ভারত বাংলাদেশ সম্পর্ক দীর্ঘদিনের। ইতিহাস, সংস্কৃতি, ভুরাজনীতি ও অর্থনীতির গভীর যোগসূত্রে গাঁথা এই সম্পর্ক কখনও সৌহার্দ কখনও বা উত্তেজনার। তবে যখন বাংলাদেশে ভারত বিদ্বেষী আবহ তখন দুই দেশের এই সম্পর্ককে আরও উস্কে দেওয়ার চেষ্টা করছেন মহম্মদুর রহমান। গত মঙ্গলবার বাংলাদেশের একটি সভায় তার প্রকাশ্য মন্তব্য ছিল, ভারত যতদিন না শেখ হাসিনাকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠাবে ততদিন ভারতকে শত্রুরাষ্ট্র হিসাবেই গণ্য করবে বাংলাদেশ। এই বক্তব্য যেমন বিভাজন সৃষ্টি করে তেমন সংকীর্ণ রাজনৈতিক স্বার্থকে সামনে নিয়ে আসে। মনে করা হচ্ছে সাধারণ মানুষের মধ্যে হিংসা সৃষ্টিতেও সক্ষম এই বক্তব্য।
শেখ হাসিনা সর্বদা ভারতের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রেখে এসেছে, যা বাংলাদেশকে অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে অবস্থান শক্তিশালী করতে সাহায্য করেছে। কিন্তু সম্প্রতি মহম্মদুর রহমান তার বক্তব্যে ভারতের এই অবদানের বিষয়টি এড়িয়ে গিয়েছেন। ভারত বাংলাদেশের স্বাধীনতার সময় থেকেই বন্ধু হিসাবে পাশে থেকেছে। ফ্যালানি হত্যার মত ঘটনা অত্যন্ত নিন্দনীয় তবে কিছু ঘটনার ওপর ভিত্তি করে কোনও দেশকে শত্রু রাষ্ট্র হিসাবে গণ্য করার কোনও যুক্তি খুঁজে পাওয়া যায়না। এই সিদ্ধান্ত দুই দেশের মধ্যে অস্থিতিশীলতা ও বিভাজনের পথ প্রশস্ত করতে পারে।
মহম্মদুর রহমানের বক্তব্য কার্যত রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রনোদিত। মূলত তিনি শেখ হাসিনার ওপর প্রকাশ করার চেষ্টাও করেছেন। কিন্তু তার বক্তব্যে সাধারণের মানুষের কোনও চাহিদার কথা পরিস্ফুটিত হয়নি। তিনি আসলে তার বক্তব্যর মাধ্যমে বাংলাদেশের সাধারণ মানুষকে ভুল পথে চালনা করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।
বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে ভারত একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার। ট্রানজিট সুবিধা, বাণিজ্য চ্যুক্তি, ও বিদ্যুৎ সরবরাহ সব গুলিই ভারতের বন্ধুত্বের অবদান। আর মহম্মদুর রহমানের মত ব্যক্তিরা ভারতের এই ইতিবাচক দিক গুলিকে অন্ধকারে ঠেলে দিতে চায়।
মাহম্মদুর রহমানের বক্তব্য দুই দেশের মধ্যে বিভাজনের একটি পরিকল্পনা। ভারত বাংলাদেশের মধ্যে সম্পর্কের ভিত্তি হল সহযোগিতা ও সৌহার্দ। তাই এই ধরণের উস্কানি মূলক বক্ত্যবের মাধ্যমে এই ভিত্তি নষ্ট করা উচিৎ নয়। বরং আমাদের উচিৎ সঠিক তথ্য ও বিশ্লেষণের মাধ্যমে সঠিক জনমত সৃষ্টি করা। যা দুই দেশের শান্তি, ঐক্য ও অগ্রগতির পথকে আরও প্রশস্ত করবে।
উল্লেখ্য, গত কয়েক বছরে দুই দেশের মধ্যে মত পার্থক্য তৈরি হয়েছে। তিস্তা সহ আরও নদীর জল ভাগাভাগি নিয়ে অশান্তির সৃষ্টি হয়েছে। দীর্ঘ অপেক্ষার পর তিস্তা চ্যুক্তি এখনও অধরা রয়ে গিয়েছে। যা নিয়ে বাংলাদেশের জনমানসে উস্কানি মূলক মনভাব তৈরি হয়েছে।
আর দুই দেশের এই সমস্ত সমস্যার মাঝে এখন সবচেয়ে যে বড় যে সমস্যা তা হল শেখ হাসিনার প্রতর্পন। প্রতিমুহূতে হাসিনা প্রসঙ্গে ধেয়ে আসছে বিভিন্ন মন্তব্য। এবার প্রকাশ্য সভায় মহম্মদুর রহমানের হাসিনা প্রসঙ্গে এই বক্তব্য আবারও ভাবিয়ে তুলল কুটনৈতিক মহলকে।
Discussion about this post