ে দেওয়া হয়। সোশ্যাল মিডিয়াতে একটি ভিডিয়ো পোস্ট করে রাধারমণ দাস লিখেছেন, ‘বাংলাদেশের শিবচরের ইসকন নামহাট্টা সেন্টারটি মুসলিমরা এসে জোর করে বন্ধ করে দিয়ে যায়।’ বাংলাদেশে ইসকনকে নিষিদ্ধ করার দাবি উঠেছে। এই দাবি নিয়ে মামলা করা হয়েছে বাংলাদেশের হাইকোর্টে। মনিরুজ্জামান নামের এক আইনজীবীর দায়ের করা মামলা প্রেক্ষিতে বাংলাদেশের সরকার কী পদক্ষেপ গ্রহণ করছে তা আজ, বৃহস্পতিবার জানাতে হবে বলে নির্দেশ দিয়েছে আদালত। ঠিক তার আগেই বাংলাদেশে ইসকনের অফিস বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ উঠল। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে অফিস গুটিয়ে না নিলে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে হুঁশিয়ারি দেন আলেম সমাজের লোকজন। একপর্যায়ে ইসকনের সাধু কানাই প্রভু, নন্দ প্রভু, ননী গোপাল প্রভু একটি প্রাইভেটকারে চড়ে নিরাপদ স্থানে পুলিশি গাড়ি প্রহরায় চলে যান। ভবনটিতে সাটানো ইসকনের একটি সাইনবোর্ড খুলে ফেলা হয়। ইসকনের অফিস ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গুটিয়ে নিতে আল্টিমেটাম দেন বিক্ষুদ্ধরা।এদিকে উত্তপ্ত পরিস্থিতিতে পরিকল্পিত হিন্দু নির্যাতনের অভিযোগের মধ্যেই বাংলাদেশের কিশোরগঞ্জে উদ্ধার হিন্দু পরিবারের ৪ সদস্যের দেহ। মৃত্যুর কারণ ঘিরে ধোঁয়াশা। পুলিশের দাবি, পরিবারের ৩ সদস্যকে খুন করে আত্মঘাতী হয়েছেন পরিবারের প্রধান জনি মণ্ডল। তবে মৃত্যুর কারণ নিশ্চিতভাবে জানাতে পারেনি স্থানীয় প্রশাসন। স্থানীয় সূত্রের খবর, কিশোরগঞ্জের ভৈরব টাউনের একটি পরিবারের চার সদস্যের দেহ উদ্ধার হয়েছে। পরিবারের প্রধান জনি মণ্ডল, তাঁর সন্তানসম্ভবা স্ত্রী, এবং তাঁদের দুই সন্তান, চারজনেরই মৃত্যু হয়েছে। মৃত্যুর কারণ স্পষ্ট নয়। তাঁদের উপর কোনওরকম হামলা হয়েছে কিনা স্পষ্ট নয়। যদিও পুলিশ পুরো ঘটনাকে আত্মহত্যা হিসাবে দেখানোর চেষ্টা করছে। পুরো ঘটনার তদন্ত করা হচ্ছে বলে দাবি পুলিশের। যদিও এই আত্মহত্যার তত্ত্ব কতটা বিশ্বাসযোগ্য, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। প্রসঙ্গত, বাংলাদেশে সম্প্রতি গ্রেফতার করা হয়েছে হিন্দু সন্ন্যাসী চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে। এরপর থেকেই সেখানে দফায় দফায় সংখ্যালঘু হিন্দুদের ওপর হমলার অভিযোগ উঠেছে। এরই মাঝে ইসকনকে নিষিদ্ধ করার দাবিতে মামলার আবেদন দায়ের হয় ঢাকা হাই কোর্টে। সেই আবেদন গ্রহণ করা হয়েছে। এদিকে চট্টগ্রামে আইনশৃঙ্খলারক্ষাকারী বাহিনী ও আইনজীবীদের সঙ্গে চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের অনুগামীদের সংঘর্ষের সময় আইনজীবী হত্যার পরিপ্রেক্ষিতে যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, তা নিয়ে কী পদক্ষেপ করা যেতে পারে, তা জানতে চেয়েছে হাই কোর্ট। বিচারপতি ফারহ মাহবুব ও বিচারপতি দেবাশিস রায় চৌধুরীর এজসালে মামলাটি শোনা হচ্ছে। এসবের মাঝেই মঙ্গলবার চট্টগ্রামে হিন্দু সংখ্যালঘুদের প্রতিবাদ মিছিলে সংঘর্ষে মৃত্যু হয় আইনজীবী সাইফুল ইসলামের। বাংলাদেশে এই নিয়ে যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, তা নিয়ে কী পদক্ষেপ করা যেতে পারে, তা সরকারের কাছে জানতে চেয়েছে হাইকোর্ট। বিচারপতি ফারহ মাহবুব ও বিচারপতি দেবাশিস রায় চৌধুরীর এজসালে মামলাটি শোনা হচ্ছে। এদিকে চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের গ্রেফতারি নিয়ে ইতিমধ্যেই ড. ইউনুসের সরকারকে বার্তা দিয়েছে ইসকন বাংলাদেশ। এই নিয়ে দু’টি পৃথক বিবৃতি জারি করে বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে এবং সরকারের প্রতি নিজেদের দাবি তুলে ধরেছে ইসকন।
গত বছর শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর বাংলাদেশের সঙ্গে পাকিস্তানের সম্পর্কের নতুন রসায়ন খুবই মধুর হতে শুরু করেছে। প্রায় ৫০...
Read more
Discussion about this post