বিশ শতকের গোড়া থেকে দ্রুত নিজেকে বদলে আরো অগ্রাসী হয়ে উঠল বাংলা ।ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের স্ফুলিঙ্গ দ্রুত পরিণত হলো অগ্নিশিখায়। ঠিক এই পটভূমিকায় কলকাতা ময়দানে মশাল জ্বালাল লাল হলুদ ইস্টবেঙ্গল। ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সুরেশ চন্দ্র চৌধুরী বাংলার ডব্লিউ জি গ্রেস সারদারঞ্জন রায়, দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাস, আশুতোষ মুখোপাধ্যায়, বরেন্দ্রদের স্নেহ ভালবাসায় ময়দানে শক্ত জমির উপর পা রেখেছিল এই ক্লাব ।প্রথম সভাপতি উপেন্দ্র কিশোর রায় চৌধুরীর দাদা সারদা রঞ্জন রায় । দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাশের একটি পারিবারিক ক্লাব ছিল। এখন যেখানে চিত্তরঞ্জন হাসপাতাল এখানেই ওর বাড়ি আর ক্লাব। চিত্তরঞ্জন ক্লাবের নাম রেখেছিলেন ইস্টবেঙ্গল। ফলে ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের নামকরণের পেছনে দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাসের অবদান রয়েছে।
১৯২০ সালের ক্লাব প্রতিষ্ঠার সময় থেকেই দেশবন্ধু অন্যতম পৃষ্ঠপোষক। কিন্তু ক্লাবের প্রতিষ্ঠা হলেও ব্রিটিশ রোষ থেকে ছাড় পায়নি ইস্টবেঙ্গল। চলার পথে পদে পদে কাঁটার বেড়া। প্রথম ডিভিশনে খেলার সুযোগ থেকে বঞ্চিত করা। এমনকি 1930 সালে দ্বিতীয় ডিভিশনে সব ম্যাচ জেতার পরেও অসহযোগ আন্দোলনের দোহাই দিয়ে চ্যাম্পিয়ন ঘোষণা না করা। প্রতিবাদে ক্লাবের কর্তা, সদস্য, সমর্থকরা মশাল নিয়ে অভিনব মিছিল করে ঘেরাও করেছিলেন ধর্মতলার আইএফএ অফিস। সেদিন সন্ধ্যায় ময়দানে জ্বলে উঠেছিল ব্রিটিশ বিরোধী মশাল। তার রং লাল আর সোনালী। তার শিখা যেন আন্দোলনের প্রতীক। ইস্টবেঙ্গলের প্রতীক হয়ে গেল সেই মশাল। ক্লাব প্রতিষ্ঠার দশ বছর পরে আন্দোলনের মধ্যে দিয়ে যার জন্ম। ১৯৪২এ মহাত্মা গান্ধীর ডাকে শুরু হলো ‘ভারত ছাড়ো আন্দোলন’ ।কলকাতার রাস্তাঘাটে আন্দোলনকারীদের ওপর শুরু হলো ব্রিটিশ পুলিশের অবর্ণনীয় অত্যাচার। সেই অত্যাচারের প্রতিবাদ জানাতে ময়দানকেই বেছে নিয়েছিল ইস্টবেঙ্গল। এমন স্পর্ধা তো লড়াকুদেরই মানায়।
Discussion about this post