প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর বেশ গর্ব করেই বলেছিলেন ছোটবেলায় তিনি বাবার চায়ের দোকানে চা বিক্রিতে সহায়তা করতেন। তিনি নরেন্দ্র মোদি, ২০২৪ সালে তিনি ভারতের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন। আজ তৃতীয়বারের জন্য ক্ষমতায় এসেছে তাঁর নেতৃত্বাধীন এনডিও জোট। তৃতীয়বারের জন্য প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়ে ইতিহাস গড়েছেন তিনি। ফলে নতুন করে তাঁর পারিবারিক চায়ের দোকান নিয়ে কৌতুহল সৃষ্টি হয়েছে সমাজমাধ্যমে। আদৌ কি তাঁদের কোনও চায়ের দোকান ছিল, আর থাকলেও সেটা এখন কোথায়? এই প্রশ্নই ঘুরপাক খাচ্ছে সমাজ মাধ্যমে।
জানা যায়, গুজরাটের ভাদনগর স্টেশনে চায়ের স্টল ছিল নরেন্দ্র মোদির বাবা দামোদরদাস মোদির। সেই চায়ের দোকানেই বাবার সঙ্গে চা বিক্রি করতেন ছোট্ট নরেন্দ্র। তাঁর পরিবারের আয় এতটাই কম ছিল যে, তাঁকে পড়াশোনার ফাঁকে বাবার চায়ের দোকানে কাজ করতে হতো। এও জানা যায়, ২০১৯ সালে একবার গুজরাটের ভাদনগর স্টেশনে ছোট্ট টিনের চায়ের দোকানটিকে পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তুলতে উদ্যোগী হয়েছিলেন তৎকালীন কেন্দ্রীয় পর্যটনমন্ত্রী প্রহ্লাদ প্যাটেল। তিনি নিজেই গিয়েছিলেন সেই দোকানটির বর্তমান পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে। তবে আদৌ ভাদনগর স্টেশনে মোদি পরিবারের কোনও চায়ের স্টল ছিল কিনা সেটা নিয়ে কোনও প্রশ্নের জবাব দিতে পারেনি পশ্চিম রেল। সবমিলিয়ে বিষয়টি বেশ ধোঁয়াশার।
২০১৫ সালে তথ্য জানার অধিকার আইনে নরেন্দ্র মোদির শৈশবের চায়ের দোকান সম্পর্কে জানতে চান সমাজকর্মী তথা আইনজীবী পবন পারেখ। সেই চিঠিতে তিনি জানতে চান, ভাদনগর স্টেশনের বাইরে প্রধানমন্ত্রীর বাবা দামোদরদাস মোদির যে চায়ের দোকান ছিল, সেই সম্পর্কে তথ্য জানানো হোক। কোন সালে ওই দোকানের লাইসেন্স মঞ্জুর করা হয়েছিল সেটাও জানতে চান ওই আইনজীবী। এই চিঠির উত্তরে পশ্চিম রেলের সেন্ট্রাল পাবলিক ইনফরমেশন আফিসার জানিয়ে দেন, পশ্চিম রেলের আহমেদাবাদ ডিভিশনের কাছে ওই দোকান সম্পর্কিত কোনও তথ্য বা রেকর্ড নেই। এর পরে ২০১৬ সালে তিনি প্রধানমন্ত্রীর দফতরের কাছেও তথ্য জানার অধিকার আইনে একই আবেদন করেন। কিন্তু সেই আবেদন খারিজ হয়ে যায়। ফলে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি তাঁর শৈশবে যে আদৌ বাবার চায়ের দোকানে কাজ করেছিলেন সেই তথ্যের কোনও রেকর্ড নেই।
ওয়াকিবহাল মহলের মতে, সেই সময় সাধারণত রেল স্টেশনে চা বা অন্য কোনও দোকানের কোনও রেকর্ড রাখা হতো না। তাই নরেন্দ্র মোদির পারিবারিক চায়ের দোকানেরও কোনও রেকর্ড নেই রেলের কাছে। কিন্তু সেই টিনের দেওয়াল দেওয়া অস্থায়ী দোকানটি আজও আছে ভাদনগর স্টেশনে। যে এখন সংরক্ষিত করা হয়েছে ভাদনগর স্টেশনের ১ নম্বর প্ল্যাটফর্মে। আজও বহু পর্যটক আসেন এই চায়ের দোকান দেখতে। প্রচুর মানুষ ছবি তোলেন, সেলফি তোলেন। ভাদনগরকে মডেল স্টেশন হিসেবে তৈরি করেছে পশ্চিম রেল।
Discussion about this post