ভাঙড়ের জেলবন্দি তাজা নেতা আরাবুল ইসলামকে নিয়ে বিস্ফোরক দাবি করলেন তৃণমূল বিধায়ক শওকত মোল্লা। মঙ্গলবার ভাঙড় কলেজের মাঠে দলীয় কর্মিসভায় তিনি জানান, স্থানীয় এক পঞ্চায়েত সদস্যের স্বামীকে খুনের ষড়যন্ত্র করেছিলেন আরাবুল। শুধু তাই নয়, সেখবর তাঁকে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় দিয়েছিলেন বলে দাবি করেন শওকত। লক্ষ লক্ষ টাকার বিনিময়ে পঞ্চায়েতের টিকিট বিক্রি করেছে আরাবুল ইসলাম । লোকসভা ভোটে ও তৃণমূলকে হারানোর চক্রান্ত করেছিলো। এমনকি এক তৃনমূল নেতাকে খুন করার চক্রান্ত ও করেছিলো আরাবুল। মঙ্গলবার ভাঙ্গড়ের একটি জনসভা থেকে এমনটাই দাবি করলেন তৃনমূল নেতা শওকত মোল্লা। পাশপাশি তিনি আরো বলেন যে আরাবুল ইসলামকে গ্রেফতার করা হয়েছে ,এবং তার সব অপরাধ নিয়ে তদন্ত হবে। লোকসভা ভোটে বিপুল ভোটে তৃণমূলকে লিড দিয়েছে ভাঙ্গড় বিধানসভা কেন্দ্র। যে সমস্ত কর্মীরা এই নির্বাচনে লড়াই করে দলকে জয় এনে দিয়েছে ,তাদের কৃতজ্ঞতা জানাতে মঙ্গলবার ভাঙ্গড় কলেজ ময়দানে এক সভার আয়োজন করা হয।
এই মঞ্চ থেকে আরাবুল ইসলামকে আক্রমণ করে সরাসরি মন্তব্য করতে শোনা যায় শওকত মোল্লাকে। সভায় শওকত বলেন, কয়েকদিন আগে তিনি একটি চিঠি পান। তাতে ছিল একটি হিসাবে। সেখানে দেখা যাচ্ছে পঞ্চায়েতে টিকিট দেওয়ার নাম করে প্রায় ১ কোটি ৩০ লক্ষ টাকা তুলেছেন আরাবুল। ৬ – ১৫ লক্ষ টাকায় বিক্রি করা হয়েছে পঞ্চায়েতের টিকিট। প্রধান পদ বিক্রি হয়েছে ২৫ – ৪০ লক্ষ টাকায়। নিজের ছেলেকে পঞ্চায়েত সমিতির টিকিট দিতে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে তদ্বির করেছিলেন আরাবুল। খাদিজা বিবি নামে এক মহিলার জন্যও এরকম আবেদন করেন আরাবুল।শওকত দাবি করেন, আরাবুলের গ্রেফতারির কয়েকদিন আগে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁকে বলেন। ভাঙড়ের এক পঞ্চায়েত প্রধানের স্বামী খইরুল ইসলামকে খুনের পরিকল্পনা করেছে আরাবুল।
সেজন্য ১৫ লক্ষ টাকা সুপারি দেওয়া হয়েছে। এর পরই গ্রেফতার হন আরাবুল ইসলাম। শওকতের আরও বিস্ফোরক দাবি “নিজের ছেলেকে পোলেরহাট থেকে তুলে নিয়ে বেওতা থেকে টিকিট দিতে হবে জেলা পরিষদে। দিয়েছি। আমি তখন বেশি জানি না কোন সিটে কে রয়েছে, সেখানেও টিকিট দেওয়া হয়েছে। দলের নিয়ম অনুযায়ী, দলের কনভেনরকে সভাপতি করা যায় না। কিন্তু ও এসে আমাকে বলল, পঞ্চায়েত সভাপতিকে কনভেনর করতে। আমি আমার নেতা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে বিষয়টা বলে, দলের কনভেনরও করি, সভাপতিও করি। ভাঙড়ের কর্মীদের বুঝিয়ে বলেছি, সবাইকে একসঙ্গে লড়াই করতে হবে। বিনিময়ে আমরা দেখেছি, আমার কাছে যারা যেত, তাদের ওপর রোয়াব চলত। গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে আমাদের তিনটে কর্মী খুন হন। অনেকে আহত হন।
আহত প্রত্যেক কর্মীকে নিজের পকেট থেকে ১০ হাজার টাকা করে দিয়েছি। কিন্তু মাঝখানে প্ল্যান হল খয়রুলকে মার্ডার করতে হবে। আমি তখন কিছুই জানতাম না। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় আমাকে একদিন বললেন, ওখানে নেতাগিরি করছো? ওখানে একজন নেত্রী রয়েছে, তাঁর স্বামীর নাম খয়রুল, ওঁকে খুন করার জন্য ১৮ লক্ষ টাকার বরাত দেওয়া হয়েছে। তুমি যে আরাবুল আরাবুল করো,সেই এই ঘটনার মূল নায়ক। গোটাটা আমার ওপর ছেড়ে দাও। আমি একটি কাজে দিল্লি যাই, সেদিনই আরাবুল গ্রেফতার হয়ে যান।”
Discussion about this post