মায়ানমারের বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মি কিছুদিন আগেই মায়ানমারে মংডু এলাকা দখল করেছে। এর ফলে বাংলাদেশে নতুন করে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ এবং আগে আসা রোহিঙ্গাদের পুনর্বাসন প্রক্রিয়া আরও দীর্ঘায়িত হওয়ার আশঙ্কা জোড়ালো হয়েছে।
এবার সম্প্রতি মায়ানমারে আরও একটি এলাকা চলে গেল আরাকান আর্মির দখলে। ফলে রোহিঙ্গা অধ্যুষিত এলাকা দখল হওয়ায় বাংলাদেশে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের সমস্যা বাড়তে পারে। জানা গিয়েছে, মায়ানমারের সিত্তের একটি অঞ্চলের দখল নিল আরাকান আর্মি। শহরটি দখল নেওয়ার পরে রোহিঙ্গা সলিডারিটি অর্গানাইজেশন এবং আরসাকে আত্মসমর্পণ করতে বলল আরাকান আর্মি। এর আগে মংডু, বুথিডং, পালেতাওয়ার শহর-সহ মায়ানমারের রাখাইন প্রদেশের ৮০ শতাংশের বেশি এলাকা দখল করে বিদ্রোহী সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান আর্মি।
উল্লেখ্য, সিত্তর শহরটি দখলের এই ঘটনার ফলে বাংলাদেশের আরও প্রায় ৩৭ হাজার রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের সম্ভাবনা থাকছে। এতে বাংলাদেশ -মায়ানমার সীমান্তের ২৭০ কিলোমিটারের পুরোটাই আরাকান আর্মির নিয়ন্ত্রণে।
মায়ানমারের গণমাধ্যম ইরাবতির প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, মংডুর দখল করা সর্বশেষ ঘাঁটি থেকে কুখ্যাত সেনা কর্মকর্তা ব্রিডেগিয়ার জেনারেল থুরিন তুনসহ জুন্টা বাহিনীর কয়েকশো সদস্যকে গ্রেফতার করেছে আরাকান আর্মি।
মায়ানমারের ক্ষমতাসীন জুন্টা সরকার আগেই জানিয়ে দিয়েছিল তারা কোনও রোহিঙ্গা শরণার্থীকে ফেরত নেবে না৷ সেখানে বিদ্রোহী এবং বৌদ্ধ ধর্মাবিলম্বী আরাকানরা তো রোহিঙ্গাদের স্বীকৃতিই দেয় না৷ এরপর মায়ানমার সেনার কাছ থেকে বাংলাদেশ সীমান্ত লাগোয়া মংডু শহরেরও দখল নিয়ে নেয় আরাকান আর্মি৷ এর ফলে বাংলাদেশ সীমান্ত বরাবর ২৭১ কিলোমিটার এলাকার পুরোটাই তাদের নিয়ন্ত্রণে৷
এখন প্রশ্ন আরাকান আর্মির অতিসক্রিয়তার ফলে বাংলাদেশ কি প্রতি মুহূর্তে বিপাকে পড়ছে?
মংডু দখলের পরে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসের রোহিঙ্গা সংক্রান্ত বিশেষ দূত খলিলুর রহমান জানিয়েছিলেন, পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে সীমান্ত এলাকার নিয়ন্ত্রক আরাকান আর্মির সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা চালাচ্ছে ঢাকা। বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার ইতিমধ্যে উদ্যোগী হচ্ছে, যাতে অন্তত সীমান্ত ব্যবস্থাপনার ব্যাপারে আরাকান আর্মির সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করা যায়। তবে গভীরভাবে বিবেচনা না করে এই বিষয়ে নির্ণায়ক কোনও পদক্ষেপ হবে না বলে জানান তিনি। বিদ্রোহীরা সীমান্ত দখলের পরে বাংলাদেশ সরকার টেকনাফ থেকে সেন্ট মার্টিন দ্বীপে ফেরি চলাচল বন্ধ রেখেছে। ফলে সার্বিক অসুবিধায় পড়েছেন টেকনাফের স্থানীয়রা।
প্রসঙ্গত, মায়ানমারের বর্তমান পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ, মায়ানমার, ভারত, চীন, লাওস ও কম্বোডিয়া-এই ছয় দেশের বিদেশমন্ত্রীদের নিয়ে বৈঠকের আয়োজন হয়েছে। সূত্রের খবর, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের বিদেশ উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন ওই বৈঠকে যোগ দিয়েছেন।
Discussion about this post