বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চল সাতটি রাজ্যকে সমুদ্রে প্রবেশের জন্য ঢাকার উপর নির্ভরশীল একটি “স্থলবেষ্টিত” অঞ্চল হিসেবে দাবি করার কয়েকদিন পর ভারত, বাংলাদেশকে দেওয়া একটি গুরুত্বপূর্ণ ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা প্রত্যাহার করার নির্দেশ দেয়। এই প্রতিক্রিয়া তীব্র কূটনৈতিক জল্পনার জন্ম দিয়েছে বলেই মনে করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, ২৯ জুন, ২০২০ অর্থাৎ আজ থেকে পাঁচ বছর আগের সার্কুলার বাতিল করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে ভারতের তরফে, যা তাৎক্ষণিকভাবে কার্যকর ও সংশোধিত হয়েছে। ইতিমধ্যে ভারতে প্রবেশ করা পণ্যগুলিকে নির্দেশ অনুসারে ভারতীয় ভূখণ্ড থেকে বেরিয়ে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া যেতে পারে বলে উল্লেখ করা হয়েছে নয়া সার্কুলারে।
কূটনীতিবিদরা বলছেন,বেইজিংয়ে বাংলাদেশ অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ইউনূসের মন্তব্যের পর ভূ-রাজনৈতিক প্রভাব অনিবার্য হয়ে ওঠে, যেখানে তিনি উত্তর-পূর্ব ভারতের জন্য বাংলাদেশকে “সমুদ্রের একমাত্র অভিভাবক” হিসেবে তুলে ধরেন এবং ভারতের উত্তরপূর্বাঞ্চল, সেভেন সিস্টার্স, একটি স্থলবেষ্টিত অঞ্চল। তাদের সমুদ্রের সাথে যোগাযোগ করার কোন উপায় নেই। এটি চীনা অর্থনীতির একটি সম্প্রসারণ হতে পারে,” অর্থাৎ চীনকে এই অঞ্চলে তার অর্থনৈতিক উপস্থিতি আরও বৃদ্ধি করার জন্য আমন্ত্রণ জানান মোহাম্মদ ইউনুস।
এরপরই ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর দ্রুত এই বক্তব্যের পাল্টা জবাব দিয়েছেন, ভারতের কৌশলগত সামুদ্রিক এবং আঞ্চলিক সংযোগের উপর জোর দেন বিদেশ মন্ত্রী। তিনি জানান, “বঙ্গোপসাগরে আমাদের দীর্ঘতম উপকূলরেখা রয়েছে। আমাদের উত্তর- পূর্বাঞ্চল টি বিমসটেক এর জন্য একটি সংযোগ কেন্দ্র হিসেবে গড়ে উঠছে।”
উভয় দেশই WTO সদস্য হওয়ায়, বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার তরফ থেকে আগেই সতর্ক করা হয়েছিল, যে ভারতের পদক্ষেপ WTO নিয়মের অধীনে ট্রানজিট অধিকার নিয়ে উদ্বেগ তৈরি করতে পারে, বিশেষ করে নেপাল এবং ভুটানের মতো অন্যান্য স্থলবেষ্টিত দেশগুলির জন্য।
সম্প্রতি, যুক্তরাষ্ট্র ভারত ও বাংলাদেশ উভয়ের উপর নতুন শুল্ক ঘোষণা করেছে।
বাণিজ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন যে এই বাতিলকরণ বাংলাদেশের রপ্তানি সরবরাহকে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করবে।
Discussion about this post