সম্প্রতি, সেনানিবাসে হওয়া ছাত্রনেতাদের সঙ্গে বৈঠক নিয়ে বাংলাদেশে মিথ্যে রটনা তৈরি হচ্ছে বলে উষ্মা প্রকাশ করেন সেনাপ্রধান ওয়াকার। অর্থাৎ, এনসিপি বা নতুন রাজনৈতিক দল জাতীয় নাগরিক পার্টির সঙ্গে দূরত্ব তৈরি হয়েছে সেনাপ্রধানের। এখন তাদের এই লড়াই সাধারণ জনগণের জন্য কতটা ভয়ঙ্কর হতে পারে, তারই আশঙ্কা করছেন রাজনৈতিক মহলের একাংশ। কারণ সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে গুজব ছড়ানো হচ্ছে, সরব বাংলাদেশের সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার উজ জামান।
বাংলাদেশের সেনানিবাসে পরপর কয়েকটি ম্যারাথন বৈঠক। যে বৈঠক কখনও শীর্ষ কর্তাদের সঙ্গে হয়েছে, আবার কখনও সেনাবাহিনীর সঙ্গে। এমনকি আলাদা করে রাষ্ট্রপতি শাহাবুদ্দিন চুপ্পুর সঙ্গেও আলোচনা হয়েছে ওয়াকারের। ফলে ক্রমেই রহস্য দানা বেঁধেছিল সেনানিবাসের বৈঠক নিয়ে। কিন্তু এই নিয়ে সেনাপ্রধান নিশ্চুপ। কোনও বিবৃতি দেননি। শুধুমাত্র ঢাকার রাস্তায় দেখা যাচ্ছে, সেনাবাহিনীকে সক্রিয়ভাবে। যা কার্যত লক্ষ্যনীয়। এর পাশাপাশি,বৈঠকে সেনাপ্রধান জানিয়েছিলেন, নানা গুজব ছড়ানো হচ্ছে। কিন্তু দেশে কোনও জরুরি অবস্থা জারি করা হয়নি। অনেকে নানা ভুল তথ্য, অপতথ্য নানা ভাবে ছড়াচ্ছে। এতে বিভ্রান্ত হওয়া যাবে না। পরিস্থিতি সামলাতে হবে ধৈর্যের সঙ্গে।
উল্লেখ্য, সেনাপ্রধানের বৈঠক প্রসঙ্গে সে দেশের নতুন রাজনৈতিক দল জাতীয় নাগরিক পার্টির, মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লার অভিযোগ , আওয়ামী লীগের স্বচ্ছ ভাবমূর্তির কয়েক জন নেতাকে বাংলাদেশের রাজনীতিতে পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করতে ‘চাপ দিয়েছে’ সেনা। দলের আর এক মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম যদিও সেনার তরফে চাপ দেওয়া হয়েছে, এই মন্তব্যকে মান্যতা দেয়নি । সারজিসের বক্তব্য, সেনার সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার চেষ্টা কি না, তা নিয়ে ইতিমধ্যেই ঢাকার রাজনৈতিক মহলে আলোচনা শুরু হয়েছে।
প্রসঙ্গত,সাম্প্রতিককালে সেনাবাহিনী অতি সক্রিয় ভূমিকায় দেখা যাচ্ছে। ৫ ই আগস্টের পর সেই ভাবে সেনাবাহিনীকে স্বাধীনভাবে কাজ করতে দেখা যায়নি বাংলাদেশের কোনও রাজপথে। গোপন সূত্রে খবর, অদৃশ্য কোন বেড়াজাল ছিল সেনাবাহিনীর চারিদিকে। যার ফলে পদ্মাপাড়ের অরাজক পরিস্থিতির মধ্যেও এগিয়ে আসেনি সেনা। হঠাৎ তাদের ভোলবদল, প্রশ্ন তৈরি করছে অনেক।
এখন একটা বিষয় স্পষ্ট হয়েছে, মধ্য আফ্রিকার সফর শেষ করে বাংলাদেশে ফিরতেই সেনাপ্রধানের হুশ ফিরেছে। তার বিরুদ্ধে চক্রান্ত, ফেসবুকে দীর্ঘ পোস্ট, প্রকাশ্যে রাস্তায় তার নামে কুরুচিকর মন্তব্য,
এই সব কিছুই যেন নাড়িয়ে দিয়েছে সেনাপ্রধানকে। তাই এইভাবে কঠোর হাতে পরিস্থিতির নিয়ন্ত্রণ করছেন তিনি। এখন দেখার, সেনাপ্রধানের প্রতিবাদ বোঝেন কিনা বিরোধীরা! নাকি কোনও ভয়ঙ্কর পদক্ষেপ করতে দেখা যায় সেনাবাহিনীতে, ঠিক যেমনটা কয়েক মাস আগে বার্তা দিয়েছিলেন সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার উজ জামান।
Discussion about this post