যারা সকাল বিকাল লোকাল ট্রেনে নিত্য যাত্রা করেন, তাঁদের জন্য দূঃসংবাদ। এবার হাওড়া ও শিয়ালদা ডিভিশনে লোকাল ট্রেনের স্টপেজ টাইম অর্থাৎ ট্রেন স্টেশনে দাঁড়ানোর সময়সীমা নির্দিষ্ট করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিল পূর্ব রেল। এবার থেকে হাওড়া ও শিয়ালদা ডিভিশনের লোকাল ট্রেনগুলি প্রতিটি স্টেশনে মাত্র ৩০ সেকেন্ড করেই দাঁড়াবে। এই সময়ের মধ্যেই যাত্রীদের ট্রেনে ওঠানামা করতে হবে। ওয়াকিবহাল মহলের ধারণা, এর ফলে দুর্ঘটনা ঘটার সম্ভাবনাও বেড়ে যাবে। যদিও রেলের দাবি, লোকাল ট্রেনের ক্ষেত্রে স্টপেজ টাইম ৩০ সেকেন্ডই ছিল। কিন্তু ভিড়ের চাপে ৪০ থেকে ৫০ মিনিট পর্যন্ত ট্রেন দাঁড় করাতে হতো গার্ডদের। এবার নির্দিষ্ট সময়সীমা মেনেই ট্রেন ছাড়তে হবে বলে কড়া নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে।
প্রতিদিন লক্ষ লক্ষ নিত্যযাত্রী যাতায়াত করেন লোকাল ট্রেনগুলিতে। দূরবর্তী জেলা থেকে হাওড়া বা শিয়ালদা, দমদম স্টেশনে কর্মসূত্রে আসেন মানুষজন। আবার কাজ শেষে ফিরেও যান লোকাল ট্রেন ধরে। আবার অনেকেই বিভিন্ন কাজে শহর কলকাতায় আসেন এই লোকাল ট্রেনে চেপেই। এই নতুন নিয়মে তাঁরাই চাপে পড়বেন বলেই মনে করছেন নিত্যযাত্রীরা। বিশেষত অফিস টাইমে হাওড়া বা শিয়ালদামুখী ট্রেনগুলি ভিড়ে ঠাসাঠাসি থাকে। সেক্ষেত্রে একেকটি স্টেশনে মাত্র ৩০ সেকেন্ড ট্রেন দাঁড়ালে ট্রেনে উঠতে হুড়োহুড়ি করতে হবে। এত কম সময়ে সঠিকভাবে ওঠানামা করা বেশ কঠিন বলে মনে করছেন নিত্যযাত্রীরাই।
রেল কর্তাদের যুক্তি, স্টপেজ টাইম বেড়ে যাওয়ার কারণেই ট্রেনগুলি দেরিতে চলে। ফলে গন্তব্যে পৌঁছতে নিত্যদিন দেরি হয়। যাতে লোকাল ট্রেন সময় মেনে চলাচল করে সেই কারণেই কড়াকড়ি করা হচ্ছে। কারণ, লোকাল ট্রেনের স্টপেজ টাইম বরাবরই ৩০ সেকেন্ড ছিল। কিন্তু কোনও কোনও ক্ষেত্রে সেটা মেনে চলা সম্ভব হচ্ছিল না। এবার গার্ডদের কড়াভাবে নিয়ম মেনে চলতে হবে। অপরদিকে, নিত্যযাত্রীদের দাবি, অফিসটাইমে প্রবল ভিড় হয়। সেই সময় ৪০ বা ৫০ সেকেন্ড সময়ও বড্ড কম মনে হয়। অনেকেই ট্রেনে উঠতে পারেন না। এবার আরও সময় কমলে সমস্যা আরও বাড়বে। এমনকি তড়িঘড়ি ট্রেনে ওঠানামা করতে গিয়ে দুর্ঘটনাও ঘটতে পারে। যদিও রেল কর্তাদের দাবি, যাত্রীদের সুবিধার্থে বড় জংশন স্টেশনগুলিতে ৩০ সেকেন্ডের বেশি সময়ই ট্রেন দাঁড়াবে। তবুও রেলের এই নিয়ম কতটা যুক্তিসঙ্গত সেটা নিয়েই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে সর্বস্তরে।
Discussion about this post