আমেরিকার মসনদে বসেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। ট্রাম্পের মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ফের প্রেসিডেন্ট পদে বসা কি ভাবিয়ে তুলছে বাংলাদেশকে? বাংলাদেশের কাছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এই জয়-পরাজয় গুরুত্বপূর্ণ ছিল। কারণ যুক্তরাষ্ট্রের বৈদেশিক নীতি। তেমনভাবে পরিবর্তন না হলেও সে সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক্তন রাষ্ট্রদূত এম হুমায়ূন কবিরের মতে ডোনাল্ড ট্রাম্প যেভাবে বৈদেশিক নীতির কথা বিবেচনা করেন, সেই ব্যাপারে একটি অনিশ্চয়তা থেকেই যাচ্ছে। বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম দেশ, যেখানে যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনের ফলাফলের কারণে দুই দেশের সম্পর্কের পরিবর্তন হতে পারে। কমলা হ্যারিস জয়ী হলে সামঞ্জস্য ও ধারাবাহিকতা বজায় থাকত। তবে ট্রাম্পের জয় বাংলাদেশকে ভাবিয়ে তুলছে। যেখানে বাংলাদেশের স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশকে উন্নয়ন, সংস্কার, অন্যান্য সমর্থন করে এসেছে। সেখানে ট্রাম্প ও তার প্রশাসন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশকে সহায়তা প্রদানে আগ্রহী হবে না।’ বিশেষ করে, বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশগুলোর ক্ষেত্রে ট্রাম্প প্রশাসনের নীতিগুলো গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলতে পারে। “আমেরিকা ফার্স্ট” নীতির অধীনে ট্রাম্প প্রশাসন তাঁদের নিজস্ব স্বার্থকে প্রাধান্য দিয়ে বৈশ্বিক সম্পর্ক পরিচালনা করতে পারে। যদিও আমেরিকার প্রেসিডেন্ট পরিবর্তন হলেও তাঁদের পররাষ্ট্রনীতিতে খুব বেশি পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায় না। বর্তমানে বাংলাদেশের রাজনীতি পিপাসু ব্যক্তিদের মনে একটা জিজ্ঞাসা ঘুরপাক খাচ্ছে। সেটা হলো, ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের আমলে বাংলাদেশ ভবিষ্যৎ কেমন হবে? ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের আমলে বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ কেমন হতে পারে তা নিয়ে বিস্তর আলোচনার সুযোগ রয়েছে। বাংলাদেশের অর্থনীতি ও বাণিজ্য যুক্তরাষ্ট্রের অনেকাংশে ওপর নির্ভরশীল। যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম রপ্তানি বাজার, যেখানে প্রতি বছর প্রায় ১০ বিলিয়ন ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে প্রধানত হলো তৈরি পোশাক। ট্রাম্প প্রশাসনের চীন বিরোধী বাণিজ্যনীতি যেমন, চীনা পণ্যের ওপর উচ্চ শুল্ক আরোপ বাংলাদেশের জন্য সুবিধাজনক হতে পারে। মার্কিন বাজারে চীনা পণ্যের বিকল্প হিসেবে বাংলাদেশি পণ্যের চাহিদা বাড়তে পারে। তবে ট্রাম্প প্রশাসনের নীতি সবসময় প্রতিকূল হতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, ট্রাম্পের আমলে মার্কিন বাণিজ্য চুক্তিগুলোতে কঠোর শর্ত আরোপের প্রবণতা দেখা গেছে। বাংলাদেশ যদি এই কঠোর শর্ত পূরণ করতে ব্যর্থ হয় তবে বাণিজ্য সুবিধা হ্রাস পেতে পারে। তাই বাংলাদেশকে আরও প্রতিযোগিতামূলক পণ্য সরবরাহ এবং মার্কিন বাজারের চাহিদা মেটাতে প্রস্তুত থাকতে হবে। ট্রাম্প প্রশাসনের পরিবেশ বিষয়ক নীতি বাংলাদেশের জন্য আরেকটি চ্যালেঞ্জ। প্রথম মেয়াদে ট্রাম্প প্যারিস জলবায়ু চুক্তি থেকে সরে এসেছিলেন এবং পরিবেশগত ইস্যুগুলোতে সহায়তা হ্রাস করেছিলেন। বাংলাদেশ, যেটি জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম, আন্তর্জাতিক জলবায়ু তহবিলের ওপর নির্ভরশীল। ট্রাম্প প্রশাসন যদি পুনরায় পরিবেশগত চুক্তিগুলো থেকে দূরে থাকে এবং জলবায়ু পরিবর্তনজনিত সহায়তা হ্রাস করে তবে বাংলাদেশের অভিযোজন কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত হতে পারে। বন্যা, ঘূর্ণিঝড়, এবং সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধির মতো সমস্যাগুলোর মোকাবিলা করতে বাংলাদেশকে তখন আন্তর্জাতিক সহযোগিতার বাইরে নিজের সম্পদ ব্যবহার করতে হতে পারে যেটার প্রভাব ভয়ংকর হতে পারে। এছাড়াও প্রেসিডেন্ট নির্বাচন চলাকালীনই ডোনাল্ড ট্রাম্প বাংলাদেশে হিন্দুদের উপরে হওয়া অত্যাচার নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন। এবার ক্ষমতায় বসে কি সেই বিষয়ে কোনও পদক্ষেপ করবেন? এই দিকে তাকিয়ে বাংলাদেশ তথা গোটা বিশ্ব।ভারতের সঙ্গে এমনিই সম্পর্ক ভাল আমেরিকার। বিশেষ করে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে ভারত যেভাবে বিশ্বশক্তি হয়ে উঠছে, তাতে এমন বন্ধুকে পাশে রাখতে চায় আমেরিকাও। সেখানেই টালমাটাল পরিস্থিতি বাংলাদেশে। ভারতকে পাশে পেতে এবং আন্তর্জাতিক মঞ্চে আমেরিকার ভাল ভাবমূর্তি গড়তে ট্রাম্প যে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ করবেন না, এ কথা কেউ বুক ঠুকে বলতে পারবেন না। বাংলাদেশে বর্তমান পরিস্থিতি সামলাতে চাপ রয়েছে সেনা প্রধানের ওপরেও। ভারতের সঙ্গে আমেরিকার বন্ধুত্ব, অন্যদিকে বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের উপর হওয়া অত্যাচারে ট্রাম্পের মন্তব্য ভাবাচ্ছে সেনাপ্রধান কেও।
ফের বাংলাদেশে সামরিক অভ্যুত্থান! এবারও কি বাংলাদেশের ক্ষমতা হাতে তুলে নিতে উদ্যোত সেনাবাহিনী? আর এই গুঞ্জন যেন বাংলাদেশের অন্দরে মাথা...
Read more
Discussion about this post