লোকসভা নির্বাচনে বাংলায় শাসক- বিরোধী উভয় পক্ষের প্রার্থী নাম ঘোষণা হতেই আনন্দে আত্মহারা হয়ে যায় হুগলির তৃণমূল সমর্থকরা। আড়াই মাসের হাড্ডাহাড্ডি যুদ্ধে অবশেষে জনগণের দেওয়া রায়েতে জয়ী হয়েছেন বাংলার দিদি নং ১। ২০১৯ এর লোকসভা নির্বাচনে জনতার রায়ে হুগলির মসনদে বসিয়েছিলেন বিজেপি প্রার্থী লকেট চট্টোপাধ্যায়। রাজনীতির ময়দানে নানা চড়াই উতরাই পার করেও হুগলিকে নিজের অধীনে রেখেছিলেন লকেট। কিন্তু এবার যেন তাঁর সাধের ঘরকে এক চুটকিতেই পাল্টে দিল জনগণ। ৭৬ হাজার ৮৫৩ ভোটের ব্যবধানে পদ্ম শিবিরের প্রার্থী লকেট চট্টোপাধ্যায়কে পরাস্ত করে জয়ী হন সদ্য রাজনীতিতে আসা অভিনেত্রী রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়। অর্থাৎ, এক কথায় যাকে বলে পদ্ম পুকুরে ঘাসফুল ফোটালেন বাংলার দিদি নং ১। পেশাগত দিকে, এরা দুজনেই এককালের জনপ্রিয় অভিনেত্রী। কিন্তু রাজনীতির ময়দানে তাঁরা একে অপরের প্রতিপক্ষ। তবে নির্বাচনীর প্রচার চলাকালীন সিঙ্গুরের দইয়ের প্রশংসা করে লকেটের কাছ যেভাবে খোঁচা খেয়েছিলেন রচনা। এবার সেই রচনাই হুগলির মসনদ জেতার পর বিদায়ী সাংসদ তথা রুপোলী দুনিয়ার এককালীন প্রতিদ্বন্দী লকেটকে এক হাঁড়ি দই পাঠাবেন বলে জানান।
ফল ঘোষণার পর বুধবার দলীয় কর্মী সমর্থকদের নিয়ে হুগলির ওলাইচণ্ডী মন্দিরে যান অভিনেত্রী তথা সদ্য জয়ী সাংসদ রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়। ভোট আবহেই তাঁর শ্বাশুড়ি গত হওয়ায় পুজো দিতে পারেন নি তিনি। তাই এদিন মন্দিরের বাইরে থেকেই প্রণাম সারেন তিনি। এরপর মন্দির থেকে বেড়িয়ে এলাকাবাসীদের ধন্যবাদ জানান। শুধু তাই নয়, এতদিন ধরে যারা অভিনেত্রীকে নিয়ে মিম তৈরি করেছিলেন, এদিন তাঁদেরকেও ধন্যবাদ জানান সাংসদ রচনা। শুধু তাই নয়, ওরাই আমাকে অনেক পাবলিসিটি দিয়েছে। আমি হুগলির দিদি নং ১, আর বাংলার দিদি নং ১ একজনই, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলে মন্তব্য রচনার। তবে এখানেই শেষ নয়, বিনো দুনিয়ার অভিনেতা অভিনেত্রীরা নাকি সংসদ বা বিধায়ক হলে এলাকার জন্য কোনও কাজই করেন না। জনগণের এই অভিযোগ বহুদিনের। তবে এবার আর তা হবে না। সাংসদ পদে শপথ নেওয়ার আগেই হুগলিবাসীর জন্য প্রচুর কাজ করার প্রতিশ্রুতি দেন রচনা। একই সঙ্গে লকেটকে লক্ষ্য করে তিনি বলেন, নতুন করে বলার কিছু নেই, জনতার দেওয়া রায়েই সেরা। প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীকে হারানো নিয়ে সাদামাটা জবাব রচনার। তবে রাজনীতির ময়দানে পা রাখেই প্রথম বলেই ছক্কা মারলেন যে রচনা, তা বলাই যায়।
Discussion about this post