রাত ৩.১৭ মিনিটে শিয়ালদা স্টেশনের ১৩ নম্বর প্লাটফর্মে ১২৯৩ জন যাত্রীকে নিয়ে পৌছায় কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস। রেলের তরফ থেকে সকল যাত্রীদের জন্য খাদ্য ও চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশ শিয়ালদা স্টেশনে রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে একটি হেল্প ডেস্ক করা হয়। সেই হেল্প ডেস্কের দায়িত্বে ছিলেন কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম ও রাজ্যের মন্ত্রী স্নেহাশীষ চক্রবর্তী।
দুর্ঘটনার পর অক্ষত অংশ নিয়ে কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস শিয়ালদা এসে পৌছায় রাত ৩.১৭ মিনিটে। তখন যাত্রীদের মুখে চোখে আতঙ্কের ছাপ। থমথমে পরিবেশ। যেই সময় কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস শিয়ালদায় এসে পৌঁছয়, তখন সেখানে অপেক্ষায় ছিলেন রাজ্যের দুই মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম ও স্নেহাশিস চক্রবর্তী। প্ল্যাটফর্ম চত্বরে তখন প্রচুর সংখ্যক রেল পুলিশ মোতায়েন। এরই মধ্যে ট্রেন থামতেই ফিরহাদ হাকিমকে জড়িয়ে কাঁদতে দেখা গেল এক যাত্রীকে।এদিন ফিরহাদ হাকিম রেলের ব্যবস্থা নিয়ে সমলোচনা করেন। শিয়ালদা স্টেশনে সংবাদ মাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে রেলের দিকে তোপ দাগেন ফিরহাদ হাকিম। পুরমন্ত্রী বলেন, ‘মানুষের অভিজ্ঞতা খুব মর্মান্তিক, ৩ দিন ধরে ট্রেনে রয়েছেন, হঠাৎ করে মৃত্যু ফাঁদ, তার থেকে বেরিয়েছেন, অনেকেই আহত, আমাদের যেটুকু করার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে আমরা করেছি, কিন্তু ভারতীয় রেলের কী হবে, এটা বড় প্রশ্নের মুখে, আমাদের কাজ আমরা করছি, আমরা প্রাণ হাতে নিয়ে রেলে চড়ব, ভগবানের কৃপায় ফিরতে পারেল ফিরব নইলে মৃ্ত্যু।’ রেলযাত্রা নিয়ে ফিরহাদ বলেন, ‘আমি নিজেও নিরাপদ মনে করি না , বন্দে ভারতে যাতায়াত করলে এবার ইনস্যুরন্সে বাড়িয়ে যেতে হবে।’ সোমবার দুর্ঘটনাস্থল পরিদর্শনে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রীও রেলের সমালোচনা করেছিলেন। মমতা বলেছিলেন,‘এখন শুধুই বন্দে ভারতের নামে পাবলিসিটি। দুরন্ত এক্সপ্রেস ছিল সব চেয়ে দ্রুতগতির ট্রেন। ওটা আমি করে দিয়েছিলাম। কিন্তু এখন শুধুই অবহেলার মুখোমুখি হতে হচ্ছে।’ পাশাপাশি মমতা বলেন, ‘আমি রেলকর্মীদের পাশে রয়েছি।’
এদিকে আতঙ্কের পাশাপাশি অনেক যাত্রীর মুখেই ছিল স্বস্তির ছাপ। পূর্ব রেলের জনসংযোগ আধিকারীক কৌশিক চন্দ জানান, ১২৯৩ জন যাত্রীকে নিয়ে শিয়ালদায় ট্রেন এসেছে। সকলের জন্য খাদ্য ও চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত সোমবার সকালে দুর্ঘটনার কবলে পড়ে শিয়ালদহগামী কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস। নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশন ছাড়তেই রাঙ্গাপানি স্টেশনে যাত্রীবাহী ট্রেনটিকে পিছন থেকে ধাক্কা মারে মালগাড়ি। এক্সপ্রেসের একটি বগি উঠে যায় ইঞ্জিনের ওপর। আরও দুটো বগি দুমড়ে মুচড়ে যায়।
Discussion about this post