প্রায় ১৪ বছরের বেশী সময় ধরে আন্তজার্তিক ক্রিকেটের সঙ্গে যুক্ত। যারা এক সময় তার সতীর্থ ছিলেন, তাদেরই প্রশিক্ষনেই ভারতের জাতীয় দলে খেলেছেন তিনি। টেস্টে উইকেট রয়েছে ৫০০ এবং দ্রুততম ৩০০ উইকেট ছুঁয়েছেন এমন বোলার। তিনি টেস্টে দশটি ম্যান অফ দ্যা সিরির পুরুস্কার জিতেছেন, যা একজন ভারতীয় ক্রিকেটারের সর্বোচ্চ এবং সাগগ্রিকভাবে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। এখন পর্যন্ত টেস্টে পাঁচটি সেঞ্চুরির সঙ্গে ৩০০০ রান এবং ৫০০ উইকেট নেওয়া, তিনজন খেলোয়াড়ার মধ্যে তিনি একজন। তিনি হলেন রবিচন্দ্রন অশ্বিন। তার অভিষেক টেস্টে গৌতম গম্ভীর ছিলেন ওপেনার এবং তিন নম্বরে ব্যাট করতে নেমেছিলেন রাহুল দ্রাবিড়।এই দু’জনের প্রশিক্ষণেই ভারতীয় দলে খেলেছেন অশ্বিন। প্রাক্তন দুই সতীর্থের মধ্যে কে কেমন তা জানিয়ে দিলেন তিনি।
বুঝিয়ে দিলেন কোন জায়গায় আলাদা কোচ গম্ভীর এবং দ্রাবিড়।অশ্বিনের মতে গম্ভীর খেলার মাঠে যেমন চাপহীন তেমনই কোচিং-এর সময়ও চাপহীন থাকেন। সেখানে দ্রাবিড় অনেকটাই কঠিন মানসিকতার। অশ্বিন বলেন, “গম্ভীর খুবই চিন্তামুক্ত থাকে। কোনও চাপই নেই গম্ভীরের মাথায়। সকালে দলের হার্ডল হয়। সেই সময়েও গম্ভীরের ভাব এমন থাকে যেন, ‘তুমি কি আসছ? পারলে এসো।’ রাহুল ভাইয়ের সময় আলাদা ছিল। ও পারফেক্ট ম্যান। আমরা মাঠে আসা মানে সব কিছু ঠিক জায়গায় থাকবে। একটা বোতলও এ দিক-ও দিক হলে চলবে না। প্রতিটা জিনিস ঠিক সময় ঠিক জায়গায় চাই রাহুল ভাইয়ের। ও খুবই কঠিন মানসিকতার ছিল। গম্ভীর সে সব কিছু চায় না। ও চাপমুক্ত থাকে। গম্ভীর সকলের হৃদয়ে জায়গা করে নেবে। আমার মনে হয় গম্ভীরকে দলের ছেলেরা খুবই পছন্দ করবে।”
এই বছর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জিতে দায়িত্ব ছেড়েছেন রাহুল। ২০২১ সাল থেকে তিনি ভারতীয় দলের কোচ ছিলেন। ২০২৩ সালের এক দিনের বিশ্বকাপের পরেই তাঁর মেয়াদ শেষ হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু তাঁকে আরও কিছু মাসের জন্য রেখে দেয় বোর্ড। সেই সিদ্ধান্ত যে ভুল ছিল না, তার প্রমাণ ভারতের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জয়। দ্রাবিড় দায়িত্ব ছাড়ার পর কোচ করা হয় গম্ভীরকে। শ্রীলঙ্কা সফর থেকে দায়িত্ব নিয়েছেন তিনি। সেখানে টি-টোয়েন্টি সিরিজ় জিতলেও হারতে হয়েছে এক দিনের সিরিজ়ে। বাংলাদেশের বিরুদ্ধে প্রথম টেস্টে সহজেই জিতেছে ভারত। গম্ভীরের প্রথম বড় পরীক্ষা হতে চলেছে অস্ট্রেলিয়া সফর। গত দু’বার অস্ট্রেলিয়া সফরে গিয়ে জিতে ফিরেছে ভারত। সেই ধারা বজায় রাখতে চাইবেন রোহিত শর্মারা।রোহিতের নেতৃত্বের প্রশংসা করেছেন অশ্বিন। ভারতীয় স্পিনার বলেন, “রোহিত দুর্দান্ত নেতা। প্রত্যেকের সঙ্গে মিশে যায়। খুব ঠান্ডা মাথায় ভেবেচিন্তে সিদ্ধান্ত নিতে পারে। মাঠে নেতৃত্ব দেওয়ার সময়েও সেটা দেখা যায়।”
বাংলাদেশের বিরুদ্ধে চেন্নাইয়ে জয়ের নেপথ্যে অনেক বড় ভূমিকা নিয়েছিলেন অশ্বিন। প্রথম ইনিংসে ব্যাট হাতে শতরান করেছিলেন। সেই সঙ্গে চতুর্থ ইনিংসে ৬ উইকেট নিয়েছিলেন। ভারতীয় স্পিনার বলেন, “দর্শকেরা এই ম্যাচ দেখার জন্য বেশ উৎসাহী ছিলেন। দেশের অন্যতম সেরা পিচ এটা। আশা করব রঞ্জি ট্রফিতে এমনই পিচে খেলবে তামিলনাড়ু। যে ভাবে পিচ তৈরি করা হয়েছে, এটা ধরে রাখা উচিত। টেস্টের জন্য আদর্শ উইকেট।” ২৭ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু ভারত-বাংলাদেশ দ্বিতীয় টেস্ট। কানপুরে হবে সেই ম্যাচ। ভারত সিরিজ়ে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে রয়েছে। কানপুরেও জিতে সিরিজ় জয় করতে চাইবেন রোহিতেরা।আর একটা দুর্দান্ত ম্যাচ দেখার অপেক্ষায় দু-দেশের ক্রীড়া প্রেমীরা।
Discussion about this post