বুধবার যাদবপুরে তৃণমূল প্রার্থী সায়নী ঘোষের সমর্থনে সভা করলেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। জনসভা করলেন দক্ষিণ শহরতলীর একটি আসনে, কিন্তু তাঁর কথায় উঠে এল উত্তর শহরতলির একটি লোকসভা আসনের প্রসঙ্গ। আর তাতেই বিস্ফোরক দাবি করলেন, তৃণমূল নেত্রী। বললেন, দমদমে সিপিএম বিজেপির সেটিং হয়ে গিয়েছে। যা নিয়ে এখন বঙ্গ রাজনীতিতে জোর চর্চা চলছে। উল্লেখ্য, এবার দমদমে বাম কংগ্রেস জোটের প্রার্থী ডঃ সুজন চক্রবর্তী। যিনি বাম রাজনীতিতে যথেষ্ট হেভিওয়েট নাম, যাদবপুরের প্রাক্তন সাংসদ।
ঠিক কি অভিযোগ করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়? বুধবার মুখ্যমন্ত্রী বলেন, কিছু কিছু জায়গায় বিজেপির সঙ্গে সিপিএমের আন্ডারস্ট্যান্ডিং হয়েছে। একটি নাম আমি বলতে পারি, দমদম। কি সেটিং হয়েছে, সেটাও খোলসা করে দেন তৃণমূল নেত্রী। তাঁর দাবি, ওখানে (দমদম লোকসভা কেন্দ্র) সিপিএমের যিনি প্রার্থী হয়েছেন, তাঁর সঙ্গে সেটিং হয়েছে বিজেপির। লোকসভায় ভোটটা সিপিএমকে দেবে বিজেপি। আর ওখানে বিধানসভার উপনির্বাচন আছে, সেখানে সিপিএম ভোটটা দেবে বিজেপিকে। উল্লেখ্য, লোকসভা ভোটের সঙ্গে এবার বরাহনগরে বিধানসভা উপনির্বাচন হবে। যেখানে বিজেপি প্রার্থী সজল ঘোষ।
রাজনৈতিক ওয়াকিবহাল মহলের প্রশ্ন, ভোটগ্রহনের মাত্র তিনদিন আগেই কেন এরকম বিস্ফোরক দাবি করলেন তৃণমূল সুপ্রিমো। ২০০৯ সাল থেকে দমদমে জয়ের হ্যাটট্রিক করা সৌগত রায়ের জেতা নিয়ে কী এবার কোনও রকম আশঙ্কা রয়েছে? আগামী ১ জুন শেষ দফার ভোটে দমদমে ভোটগ্রহন হবে। বিজেপি দক্ষিণবঙ্গের যে আসনগুলি নিয়ে আশাবাদী সেই তালিকায় রয়েছে দমদম। এবার তাঁরা দমদমে প্রার্থী করেছে ব্যারাকপুরের প্রাক্তন তৃণমূল বিধায়ক শীলভদ্র দত্তকে। অপরদিকে, বঙ্গে কার্যত শূন্য বামফ্রণ্ট যে কয়েকটি আসনে এবার জয়ের স্বপ্ন দেখছে, তার মধ্যে দমদম রয়েছে। ফলে তৃণমূল নেত্রী সেটিং তত্ত্ব নিয়ে যাই বলুক না কেন দমদমে বাম কর্মী-সমর্থকরা তেতে গিয়েছেন।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সেটিং তত্ত্ব নিয়ে দমদমের সিপিএম প্রার্থী সুজন চক্রবর্তী প্রশ্ন তুলেছেন, “দমদমে এতগুলো সভা করলেন সেখানে তো বলেননি। হঠাৎ যাদবপুরে গিয়ে বলতে হচ্ছে কেন। এর পিছনে কোনও গভীর অঙ্ক আছে নাকি?” অপরদিকে বিজেপির মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য দাবি করেছেন, দমদমে যে এবার তৃণমূল হারবে সেটা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বুঝে গিয়েছেন। তাই এ সব কথা বলছেন। উল্লেখ্য, ২০১৯ লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির টিকিটে প্রার্থী হয়েছিলেন শমীক ভট্টাচার্যই। তিনি মাত্র ৫৩ হাজার ভোটে তৃণমূলের সৌগত রায়ের কাছে হেরেছিলেন।
Discussion about this post