কলকাতা তো বটেই, এমন কি উত্তর পূর্ব ভারতের সাতটি রাজ্যও দখল করে নেওয়ার স্বপ্ন দেখছেন বাংলাদেশি জনতার একাংশ৷ প্রাক্তন সেনাকর্তা, রাজনৈতিক নেতা থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ, যে পারছে ভারতকে হুমকি দিচ্ছে৷ এই যখন পরিস্থিতি, তখন বাংলাদেশের সঙ্গে দীর্ঘ ২৭১ কিলোমিটার দীর্ঘ দখল করে নিল মায়ানমারের জুন্টা সরকারের বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মি৷ রোহিঙ্গা সমস্যা নিয়ে এমনিতেই জেরবার বাংলাদেশের চিন্তা আরও বাড়বে৷ এই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী মায়ানমারের গুরুত্বপূর্ণ শহর মংডু পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার দাবি করেছে দেশটির জাতিগত সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মি। এর মধ্য দিয়ে দেশটির বিভিন্ন অঞ্চলে বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে লড়াইরত জুন্টা সরকারের ওপর চাপ আরও বাড়ল। গতকাল বুধবার মায়ানমারের এক সংবাদমাধ্যমের দাবি, মংডুর দখল করা সর্বশেষ ঘাঁটি থেকে কুখ্যাত সেনা কর্মকর্তা ব্রিডেগিয়ার জেনারেল থুরিন তুনসহ জান্তা বাহিনীর কয়েকশ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে আরাকান আর্মি। গত বছরের নভেম্বরে মায়ানমারের পশ্চিমাঞ্চলীয় রাখাইন রাজ্যে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের ওপর আক্রমণ চালায় আরাকান আর্মি। এরপর রাজ্যটিতে দু’পক্ষের মধ্যে লড়াই শুরু হয়। গত মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে আরাকান আর্মি বলেছে, মংডুর পুরো এলাকার ওপর সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করেছে তারা। শহরটিতে ১ লাখ ১০ হাজারের বেশি মানুষের বসবাস। বিবৃতিতে আরও বলা হয়, মংডুর কাছে জান্তার সর্বশেষ ঘাঁটি গত রোববার সকালে দখল করে নেন আরাকান আর্মির সদস্যরা। এটি দখলে তাঁদের দুই মাস লড়াই করতে হয়েছে। ঘাঁটির কমান্ডারসহ জান্তার বেশ কিছু সেনাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আরাকান আর্মির প্রকাশিত একটি ভিডিওতে দেখা গেছে, জান্তার সেনারা আত্মসমর্পণের পর ক্ষতিগ্রস্ত ভবনগুলো থেকে সাদা পতাকা হাতে বেরিয়ে আসছেন। বাংলাদেশ সীমান্তে নাফ নদীর ওপারে মংডুর অবস্থান। শহরটি আরাকান আর্মির পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার দাবি প্রসঙ্গে জান্তা সরকারের মন্তব্য জানতে চাওয়া হয়। অবশ্য এতে তারা সাড়া দেয়নি।এর আগে গত মে মাসে আরাকান আর্মি বলেছিল, মংডু থেকে ২৫ কিলোমিটার দূরে বুথিডং শহর দখল করে নিয়েছে তারা। মায়ানমারের আরাকান রাজ্যের কয়েকটি প্রবাসী রোহিঙ্গা গোষ্ঠীর অভিযোগ, আরাকান আর্মি রোহিঙ্গাদের জোর করে তাড়িয়ে দিচ্ছে এবং তাঁদের বাড়িঘর লুট করে জ্বালিয়ে দিচ্ছে। তবে আরাকান আর্মি এ অভিযোগকে অপপ্রচার বলে দাবি করেছে। এমনিতেই মায়ানমারের ক্ষমতাসীন জুন্টা সরকার আগেই জানিয়ে দিয়েছিল তারা কোনও রোহিঙ্গা শরণার্থীকে ফেরত নেবে না৷ সেখানে বিদ্রোহী এবং বৌদ্ধ ধর্মাবিলম্বী আরাকানরা তো রোহিঙ্গাদের স্বীকৃতিই দেয় না৷ রবিবার মায়ানমার সেনার কাছ থেকে বাংলাদেশ সীমান্ত লাগোয়া মংডু শহরেরও দখল নিয়ে নেয় আরাকান আর্মি৷ এর ফলে বাংলাদেশ সীমান্ত বরাবর ২৭১ কিলোমিটার এলাকার পুরোটাই তাদের দখলে চলে গেল৷ প্রতিবেশী দেশের সীমান্তে এই অস্থিরতা বাংলাদেশের চিন্তা বাড়াতে বাধ্য৷ কারণ ২০১৫ সালে এই আরাকান আর্মির সঙ্গে বিজিবি-র দু বার সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটেছে৷ এই আরাকান বাহিনী অতীতে একাধিকবার টেকনাফ অঞ্চলের সমুদ্র পথ থেকে বাংলাদেশি জেলে সহ ট্রলারও অপহরণ করে নিয়ে গিয়েছে৷ প্রসঙ্গত, মায়ানমারের সংবাদমাধ্যম, আরাকান আর্মি এখন দক্ষিণ রাখাইনের গাওয়া, তাউনগুপ ও আন শহরের নিয়ন্ত্রণ নিতে লড়াই করছে। ইতিমধ্যে আন শহরে ৩০টি জান্তা ঘাঁটি দখল করেছে তারা। অন্য শহরগুলোতেও এগিয়েছে বিদ্রোহী এ গোষ্ঠী। জান্তা সরকারের বিরুদ্ধে লড়াই করা বিদ্রোহী গোষ্ঠী ব্রাদারহুড অ্যালায়েন্সের সদস্য আরাকার আর্মি। ইতিমধ্যে এই গোষ্ঠী গত বছরের অক্টোবর থেকে হামলা চালিয়ে উত্তরের শান রাজ্যের অধিকাংশ নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে। এর মধ্যে গত বছরের নভেম্বর থেকে হামলা চালিয়ে রাখাইনের ১৭টি শহরের মধ্যে ১৩টির নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে তারা।
ওয়াকফ আইন নিয়ে পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদে অশান্তির ঘটনায় বাংলাদেশকে জড়ানো হচ্ছে বলে অভিযোগ তুলল সে দেশের অন্তবর্তী সরকার। যদিও ভারতের তরফে...
Read more
Discussion about this post