ভারত বাংলাদেশ সংঘাত যখন তুঙ্গে সেই আবহে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশেষজ্ঞরা বার্তা দিয়েছিলেন। ২০২৫ এর জানুয়ারি মাসে বড় কিছু একটা ঘটতে চলেছে। এবং বর্তমানে সেই জানুয়ারি মাস শুরুও হয়ে গিয়েছে। তাই কি, কেন বা কখন ঘটবে সেই কৌতূহল এখন তুঙ্গে সকলের মধ্যেই। এই আবহে বাংলাদেশের সেনাপ্রধান ভারত বাংলাদেশ সুসম্পর্ক বজায় রাখা নিয়ে সুপরিকল্পিত ভাবে ইউনুস সরকারের উল্টো অবস্থান নিলেন।আমরা জানি ২০ জানুয়ারি শপথ গ্রহণ করে মার্কিন মসনদে বসতে চলেছেন ট্রাম্প। এরপর যে বাংলাদেশের মৌলবাদ বা সরকারের নিপীড়ন নিয়ে তিনি সরব হবেন তা কারোরই অজানা নয়। এখন প্রশ্ন বাংলাদেশ কি তবে হাসিনার প্রত্যাবর্তন বা সেনা শাসনের পথে?
দেশ ছেড়েছেন বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তাঁর দেশ ছাড়ার পরেই খালেদা জিয়ার বিএনপির সরকারে আসার জল্পনা ছিল তুঙ্গে। কিন্তু অন্তর্বর্তী সরকার গড়েন মহম্মদ ইউনূস। ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের আমলে বিএনপি এবং কট্টরপন্থী দল জামাতের সংঘাত ক্রমশ বাড়ছে। এদিকে, বাংলাদেশে একটি নতুন রাজনৈতিক দল গঠনের প্রচেষ্টা চলছে বলে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার দল বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভি অভিযোগ করেছিলেন গত সপ্তাহে।
একদিকে পাকিস্তান, অন্যদিকে বাংলাদেশ। ভারতের দুই প্রান্তে দুই প্রতিবেশী দেশেই অরাজকতা ও যুদ্ধের আবহ। সব মহলকে স্তম্ভিত করে দিয়ে ২০২৪ সালের শেষ লগ্নে দীর্ঘদিনের বন্ধু আফগানিস্তান আচমকা ঝাঁপিয়ে পড়েছে পাকিস্তানের ওপর। যা দেখে তাজ্জব বিশ্বের তামাম মানুষ। অপরদিকে, বাংলাদেশের ঘাড়ে নিঃশ্বাস ফেলছে আরাকান আর্মি। মিয়ানমার-বাংলাদেশ সীমান্তের ২৭১ কিলোমিটার এলাকা এখন সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠীর দখলে। যে কোনও সময় আরাকান আর্মির যোদ্ধারা ঢুকে পড়তে পারে বাংলাদেশের চট্টগ্রামের কক্সবাজার, টেকনাফ বা সেন্ট মার্টিন দ্বীপে। যদিও বিভিন্ন মহলে কানাঘুঁষো শোনা যাচ্ছে, সেন্ট মার্টিনের কব্জা এখন আরাকান আর্মির হাতে। ফলে দুই প্রতিবেশী দেশের থড়হরিকম্প অবস্থায় জল মাপছে ভারত। এরকম এক কঠিন সময়ে আচমকা বাংলাদেশের সেনাপ্রধান ওয়াকার-উজ-জামান উল্টো সুর গেয়ে ভারতের হয়ে গলা ফাটালেন। সেই সঙ্গে তিনি বাংলাদেশের তদারকি সরকারকে ঘুরেফিরে বুঝিয়ে দিলেন, ভারত ছাড়া তাঁদের গতি নেই। ফলে যতই লম্ফঝম্ফ করুন, ভারতের সঙ্গে আপনাদের সুসম্পর্ক রাখতেই হবে।
এই রাজনৈতিক টানাপোড়েনের মাঝেই বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করতে ঢাকার গুলশানের বাসভবনে গিয়েছিলেন সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান।
গত বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৮টা নাগাদ সেনাপ্রধান ফিরোজায় খালেদা জিয়ার বাসভবনে পৌঁছান সেনাপ্রধান ওয়াকার উজ জামান। প্রায় ৪০ মিনিটের মতো সেখানে কথাবার্তা হয় তাদের । তাঁদের এই সাক্ষাতের কথা আগে থেকে টের পায়নি কেউই। সেখান থেকেই শুরু জল্পনা। ওই দিনই বিএনপি চেয়ারপারসনের মিডিয়া উইংয়ের সদস্য শায়রুল কবির খান জানান, ‘ রাত সাড়ে ৮টায় গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের বাসভবনে আসেন সেনাপ্রধান। তিনি দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যের খোঁজখবর নিতেই মূলত এসেছেন।
প্রসঙ্গত, উন্নত চিকিৎসার জন্য চলতি সপ্তাহে খালেদা জিয়ার যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়ার কথা রয়েছে। ৭৯ বছর বয়সি খালেদা জিয়া লিভার সিরোসিস, হৃদরোগ, ফুসফুস, আর্থ্রাইটিস, কিডনি, ডায়াবেটিস, চোখের সমস্যাসহ নানা রোগে ভুগছেন। অনেক আগেই উন্নত চিকিৎসার জন্য তাঁকে লন্ডনে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছে মেডিকেল বোর্ড। আগামী ৬ জানুয়ারি বেলা ১১টায় তিনি উন্নত চিকিৎসার জন্য লন্ডন যাবেন তিনি। এ সময় মেডিকেল বোর্ডের চিকিৎসক, নার্স ও ব্যক্তিগত সহকারীসহ মোট ১৫ জন তাঁর সঙ্গে যাবেন।
বিএনপি চেয়ারপারসনের মিডিয়া উইংয়ের সদস্য শায়রুল কবির খান আরও বলেন, ‘বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য মেজর জেনারেল ফজল এলাহি আকবর স্বাগতম জানিয়েছেন সেনাপ্রধানকে। বিএনপি চেয়ারপারসনের দ্রুত সুস্থতা কামনা করেছেন সেনাপ্রধান’। সেনাপ্রধানের সঙ্গে তাঁর সহধর্মিণীও ছিলেন বলে জানান শায়রুল কবির খান। তবে শুধু সেনাপ্রধানই নন, পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে গত ৬ আগস্ট মুক্তির পর ঢাকায় নিযুক্ত বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকরাসহ অনেকে ফিরোজায় গিয়ে খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন।
Discussion about this post