বিদেশ ফেরৎ প্রতিনিধিদের নিয়ে নৈশভোজে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। প্রধানমন্ত্রীর আহ্বানে বিশেষ নৈশভোজে যোগ দিয়েছেন ডায়মন্ডহারবারের সাংসদ তথা তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও। প্রধানমন্ত্রীর আমন্ত্রণে অনুষ্ঠিত এই নৈশভোজে উপস্থিত ছিলেন সাতটি বহুদলীয় প্রতিনিধি দলের সদস্য, যাদের মাধ্যমে গোটা বিশ্বের মূলত ‘অপারেশন সিঁদুর’এর কথা বিশ্বের দরবারে তুলে ধরেছে ভারত। এই প্রতিনিধি দলগুলি, যার মধ্যে বেশিরভাগ সদস্যই বর্তমানে নির্বাচিত সাংসদ, তারা বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মঞ্চে ভারতের সন্ত্রাসবাদ বিরোধী পদক্ষেপের কথা তুলে ধরেছেন ওই প্রতিনিধিদলের মধ্যে একটিতে ছিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক।
গত ২২ এপ্রিল কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে একটি ভয়াবহ হামলায় ২৬ জন পর্যটক নিহত হয়েছিলেন। এরপর, ১৫ দিনের মধ্যে পাকিস্তান এবং পাক অধিকৃত কাশ্মীরে ভারতীয় সেনা অভিযান চালিয়ে একাধিক জঙ্গি ঘাঁটি ধ্বংস করেছিল। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ভারতের এই প্রত্যাঘাত ‘অপারেশন সিঁদুর’ নামে পরিচিত। মূলত অপারেশন সিঁদুর ও ভারত-পাকিস্থান সংঘর্ষ বিরতির পর পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ভারতের অবস্থান গোটা বিশ্বের সামনে তুলে ধরতে তৎপর ভারত সরকার। ভারত থেকে ৭ টি সর্বদলীয় সংসদীয় প্রতিনিধি দল পাঠিয়েছিল কেন্দ্র। সাতটি প্রতিনিধি দলে মোট ৫৯ জন সদস্য ছিলেন যাদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।
অভিষেক এবং তার দলের সদস্যরা, বিশেষত জেডিইউ সাংসদ সঞ্জয় ঝার নেতৃত্বে, এশিয়ার পাঁচটি দেশে সফর করেন। জাপানে গিয়ে পাকিস্তানকে সরাসরি দেগেছিলেন অভিষেক। দক্ষিণ কোরিয়ায় গিয়েও পাকিস্তানকে তুলোধনা করতে ছারেননি তিনি। এমনকি নিউটনের তৃতীয় সূত্রের কথা মনে করিয়ে তার হুঁশিয়ারি প্রত্যেক ক্রিয়ারই সমান ও বিপরীত প্রতিক্রিয়া রয়েছে।পাশাপাশি এর উদাহরণ স্বরূপ ৯/১১ থেকে ২৬/১১ এ জঙ্গি হামালার কথা স্মরণ করিয়ে বলেছিলেন,ভারত, পাকিস্তানের জঙ্গিঘাঁটিগুলিকে নিকেশ করে দিয়েছে।
পাকিস্তানকে সমর্থন করা মানেই সন্ত্রাসবাদী সংগঠনগুলিকে সমর্থন করা হবে। ২২ তারিখে পহেলগাঁও হামলা শুধু আর ভারতের জাতীয় নিরাপত্তার জায়গায় আটকে নেই। এটা এখন গোটা বিশ্বের ইস্যু বলেছেন অভিষেক। এর সঙ্গেই তিনি যোগ করেছিলেন, ভারত ও পাকিস্তানের অর্থনৈতিক পরিকাঠামোয় সাদৃশ্য খুঁজে পাওয়া যাবে স্বর্গ ও নরকের। অর্থাৎ বিদেশের মাটিতে দাঁড়িয়ে পাকিস্তানকে এই ভাবেই আক্রমণ শানিয়েছিলেন তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক।
উল্লেখ্য, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় পশ্চিমবঙ্গের একজন গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক নেতা। তার নেতৃত্বে, তৃণমূল কংগ্রেস দেশে সক্রিয় ভূমিকা পালন করছে। অভিষেকের আন্তর্জাতিক সফর ভারতের সন্ত্রাসবাদ বিরোধী কৌশলকে বিশ্বমঞ্চে তুলে ধরার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হিসেবে দেখা হচ্ছে।
মঙ্গলবার ৭ নং লোক কল্যাণ মার্গে প্রধানমন্ত্রীর নৈশভোজে উপস্থিত ছিলেন এই বহুদলীয় প্রতিনিধি দলের সদস্য কংগ্রেস সাংসদ শশী থারুর, সলমন খুরশিদ, মণীশ তিওয়ারি সহ তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও এদিন তারা নৈশভোজে যোগ দেন। প্রধানমন্ত্রীর সাথে এই বৈঠক ভারতের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক এবং সামরিক কৌশলের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। অর্থাৎ প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে এই বৈঠক ভারতের ভবিষ্যৎ কৌশল বিশেষ করে সন্ত্রাসবাদ দমন, নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিষয় এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্কের উন্নয়নকে এগিয়ে নিতে সহায়তা করতে পারে বলে মনে করা । যা ভারতের পররাষ্ট্রনীতি এবং সামরিক কৌশলকে আরও দৃঢ় করবে।
Discussion about this post