রেল দুর্ঘটনায় বাড়ছে মৃত্যুর সংখ্যা। যাত্রীদের নিরাপত্তা কি এতটাই ঠুনকো। বার বার রেল দুর্ঘটনার পর উঠছে সেই প্রশ্ন। গত জুনের ঘটা। গোটা দেশ সাক্ষী থেকে ছিল এক ভয়াবহ রেল দুর্ঘটনার। ওড়িশার বালেশ্বরে ভয়াবহ দুর্ঘটনায় পড়েছিল করমণ্ডল এক্সপ্রেস। দ্রুত গতিতে যাওয়ার সময়ে একটি মালগাড়ির পিছনে ধাক্কা মারে ট্রেনটি। কয়েকটি কামরা গিয়ে পড়েছিল পাশের লাইনে। সেখানে আরও একটি বিপর্যয়। উল্টো দিক থেকে আসা একটি সুপারফাস্ট ট্রেন লাইনের উপর পড়ে থাকা কামরায় সজোরে ধাক্কা মারে। মর্মান্তিক দুর্ঘটনার পর পেড়িয়েছে ১ টা বছর। সেইদিনের স্মৃতি এখনও টাটকা মনে। তারই মাঝে আরও এক দুর্ঘটনা। এটিও রেলপথে। সোমবার সকালে ধীরগতিতে চলা কাঞ্চনজঙঘা এক্সপ্রেসে ধাক্কা মারল একটি মালগাড়ি। নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশন থেকে শিয়ালদহের দিকে রওনা দিয়েছিল কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস। ফাঁসিদেওয়ার রাঙাপানি স্টেশনের কাছে সকাল ৮টা ৫০ মিনিট নাগাদ আচমকা ওই ট্রেনে পিছন দিক থেকে একটি মালগাড়ি এসে ধাক্কা মারে। কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসের চারটি কামরা লাইনচ্যুত হয়েছে। লাইনের পাশে দুমড়ে মুচড়ে যাওয়া কামরা দেখেই স্পষ্ট দুর্ঘটনার ভয়াবহতা কত
সরকারি পরিসংখ্যান বলছে এখনও পর্যন্ত একাধিক জনের মৃত্যু হয়েছে। যাদের মধ্যে তিনজনই রেলের কর্মী। দু’জন মালগাড়ির লোকো পাইলট। এক জন কাঞ্চনজঙ্ঘার গার্ড। বাকি ৫ জন যাত্রী। যদিও বেসরকারি পরিসংখ্যান বলছে মৃতের সংখ্যা অনেক বেশী। কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসের অক্ষত অংশ যাত্রীদের নিয়ে মালদহের দিকে রওনা দিয়েছে। এমনটাই জানিয়েছেন পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক কৌশিক মিত্র।
দুর্ঘটনার মাশুলও দিয়েছে রেল। ঘোষণা করা হয়েছে ক্ষতিপূরণ। রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব জানান মৃতদের পরিবার ১০ লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ পাবে। গুরুতর আহতরা পাবেন আড়াই লক্ষ ও কম গুরুতর আহতরা পাবেন ৫০ হাজার করে টাকা। উদ্ধার কাজে হাত লাগিয়েছে ১০০ জন বিএসএফ জওয়ান। রয়েছে রাজ্য এবং জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী।
কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসে দুর্ঘটনায় ক্ষতিপূরণ ঘোষণা করলেন প্রধানমন্ত্রী। মৃতদের পরিবার পাবে দু’লক্ষ টাকা ক্ষতিপূর্ণ ও আহতদের ৫০ হাজার টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে বলে জানিয়েছে তাঁর দফতর।
কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসে দুর্ঘটনার ফলে কলকাতা-শিলিগুড়ি রেল যোগাযোগ ব্যাহত হয়েছে। রাজধানী এক্সপ্রেস, বন্দেভারত এক্সপ্রেস-সহ বেশ কিছু ট্রেনের গতিপথ বদল করা হয়েছে।
দুর্ঘটনার কারণ কি তবে গাফিলতি? অনুমান করা হচ্ছে সিগন্যাল দেখতে পাননি মালগাড়ির চালক। আর তার জেরেই এত বড় বিপত্তি। কাঞ্চনজঙঘা ধীরগতিতে ছিল এবং এর পেছনে লাগেজ ভ্যান থাকায় বড়সড় দুর্ঘটনা ঘটেনি। তবে কেন বার বার এমন ঘটছে। অবশ্যই খতিয়ে দেখে কারণ নির্ধারণ করে প্রয়োজন। কারণ কেবলমাত্র ক্ষতিপূরণ ও শাস্তি দিলেই একজন মানুষের জীবনের বিনিময়ে মূল্য চোকানো হতে পারে না।
ব্যুরো রিপোর্ট নিউজ বর্তমান
Discussion about this post