বাংলাদেশের সেনানিবাসে বিদ্রোহের খবর ইতিমধ্যেই প্রকাশ্যে এসেছে। বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যম এই বিষয়টিকে গোপন রাখার চেষ্টা করলেও ভারতীয় সংবাদ মাধ্যমগুলি এই বিষয়টিকে প্রকাশ্যে এনেছে। একদিকে লেফটেন্যান্ট জেনারেল পদমর্যাদার একজনের নেতৃত্বে এই ধরনের ঘটনাগুলি ঘটে চলেছে অন্যদিকে আর একজন রহস্য মানব সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল ইকবাল করিম ভূঁইয়া , সম্প্রতি তিনি ফ্রন্টলাইনে এলেন, তার ফেসবুক পোস্টের মাধ্যমে। জানা যাচ্ছে তিনি টানা 17 টি পোস্ট করেছেন সমাজমাধ্যমে। যেগুলিতে তার না পাওয়া হতাশা সবটাই ব্যক্ত হয়েছে। মূলত সংবিধান ছুড়ে ফেলার কথা এবং একটি বিপ্লবী সরকার স্থাপন না হওয়ার কথা ব্যক্ত করে তিনি দীর্ঘ এই ১৭ টি পোস্ট করেছেন। এবার প্রশ্ন জেনারেল ইকবাল করিম ভূঁইয়া তিনি কবে থেকে ফ্রন্টলাইনে আসা শুরু করলেন?
৩১ শে জুলাই ২০২৪ বাংলাদেশ যখন অস্থিতিশীল, কোটাবিরোধী আন্দোলন চলছে, তখনই তিনি সমাজমাধ্যমে ছাত্রদের নিয়ে সংহতি প্রকাশ করলেন। এরপর ৪ আগস্ট অবসরপ্রাপ্ত ৪৮ জন সেনা কর্তাকে নিয়ে বাবা ক্লাবে একটি সংবাদ সম্মেলন করলেন। আর এই সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে তিনি ফ্রন্টলাইনে এলেন। এরপর সেনাবাহিনীকে ছাউনিতে ফিরিয়ে নিতে বললেন তিনি। এবং সেই আন্দোলনের সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করলেন। এরপর ৫ই আগস্ট শেখ হাসিনার পতন। সেই সময় অনেকেই শুনেছিলেন প্রাক্তন সেনাকর্তা জেনারেল ইকবাল করিম পরিহার নেতৃত্বে অন্তবর্তী সরকার গঠন হবে কিন্তু তা হয়নি। কিংবা জেনারেল ইকবাল করিম ভূঁইয়া উপদেষ্টা পরিষদের একজন উপদেষ্টা অর্থাৎ প্রধান উপদেষ্টা হওয়ার আশা তৈরি হয়েছিল, সে কারণেই তিনি ওই সংবাদ সম্মেলন আয়োজন করেছিলেন। কিন্তু তিনি তা হতে পারেননি,তবে সেখানে উপস্থিত বাকি ৪৮ জন প্রাক্তন সেনা কর্তার মধ্যে বেশ কয়েকজন বর্তমাণে উপদেষ্টা হয়েছেন। অর্থাৎ তিনি যে সম্মেলনের আয়োজন করেচিলেন সেই আয়োজনের পরও নিজের স্বপ্ন তো ভঙ্গ হলই উপরন্ত বাকিরা সেখান লাভবান হলেন।
আর সেই হতাশা থেকেই এবার তার সমাজ মাধ্যমের পোস্ট। সেনানিবাসে বর্তমানে চাকুরীরত যে সমস্ত সেনা আধিকারিকরা রয়েছেন তাদের মধ্যে কি সমন্বয় ছিল যে সেনানিবাসে একটি বিদ্রোহ দেখা দিতে পারে, সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার উজ জামানকে সরিয়ে দিতে হবে। এগুলি কি তবে সব ব্যর্থ হয়ে গেল? আর এই ব্যর্থ হওয়ার পরিপ্রেক্ষিতেই জেনারেল ইকবাল কবির ভূঁইয়ার ফেসবুক পোস্ট ইঙ্গিত দিচ্ছে যেভাবে ঘটনাগুলি ঘটার কথা ছিল সেভাবে ঘটেনি। অর্থাৎ এখান থেকে এই বিষয়টি স্পষ্ট যে সেনানিবাসে অবসরপ্রাপ্ত সেনাকর্তাদের মধ্যে যে টানটান উত্তেজনার পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছিল তা কিছুটা প্রশমিত হয়েছে।
প্রসঙ্গত বাংলাদেশের নতুন অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের পরও অবসরপ্রাপ্ত সেনাকর্তাদের একটি র্যালির খবর প্রকাশ্যে এসেছিল। যে রেলি বা মিছিলের মধ্য দিয়েই অবসরপ্রাপ্ত সেনাকর্তারা চারদিনে কলকাতা দখলের মত হুমকিও দিয়েছিলেন। বলা যায় তারা জেনারেল ইকবাল করিম ভূইয়ার নেতৃত্বেরই একটা অংশ। তারা মনে করেছিলেন বাংলাদেশের মানসিকতা এখন ভারত বিদ্বেষী মানসিকতা। আর এটাকে কাজে লাগিয়ে কিছু করা যায় কিনা সেটাই তারা ভেবেছিলেন।
তবে সব কিছু মিলিয়ে বর্তমানে সেনাবাহিনী অনেকটাই শান্ত।
Discussion about this post