বহু টালবাহানার পর দুর্গাপুজোর আগে ভারতে ৩ হাজার মেট্রিক টন ইলিশ রফতানির অনুমোদন দিয়েছে মহম্মদ ইউনুসের সরকার। তাতে হাসি ফুটেছে বাঙালিদের মুখে। পদ্মার ইলিশ পাতে নিয়ে শারদোৎসবে মাতবেন সকলে। সেখানে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার ইলিশ মাছ রফতানি করার অনুমতি দিতেই সেখানে এটার বিরোধিতা করা শুরু হয়েছে। ইলিশ মাছ রফতানি বন্ধ করতে এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে আইনি নোটিশ পাঠিয়েছেন শীর্ষ আদালতের এক আইনজীবী।
ওপার বাংলার পদ্মার ইলিশ যাতে এপার বাংলায় না আসে তার জন্য মাহমুদুল হাসান নামের এক আইনজীবী রবিবার নোটিশ পাঠিয়েছেন। চলতি বছর দুর্গাপুজোর সময় বাংলাদেশ থেকে ইলিশ মাছ আসবে কিনা সেটা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। তারপর যখন শোনা গিয়েছিল ওপার বাংলা থেকে এপারে পদ্মার ইলিশ আসছে তখন আনন্দ উন্মাদনার মুহূর্ত তৈরি হয়েছিল জনমানসে।
উল্লেখ্য ইলিশ মাছ রফতানির অনুমোদন দিয়েছে মহম্মদ ইউনুসের সরকার। বাংলাদেশের মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার জানান, ইলিশ রফতানির সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রক। ভারতের বিশেষ অনুরোধে এই অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
এদিকে ইলিশ এপার বাংলায় আসার আগের পরিস্থিতি যে কোনও মুহূর্তে পাল্টে যাবে তা কেউ ভাবেননি। আবার অনিশ্চয়তা দেখা দিল। আজ, রবিবার ইলিশ রফতানি বন্ধ করার দাবি জানিয়ে নোটিশ পাঠিয়েছেন মাহমুদুল হাসান। বাণিজ্য সচিব, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ সচিব, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান এবং আমদানি–রফতানি কার্যালয়ের প্রধান নিয়ন্ত্রকের কাছে এই আইনি নোটিস পাঠানো হয়েছে। এই নোটিশ পাওয়ার তিনদিনের মধ্যে ভারতে ইলিশ রফতানি বন্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। এই নোটিশ মানা না হলে বাংলাদেশ হাইকোর্টে রিট করা হবে বলে জানিয়েছেন আইনজীবী। মাহমুদুল জানান, ভারতে তিন হাজার টন ইলিশ রফতানির অনুমতির ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়ে এই আইনি নোটিশ তিনি পাঠিয়েছেন।
অথচ ভারত ডিম, আলু, পেঁয়াজ বাংলাদেশে পাঠিয়েছে। এখন বাংলাদেশে এইসব খাদ্য সামগ্রীর দাম আগুন। সেখানে ভারত পাশে দাঁড়িয়েছে প্রতিবেশী দেশের। আইনজীবী মাহমুদুল হাসানের বক্তব্য, ‘বাংলাদেশের রফতানি নীতি ২০২১–২৪ অনুযায়ী, ইলিশ মাছ মুক্তভাবে রফতানিযোগ্য কোনও মাছ নয়।’ কিন্তু এতদিন নিয়ম ছিল দুর্গাপুজো শুরু হওয়ার আগেই ওপার থেকে এপারে আসত পদ্মার ইলিশ মাছ। শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন তা বারবার এসেছে। সেই রীতি রেওয়াজ বজায় রেখে দুর্গাপুজো উপলক্ষ্যে ভারতে তিন হাজার টন ইলিশ মাছ রফতানির অনুমোদন দিয়ে নোটিশ জারি করে অন্তর্বর্তী সরকার। এবার সেই অনুমোদনে বদল পরিলক্ষিত হচ্ছে।
Discussion about this post