ইডি, সিবিআই নয়। সম্প্রতি দলীয় সংগঠনের উপর জোর দেওয়ার কথা বললেন বিজেপির রাজ্যে সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। সুকান্ত র বক্তব্য ঘিরে আলোড়ন দলের অন্দরেই এজেন্সি দিয়ে ভোট করাতে চাইছে বিজেপি। ইডি, সিবিআই বিজেপিরই শাখা সংগঠন। মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি, অভিষেক ব্যানার্জি সহ তৃণমূলের প্রথম সারির নেতাদের মুখে এই কথা ছিল পাখির বুলির মতো। পাল্টা কটাক্ষ করতে ছাড়েনি বিজেপি। দুর্নীতিবাজ বলেই ইডি, সিবিআই এর নামে জুজু দেখে। দাবি তুলে ছিলেন শুভেন্দুরা। মোদী, অমিত শাহ সহ সর্ব ভারতীয় স্তরের নেতারাও রাজ্য সফরকালে ঘুরিয়ে ফিরিয়ে একই কথা বলে গিয়েছেন। দুর্নীতির অভিযোগ তুলে ভোট বৈতরণী পার করার আশা ছিল অনেক। তবে পূরণ হয়নি। বাংলার মানুষের মনে ছিল অন্য অঙ্ক। অষ্টাদশ লোকসভা নির্বাচনে বাংলায় বিজেপির ভোট বাক্স ভরেনি। পাঁচ বছর আগের তুলনায় ছয় টা আসন খুঁইয়ে দাঁড়িয়েছে মাত্র 12 টি আসনে। বাংলার বিধানসভা উপ নির্বাচনেও হারিয়েছে 3 টি আসন। ওদিকে চার এ চার পেয়ে বিজেপিকে আরও জোরালো ভাবে বিঁধতে শুরু করেছে তৃণমূল। হার জিতের বিচার শুরু হয়েছে গেরুয়া শিবিরে। কেন ভরাডুবি? চলছে পর্যবেক্ষণ।
সম্প্রতি হুগলিতে যান সুকান্ত মজুমদার। সেখানে গিয়ে রাজ্য বিজেপির প্রথম সারির নেতাকে স্পষ্ট বলতে শোনা যায় শুধু ইডি, সিবিআই আওয়াজ তুললেই হবে না। সংগঠন কে মজবুত করতে হবে। আর তাই শুনে বিজেপির অন্দরে কানাঘুষো শুরু হয়েছে। অনেককেই বলতে শোনা যাচ্ছে ইডি, সিবিআই এর ঝড় তুলেছেন বিজেপির অন্দরে গুটি কয়েক নেতা। তাই কর্মী স্তরের নেতাদের ঘাড়ে দায় চাপিয়ে কি লাভ?
শুধু এজেন্সির হওয়া তুলে যে ভোটে জেতা যাবে না সেটা আগেই বোঝা উচিত ছিল। যে দলের সংগঠন নড়বড়ে সে দলে গোড়ায় গলদ এটা ধ্রুব সত্য।
দলের কর্মীদের একাংশ পাশাপাশি দায়ী করছে সুকান্ত মজুমদারের রাজনৈতিক অভিজ্ঞতার স্বল্পতাকে। কারণ রাজনীতিতে সে অর্থে তিনি নতুন। তুলনায় রাজনীতিতে পোড় খাওয়া লোক হলেও ভোট আর সংগঠন যে পরস্পরের পরিপূরক সেটা বুঝতে ব্যর্থ হয়েছেন শুভেন্দু। সেই সঙ্গে রাজভবনের উপর অতি নির্ভরতা কাল হয়েছে। গেরুয়া শিবিরের একের পর এক গলদ যখন বেরিয়ে আসছে এই সুযোগে সরব হয়েছে তৃণমূল। পুরনো কাসুন্দি টেনে তাঁদের দাবি ইডি, সিবিআই নিয়ে আগেই বলেছিলাম। এইসব করেই বাংলা থেকে বিজেপিকে তুলে দেওয়ার চেষ্টা করছে শুভেন্দু। তাঁকে সঙ্গ দিচ্ছেন সুকান্ত। ভোট পরবর্তীতে বাংলার বিজেপির অবস্থা ঝরঝরে। এই পরিস্থিতিতে রাজ্যে শাসকদলের সঙ্গে গলা মিলিয়ে সুকান্ত মজুমদার সেই দাবিতেই সিলমোহর দিলেন। যাতে করে রাজ্য জুড়ে বিড়ম্বনা বাড়ল গেরুয়া শিবিরের।
Discussion about this post