কোচবিহার-চোপড়ার ঘটনার প্রতিবাদে স্পিকারের সম্মতি ছাড়াই বিধানসভার গাড়ি বারান্দায় ধর্নায় বসলেন বিজেপি বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পল। সঙ্গে রয়েছেন শিখা চট্টোপাধ্যায়, চন্দনা বাউড়ি, সুনীতা সিংহরা। অন্যদিকে স্পিকারের সম্মতি নিয়ে ধর্না অব্যাহত তৃণমূলের সায়ন্তিকা ও রায়াত হোসেন সরকারদের।
গত কয়েকদিন ধরে রাজ্য বিধানসভা চত্বরে ধর্না অব্যাহত রেখেছেন সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায় ও রায়াত হোসেন সরকার। সম্প্রতি বিধানসভা উপ-নির্বাচনে দুজনেই জিতেছেন তৃণমূলের টিকিটে। অভিযোগ রাজ্যপাল শপথগ্রহণ করানো নিয়ে টালবাহানা করছেন। সায়ন্তিকারাও নিজেদের দাবিতে অনড়। রাজভবন নয় বিধানসভাতেই শপথগ্রহণ করতে চান তাঁরা। দলনেত্রী তথা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সমর্থন রয়েছে তাঁদের দাবির নেপথ্যে। যার জেরে সদ্য নির্বাচিত তৃণমূল প্রতিনিধিদের দাবি আরও বেশি পোক্ত হয়েছে। স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় আগেও রাজ্যপালকে অনুরোধ জানিয়ে ছিলেন। এদিন শপথগ্রহণ সংক্রান্ত প্রশ্ন করতেই পুনরায় তার অন্যথা হল না।
বিধানসভায় আগেও উপ-নির্বাচিনে জিতে আসা বিধায়কদের শপথগ্রহণ নিয়ে টালাবাহানা হয়েছে। বিধানসভা থেকে রাজভবনের দুরত্ব মেরেকেটে ৯ মিনিট। এই ৯ মিনিট অতিক্রম করতে দড়ি টানাটানি খেলা দেখা গিয়েছে বার বার। কখনও বাবুল সুপ্রিয় কখনও আবার নির্মলচন্দ্র রায়। দুই শিবিরে চোখে পড়েছে জেদাজেদি। এবারও একই রীতি বহাল থাকল। রাজভবন ও বিধানসভার মধ্যে চোখে পড়ল পুরনো খেলা। তবে বাবুল ও নির্মলচন্দ্র রায়ের জায়গায় এবার সায়ন্তিকা ও রায়াত হোসেন সরকার। এদিন বিধানসভা স্পিকারের সামনে উঠে এল আরেকটি প্রশ্ন। চোপড়া ও কোচবিহারের ঘটনায় বিধানসভার গাড়ি বারান্দায় প্ল্যাকার্ড হাতে ধর্নায় বসেছেন অগ্নিমিত্রা সহ কয়েকজন মহিলা বিধায়ক । তাঁরা দাবি করেন স্পিকার তাঁদের অনুমতি দেননি। রাজনীতির বাধবিচারের দিকে ইঙ্গিত করে অগ্নিমিত্রারা দাবি করেন তৃণমূল হলে সহজেই অনুমতি পেতেন। স্পিকার বিমানকে প্রশ্ন করতেই তাঁর জবাবও দেন তিনি
সম্প্রতি কোচবিহার ও চোপড়ায় প্রায় পর পর দুটি ঘটনা ঘটেছে। কোচবিহারের মাথাভাঙা-২ নং ব্লকে বিজেপির সংখ্যালঘু নেত্রীকে বিবস্ত্র করে মারধরের অভিযোগ উঠেছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে যখন উত্তাল রাজ্য-রাজনীতি ঠিক সেইসময় ঘটল আরও একটি ঘটনা। রবিবার দুপুরে তৃণমূলের চোপড়ার নেতা তাজম্মুল ওরফে ‘জেসিবি’র একটি ভিডিয়ো প্রকাশ্যে আসে। সেই ভিডিয়োয় দেখা যায় এক তরুণীকে রাস্তার মধ্যে ফেলে এক ছড়া কঞ্চি দিয়ে বেধড়ক মারছেন জেসিবি। মার খেতে খেতে গুটিয়ে যাওয়া মেয়েটিকে চুলের মুঠি ধরে টেনে এনে ধাক্কা দিয়ে মাটিতে ফেলা হচ্ছে। এরপর আরও একদফা মার। একই সঙ্গে এক তরুণকেও একই ভাবে মারতে দেখা যায় । এই দুই ঘটনা ঘিরে আপাতত বাংলার রাজনীতি তোলপাড়। রাজ্যে নারীদের নিরাপত্তা ঘিরে উঠছে প্রশ্ন। যদিও রাজ্য তৃণমূলের এক প্রথমসারির নেতা ফিরহাদ হাকিম বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলিতে মেয়েদের নিরাপত্তা নিয়ে পাল্টা প্রশ্ন তুললেন। কোচবিহারের ঘটনায় রাজ্যে এসেছে জাতীয় মহিলা কমিশন। কথা বলেছেন নির্যাতিতার সঙ্গে। অন্য দিকে, চোপড়ার ঘটনায় রাজ্যের পরিস্থিতিতে উদ্বেগপ্রকাশ করেছেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। সূত্রের খবর নবান্নের স্বরাষ্ট্র দফতর থেকে রিপোর্টও তলব করেছেন তিনি।
Discussion about this post