বিমসটেক শীর্ষ সম্মেলনে ফাঁকে বহু প্রতীক্ষিত মোদী ইউনূসের বৈঠক এর পর বাংলাদেশ ভারতের সহায়তার বদলে পেয়েছে বাণিজ্যিক চাপ। অর্থাৎ গুরুত্বপূর্ণ ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করেছে ভারত তবে সেখানেই শুধু থেমে থাকে নি ভারত সরকার। শিলিগুড়ি করিডোরে ঢেলে সাজানো হয়েছে প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম।
‘শিলিগুড়ি করিডর’ যেটি চিকেন নেক নামে পরিচিত। তবে সম্প্রতি এই চিকেন নেক নিয়ে বেশ উদ্বিগ্ন ভারত। এই করিডোরটি কোন ভাবেই যেন বিচ্ছিন্ন না হয়ে যায় সেই জন্যই ভারত সরকারের বিশেষ সামরিক ব্যবস্থা।
ভারতের পশ্চিমবঙ্গের শিলিগুড়ি জেলার চারপাশে অবস্থিত একটি বিস্তৃতভূমি এই চিকেনস নেক। এই ভূরাজনৈতিক এবং ভূ-অর্থনৈতিক করিডোরটিই মূলত উত্তর-পূর্ব ভারতের সাতটি রাজ্যকে ভারতের বাকি অংশের সঙ্গে সংযুক্ত করেছে।
সম্প্রতি চীন সফরে গিয়ে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় সাতটি রাজ্য বা ‘সেভেন সিস্টার্স’ নিয়ে বিস্ফোরক মন্তব্য করেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলকে স্থলবেষ্টিত এবং বাংলাদেশকে এই সমুদ্র অঞ্চলের অভিভাবক হিসেবে দাবি করেন। এরপরই চিকেনস নেক নিয়ে আরও সতর্ক হয় ভারত।
বাণিজ্যিক চাপের পর ভারতের তরফে রয়েছে আরও বড় কিছু হওয়ার ইঙ্গিত। শিলিগুড়ি করিডোর বা চিকেন নেক এর সংকীর্ণ জায়গায় ভারতীয় সেনাবাহিনীর সক্রিয়তা হঠাৎ করেই বাড়তে শুরু করেছে । শিলিগুড়ি করিডোর লাগোয়া অঞ্চলে ভারত এস৪০০ এয়ার ডিফেন্স সিস্টেমস মোতায়েন করেছে। পাশাপাশি রাখা হয়েছে আকাশ এয়ার ডিফেন্স মিশাইল। প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞদের দাবি, এই এলাকায় এই ধরণের অত্যাধুনিক এয়ার ডিফেন্স সিস্টেমস প্রতিস্থাপণ করার অর্থ হল চিনকে বার্তা দেওয়া। অর্থাৎ চীনের মাটিতে দাঁড়িয়ে মোঃ ইউনুসের সেভেন সিস্টার নিয়ে বিস্ফোরক মন্তব্যের কড়া প্রতিক্রিয়া ভারতের।
চিকেনস নেকের নিরাপত্তার বিষয়ে ভারতীয় সেনাবাহিনী জানিয়েছে, শিলিগুড়ি করিডোর তাদের সবচেয়ে শক্তিশালী প্রতিরক্ষা সংযোগ। উন্নত সামরিক প্রস্তুতির মাধ্যমে যেকোনো সম্ভাব্য হুমকি মোকাবিলা করতে তারা সদা প্রস্তুত। করিডোরের কাছে সুকনায় সদর দপ্তর অবস্থিত ত্রিশক্তি কর্পসের, যা এই অঞ্চলের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। যেটি রাফাল যুদ্ধবিমান, ব্রহ্মোস ক্ষেপণাস্ত্র এবং উন্নত বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাসহ অত্যাধুনিক অস্ত্রশস্ত্রের সম্ভারে সাজানো।
উল্লেখ ও স্পষ্টভাবে বোঝা যাচ্ছে ভারত এখান থেকে যথেষ্ট গুরুত্ব দিচ্ছে সেই কারণেই সেই অঞ্চলের সামরিক তৎপরতা বৃদ্ধি করেছে ভারতীয় সেনা। চিকেন নেক নিয়ে উদ্বেগ বাড়ার সাথে সাথে ভারতের সেনাবাহিনী প্রধান এক বক্তব্যে জানিয়েছেন, চিকেন নেকের নিরাপত্তার বিষয়ে ভারতীয় সেনাবাহিনী তার অবস্থান আরও জোরদার করে তুলবে। সেইসঙ্গে তুমি উঠে উল্লেখ করেছেন যে চিকেন নেক ভারতের একটি শক্তিশালী সামরিক অঞ্চল। যার ফলে যে কোন হুমকির বিরুদ্ধে তৎপরতার সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গ এবং উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সেনা দের মোতায়েন করা সম্ভব।
Discussion about this post