সিবিআই এর হাতে আর জি কর দুর্নীতি মামলা সংক্রান্ত নথি তুলে দিল রাজ্যের গঠিত বিশেষ তদন্তকারী দল, সিট। সম্প্রতি আর জি কর হাসপাতালের আর্থিক দুর্নীতির মামলার তদন্তভার সিবিআইকে দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট।
হাইকোর্টের নির্দেশ ছিল, শনিবার সকাল সাড়ে ১০টার মধ্যে নথি হস্তান্তর করতে হবে। সেইমতো শনিবার সকালে নিজাম প্যালেসে সিবিআই অফিসে তদন্ত সংক্রান্ত নথিপত্র হস্তান্তর করল রাজ্যের গঠিত সিট। প্রায় তিন বছরের বেশি সময়কাল ধরে আর জি করে দুর্নীতি চলছে বলে অভিযোগ। অর্থাৎ প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষের সময় থেকে এই দুর্নীতির অভিযোগ উঠে আসছে। হাসপাতালের মেডিক্যাল বর্জ্য বাংলাদেশে পাচার করা, টেন্ডার নিয়ে দুর্নীতি, মর্গ থেকে দেহ লোপাট, হাসপাতালের খালি কোয়ার্টারে বাইরে থেকে ভাড়াটিয়া বসানো সহ ইত্যাদি ইত্যাদি অভিযোগ উঠে আসে। গত সোমবারই আইপিএস প্রণব সরকারের নেতৃত্বে রাজ্য সরকারের তরফে সিট গঠন করা হয়। এ বার আরজি করের আর্থিক দুর্নীতি সংক্রান্ত অভিযোগেরও তদন্ত করবে সিবিআই।
রাজ্য পুলিশের সিটের উপর আস্থা নেই, এই দাবিতে আরজি করের আর্থিক দুর্নীতির মামলার তদন্তভার ইডিকে দেওয়ার আর্জি জানানো হয়েছিল কলকাতা হাই কোর্টে। সেই মামলায় শুক্রবারই বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজের একক বেঞ্চ জানিয়েছিল, একাধিক সংস্থা তদন্ত করলে বিষয়টি আরও জটিল ও সময়সাপেক্ষ হতে পারে। তাই সিবিআইকেই আর্থিক দুর্নীতি মামলার তদন্তভার দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল উচ্চ আদালত।
আরজি করের মহিলা চিকিৎসককে ধর্ষণ ও খুনের মামলায় ইতিমধ্যেই হাই কোর্টের নির্দেশে তদন্ত করছে সিবিআই। শনিবারও সিজিও কমপ্লেক্সের সিবিআই দফতরে হাজিরা দিলেন আর জি কর হাসপাতালের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ। এই নিয়ে টানা ন’দিন হাজিরা দিলেন তিনি। কেন পর পর ন’দিন সন্দীপকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে, তাঁর কাছ থেকে কী কী তথ্য পাওয়া গিয়েছে, আর কী তথ্যের জন্য অপেক্ষা করছেন গোয়েন্দারা, এখনও তা স্পষ্ট নয়। এদিকে সন্দীপ প্রতি দিনই সিজিও কমপ্লেক্সে যাচ্ছেন ভাড়া করা গাড়িতে। সন্দীপ স্বাস্থ্য দফতরের গাড়ি ব্যবহার করেন। নিজের গাড়ি ব্যবহার করছেন না তিনি। গত বুধবার রাতে সিবিআই তাঁর গাড়িতে তল্লাশি চালিয়েছে। সন্দীপের চালককেও জিজ্ঞাসাবাদ করেছিল সিবিআই। আরজি করে মহিলা চিকিৎসককে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পর থেকে সন্দীপের অপসারণের দাবিতে আন্দোলন শুরু হয়। অভিযোগ, সন্দীপ অত্যন্ত প্রভাবশালী। তাই তদন্ত প্রক্রিয়াতেও তিনি প্রভাব খাটাতে পারেন। আন্দোলনের চাপে পড়ে সন্দীপ পদত্যাগ করেন। পরে তাঁকে অন্য হাসপাতালে ট্রান্সফার করা হলেও পদ থেকে সরানো হয়।
Discussion about this post