গতকাল সিএবি-তে মহিলাদের অনূর্ধ্ব-১৫ দলের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে এসেছিলেন সৌরভ।ঝুলন, মিতালিদের সঙ্গে একটি টক শোয়ে অংশ নেন তিনি। প্রসঙ্গ ওঠে বিরাট কোহলি এবং রোহিত শর্মাদের অস্ট্রেলিয়া সফরে ব্যর্থতা নিয়ে। তবে শুধু বিরাট, রোহিত নন, প্রায় সকলেই ব্যর্থ হয়েছে, তাই অস্ট্রেলিয়াতে সিরিজ হারতে হল ভারতকে। কিন্তু আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে বিশ্বের দুই সেরা ক্রিকেটার বিরাট কোহলি এবং রোহিত শর্মা।অস্ট্রেলিয়ায় খারাপ ফর্মে থাকার কারণে দু’জনেই কাঠগড়ায়। অনেকেরই ধারণা, দ্রুতই ক্রিকেট থেকে অবসর নেবেন এই দু’জন। তবে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় পাশে দাঁড়াচ্ছেন দু’জনেরই। কোহলিকে যেমন সাদা বলের অন্যতম সেরা ক্রিকেটার বলেছেন, তেমনই রোহিতকে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে অন্য ফর্মে দেখতে পাওয়া যাবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন। কারণ তিনি ক্রিকেট জীবনের ওঠা পড়াকে যত কাছ থেকে দেখেছেন ততটা আর কেউ দেখেননি। কতবার যে তিনি বাদ পড়ার পর আবার কামব্যাক করে তার ফ্যানদের আশ্চর্য্য করেছেন তার সঠিক হিসাব করা মুশকিল। তাই বিরাট এবং রোহিতের অবসরের গুঞ্জন উড়িয়ে দিয়ে, ভারতের প্রাক্তন অধিনায়ক বলেছেন, “কোহলির মতো ক্রিকেটার এক জীবনে এক বারই দেখা যায়। ঠিক যেমন মহিলাদের ক্রিকেটে ঝুলন এবং মিতালির মতো ক্রিকেটারও ‘ওয়ান্স-ইন-এ-লাইফটাইম’ ক্রিকেটার। ৮০টা আন্তর্জাতিক শতরান তো মুখের কথা নয়। অবিশ্বাস্য কীর্তি। আমার মতে, বিশ্বের দেখা সর্বকালের সেরা সাদা বলের ক্রিকেটার হল কোহলি।”
অস্ট্রেলিয়ায় প্রথম টেস্টে শতরান করলেও বাকি সিরিজ়েক ভাল খেলতে পারেননি। তা দেখে কিছুটা অবাক হলেও কোহলির পাশেই দাঁডি়য়েছন সৌরভ। বলেছেন, “পার্থে শতরানের পর কোহলি যে ভাবে ব্যাট করেছে তা দেখে অবাক হয়েছি। দেশের মাটিতে ভাল ব্যাট করতে পারেনি। পার্থে শতরানের পর ভেবেছিলাম, ওর জন্য একটা সফল সিরিজ় অপেক্ষা করেছে। সেটা হল না। তবে এ রকম হতেই পারে। বিশ্বের সব ক্রিকেটারেরই শক্তি-দুর্বলতা রয়েছে। এমন কেউ নেই যার খারাপ ফর্ম যায়নি। কী ভাবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে আপনি নিজের দুর্বলতা শোধরানোর চেষ্টা করছেন তার উপরে অনেক কিছু নির্ভর করে।” অস্ট্রেলিয়ায় গিয়ে কোহলি আট বার অফ স্টাম্পের বাইরের বলে খোঁচা দিয়ে আউট হয়েছেন। জুনে ইংল্যান্ড সিরিজ়েকর আগে সেই সমস্যা না মেটালে কোহলিকে ভুগতে হতে পারে বলে আগাম সাবধান করে দিয়েছেন সৌরভ। তার কথায়, “কোহলির মধ্যে এখনও অনেক ক্রিকেট বাকি। ইংল্যান্ড সফর ওর কাছে কঠিন হতে চলেছে। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে ওর ফর্ম নিয়ে আমি চিন্তিত নই। আগেই বলেছি, ও সাদা বলে বিশ্বের সেরা ক্রিকেটার।” অন্যদিকে কোহলির মতোই অস্ট্রেলিয়ায় একই দশা হয়েছিল রোহিতের। পার্থে প্রথম টেস্টে না খেললেও পরের তিনটি টেস্টে মাত্র ৩১ রান করেন। শেষ টেস্টে বাধ্য হয়ে তাঁকে বাদ দিতে হয়। তবে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে অন্য রোহিতকে দেখা যাবে বলে বিশ্বাস করেন সৌরভ। এমনিতেই ইডেন রোহিতের পয়া মাঠ। এখানেই এক দিনের ক্রিকেটে আজ পর্যন্ত সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত ২৬৪ রান শুধুমাত্র রোহিতেরই কীর্তি। সৌরভ বলেছেন, “সাদা বলের ক্রিকেটে রোহিত অবিশ্বাস্য। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি শুরু হলেই অন্য রোহিতকে দেখতে পাবেন।”
দুবাইয়ে খেলতে হলেও ভারত চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি জেতার দাবিদার বলে মনে করেন সৌরভ। তাঁর কথায়, “সাম্প্রতিক কালে ৫০ ওভার এবং ২০ ওভারের বিশ্বকাপে ভারত যে রকম খেলেছে, তাতে ভারতই চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি জেতার অন্যতম দাবিদার। তবে টেস্ট ক্রিকেট নিয়ে ভারতীয় দলকে আরও খাটতে হবে। বিশেষত বিদেশ সফরে গেলে। সিমিং, সুইং পিচের সঙ্গে আরও বেশি করে মানিয়ে নিতে হবে।” অস্ট্রেলিয়াতে সিরিজ হারার পর ভারতের তারকা ক্রিকেটাররা রনজি খেলার জন্য রাজি হয়েছেন বলে জানা যাচ্ছে।
Discussion about this post