পরিস্থিতি বুঝে সুর নরম পাকিস্তানের,গত কয়েক দিন ধরেই সমাধানসূত্র খোঁজার জন্য প্রচুর চেষ্টা করা হয়েছে। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির আয়োজক পাকিস্তান হলেও পাঁচটি ম্যাচ দুবাইয়ে হবে। যে সমাধানসূত্র বেরিয়েছে তাতে বিসিসিআই, আইসিসি এবং পিসিবি— তিন পক্ষই সন্তুষ্ট বলে সূত্রের খবর। বহু আগেই ঢাকে কাঠি পড়েছে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির, কিন্তু এখনও কেউ জানতে পারলো না ক্রিড়াসূচি এবং কোন খেলা কোথায় হবে। ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের প্রাক্তন সচিব জয় শাহ আইসিসির চেয়ারম্যানের কার্যভার গ্রহণ করেছেন গত ১ ডিসেম্বর। তার আগে পর্যন্ত আগামী বছরের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি নিয়ে ভারত-পাকিস্তানের মতপার্থক্য দূর করতে পারেননি আইসিসি কর্তারা। ফলে ঘোষণা করা যায়নি প্রতিযোগিতার সূচিও।সিদ্ধান্ত নিতে পারছে না ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট কাউন্সিল । ফলে এখনও অচলাবস্থা চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি ২০২৫ ঘিরে, যদিও পরিস্থির চাপে সুর নরম করতে শুরু করেছে পাকিস্তান। তবে এখনও অমীমাংসিত ভারত-পাকিস্তান দ্বন্দ্ব। ২২ গজ ছেড়ে ভারত-পাকিস্তান ক্রিকেটের লড়াই রাজনীতির ঠান্ডা ঘরে। এখন দুই দেশের ক্রিড়া সংস্থা নয়, খেলার বিষয়টি সমাধান করতে পারে, দুই দেশের সরকার। আর সমস্যা সমাধানের আশায় ক্রিকেটপ্রেমীরা।পিসিবি প্রথমে জানায় তারা হাইব্রিড মডেল মানবে না। কিন্তু আইসিসিও হাইব্রিড মডেলের উপর জোর দেয়। পরিস্থিতি তাদের পক্ষে নেই বুঝে সুর নরম করে, হাইব্রিড মডেলে রাজি হয়েছে পিসিবি। তবে সঙ্গে জুড়ে দিয়েছে পাল্টা শর্ত।পিসিবির শর্ত, তারা হাইব্রিড মডেলে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি আয়োজন করতে রাজি। তবে ২০৩১ সাল পর্যন্ত ভারতে আইসিসির যে চারটি প্রতিযোগিতা হওয়ার কথা, সেগুলিও হাইব্রিড মডেলে আয়োজন করতে হবে। উল্লেখ্য, ২০২৫ সালে মহিলাদের ৫০ ওভারের বিশ্বকাপের আয়োজক ভারত। ২০২৬ সালে ভারত এবং শ্রীলঙ্কা যৌথ ভাবে আয়োজন করবে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। ২০২৯ সালের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির আয়োজক ভারত। আর ২০৩১ সালে এক দিনের বিশ্বকাপ, বাংলাদেশের সঙ্গে যৌথ ভাবে আয়োজন করবে ভারত। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি নিয়ে চাপে পড়ে যাওয়া পিসিবি, মান বাঁচাতে ভারতের উপর পাল্টা শর্ত চাপানোর চেষ্টা করছে। উল্লেখ্য, ভারতের এই অবস্থানের জন্য গত বছরের এশিয়া কাপও হাইব্রিড মডেলে আয়োজন করতে বাধ্য হয়েছিল পিসিবি।পাকিস্তানের দেওয়া শর্ত ঘিরে তৈরি হওয়া নতুন জটিলতা কাটছে বলেই মনে করছেন ক্রিড়ামহলের অনেকেই । অনেকেই আবার বলছেন আগামী শনিবারই চূড়ান্ত হয়ে যেতে পারে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ভবিষ্যৎ। নতুন আইসিসি চেয়ারম্যান জয় শাহের মধ্যস্থাতেই সমাধানসূত্র পাওয়া গিয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে। শনিবার আইসিসি-র শীর্ষকর্তারা পাক বোর্ডের চেয়ারম্যান মহসিন নকভির সঙ্গে ভার্চুয়াল বৈঠক করবেন বলে জানিয়েছে সংবাদ সংস্থা পিটিআই। সেখানে হাইব্রিড মডেলে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির বিষয়টি চূড়ান্ত হয়ে যাওয়ার কথা।পিটিআই-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, ভারত এবং পাকিস্তান কেউই আইসিসি প্রতিযোগিতা খেলতে একে অপর দেশে যাবে না। ফলে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে ভারত বনাম পাকিস্তান ম্যাচ হবে দুবাইয়েই। প্রতিযোগিতায় আটটি দল খেলবে। চারটি দলের দু’টি গ্রুপ হবে। মোট ১৫টি ম্যাচের মধ্যে পাঁচটি ম্যাচ দুবাইয়ে হবে। ভারত সবক’টি ম্যাচই দুবাইয়ে খেলবে।পাক বোর্ড আগেই বলেছিল, তারা হাইব্রিড মডেলে রাজি একটি শর্তে। যদি ভারতে অনুষ্ঠেয় আইসিসি প্রতিযোগিতাতে পাকিস্তানের ক্ষেত্রেও হাইব্রিড মডেলে খেলা আয়োজন করা হয়। আইসিসি এবং বিসিসিআই তাতে আপাতত রাজি হয়েছে। ফলে পরের বছর মহিলাদের এক দিনের বিশ্বকাপ খেলতে ভারতে আসবে না পাকিস্তান। তাদের ম্যাচগুলি নিরপেক্ষ মাঠে হবে। ২০২৬ সালে ছেলেদের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে পাকিস্তানের ম্যাচগুলি হবে শ্রীলঙ্কায়, যারা প্রতিযোগিতার সহ-আয়োজক।আইসিসি-র এক কর্তা পিটিআই-কে বলেছেন, “শুক্রবার ভার্চুয়াল বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। ব্রিসবেন থেকে জয় শাহও যোগ দেবেন। তার পরেই যাবতীয় ঘোষণা করতে পারে আইসিসি।” তবে হাইব্রিড মডেলে রাজি হওয়ার জন্য পাক বোর্ডকে কোনও ক্ষতিপূরণ দেবে না আইসিসি। ফলে পাকিস্তান তাদের অবস্থান বদল করে কিনা সেটাই দেখার।
Discussion about this post