উত্তরবঙ্গের রাঙাপানি এলাকার ট্রেন দুর্ঘটনা নিয়ে এখনও পর্যন্ত রেল কর্মীদের জিজ্ঞাসাবাদ চলছে, সাংবাদিক বৈঠকে এমনটাই জানান ডিআরএম সুরেন্দ্র কুমার। এখনও পর্যন্ত মোট ১৬ জনের বয়ান রেকর্ড করেছেন কমিশনার অফ রেলওয়ে সেফটি জনককুমার গর্গ। এদিন DRM বলেন যতক্ষণ না পর্যন্ত ঘটনার রিপোর্ট আসছে যাদেরকে জিজ্ঞেস করা হচ্ছে সকলেই দোষী। কারোর একার ওপর দোষ চাপানো যাবে না। ডিআরএম সুরেন্দ্র কুমার আরো বলেন আলিপুরদুয়ারে যেই ট্রেনিং স্কুল থেকে অটোমেটিক সিগন্যালিং নিয়ে ট্রেনিং দেওয়া হত সেই স্কুলের ট্রেনারদের কেউ জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। আরো বেশ কয়েকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা বাকি রয়েছে। ফলে রিপোর্ট তৈরি করতে আরো কিছু সময় লাগবে বলে তিনি জানান। জানা যাচ্ছে, স্বয়ংক্রিয় সিগন্যালিং ব্যবস্থা খারাপ থাকায় ট্রেন চালানোর জন্য রাঙাপানির স্টেশনমাস্টার যে ‘কাগুজে অনুমতি’ দিয়েছিলেন, তাতে কোনও ভুল ছিল না।
দুর্ঘটনার দিন নিয়ম-নির্দেশ মেনেই কাঞ্চনজঙ্ঘা ও মালগাড়ির চালককে ‘অনুমতিপত্র’ দেওয়া হয়েছিল বলে দাবি করেন কাটিহারের ডিআরএম সুরেন্দ্র কুমার। তাঁর কথায়, ‘‘নির্দেশ অনুযায়ী যে ফর্মে অনুমতি দেওয়া প্রয়োজন, তাই দেওয়া হয়েছে। আলাদা আলাদা ফর্মের আলাদা আলাদা মানে রয়েছে। তদন্ত চলাকালীন এগুলো বলা সম্ভব নয়।’’ বৃহস্পতিবার বিকেলে কাটিহারের ডিআরএম সুরেন্দ্র কুমার বলেন, ‘‘যখন কোনও দুর্ঘটনা ঘটে, তখন সঠিক তথ্য পেতে অসুবিধা হয়। প্রাথমিক তদন্তের উপর বিবৃতি দেওয়া হয়েছিল। মালগাড়ির গতিবেগ, কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসের গতিবেগ সব কিছুই তদন্ত কমিটির কাছে রেকর্ড হয়েছে। তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত তা জনসমক্ষে নিয়ে আসা উচিত হবে না।’’ সুরেন্দ্র আরো জানান, এখনও পর্যন্ত ৩০ জনকে ডাকা হয়েছে।
তার মধ্যে ১৬ জনের বয়ান রেকর্ড করা হয়েছে। ট্রেন দুর্ঘটনার পর প্রশিক্ষণ ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। তাই আলিপুরদুয়ারের রেল প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের কর্তাদেরও তদন্ত কমিটির সামনে হাজির হতে বলা হয়েছে। ঘটনার পর রেলকর্মীদের একাংশ স্টেশনমাস্টারের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন। তার প্রেক্ষিতে স্টেশনমাস্টারকে ‘ক্লিনচিট’ দেওয়াকে তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে। প্রসঙ্গত, গত সোমবার নিউ জলপাইগুড়ি কাছে, রাঙ্গাপানি এলাকায় কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস দুর্ঘটনায় কবলে পরে। শিয়ালদা গামী কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসের পেছনে ধাক্কা মারে একটি মাল গাড়ি। ঘটনায় মৃত্যু হয় ১১ জনের। এখনও বেশ কয়েক জন উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বেডে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে। দুর্ঘটনার কারণ খুঁজতে তদন্তে শুরু করেছে চিফ কমিশনার অফ রেলওয়ে সেফটি।
Discussion about this post