বাংলাদেশের অভ্যন্তরে প্রবেশ করেছে বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মি। এই খবর সামনে আসতেই উদ্বেগ তৈরি হয়েছে বাংলাদেশে। জলকেলি উৎসবে মেতে ওঠার ঘটনায় নানারকম অভিযোগ উঠে আসছে। একদিকে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ বা বিজিবি র উপস্থিতিতে আরাকান আর্মির যে উৎসব পালন করল তা কিভাবে সম্ভব হল, তা ঘিরে ক্ষোভ তৈরি হচ্ছে। অন্যদিকে টেকনাফ ও কক্সবাজারে রোহিঙ্গারা নিজেদের অস্তিত্বহীনতায় ভুগছে, হয়তো তারা ঘোষণা দিয়ে এবার মায়ানমারের জুনটা সরকারের পক্ষে গিয়ে দাঁড়াতে পারে। এই সম্ভাবনার পাশাপাশি আর একটি প্রশ্ন উঠে আসছে এবার কি তবে আরাকান আর্মিকে সহায়তায় মার্কিন প্রস্তাবে বাংলাদেশ কি অভ্যন্তরীণ যুদ্ধে সামিল হয়েছে? মায়ানমার বাংলাদেশ সীমান্ত নিয়ে চিন্তা তীব্র হচ্ছে। সূত্রের খবর, গত ১৬ ও ১৭ এপ্রিল থানচি উপজেলার রেমাক্রী বাজারে মারমা জনগোষ্ঠীর সাংগ্রাই উৎসবের আয়োজন করা হয়। সেখানেই মায়ানমার সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মি ও তাদের রাজনৈতিক শাখা ইউ এল এর তত্ত্বাবধানে একটি জলকেলি উৎসবের আয়োজন করা হয়। আরাকানের সদস্যরা পরিচিত উর্দি এবং অস্ত্র সংযোগেই অংশ নেন এই উৎসবে।
এই খবরটি বাংলাদেশের মানুষের জন্য অত্যন্ত ভয়াবহের। জামাত ই ইসলামি এই খবরটি দিতেই বাংলাদশের মানুষের মনে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষোভের সঞ্চার ঘটতে থাকে। বাংলাদেশে ঢুকে সেখানকার জনগণকে টেনে নিয়ে সর্বভৌমত্বের আঘাত হানলো বলে মনে করা হচ্ছে। আরাকান গোষ্ঠী রাখাইন অঞ্চলকে তাদের আওতায় করে ফেলে পার্বত্য চট্টগ্রামের দিকে তারা হাত বাড়াচ্ছে, সেটা এখন স্পষ্ট হচ্ছে। তবে এই খবর কিছু মাস আগে প্রকাশ করা হলে, অনেকে হাস্যকর হিসাবে ধরেছিল। কিন্তু এই উৎসবে যোগ দান শুধুমাত্র আনন্দে মেতে ওঠা না, এর পিছনে আরও বড় কারণ রয়েছে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। এই উৎসবে শুধুমাত্র তারাই নয়, সেখানকার স্থানীয় মানুষদের নিয়ে ফেলেছে। এমনকি তারা নাচতে নাচতে, আনন্দ করতে করতে বলছে, তারা স্বাধীন। বাংলাদেশ থেকে মুক্তি পেয়ে গেছে। এটা অনেকেই বলছেন, সেনাবাহিনীর জন্য অত্যন্ত ভয়ঙ্কর খবর। এর পাশাপাশি পার্বত্য চট্টগ্রামে যে রোহিঙ্গারা রয়েছে তাদের জন্যও ভয়ঙ্কর খবর। কারণ রোহিঙ্গাদের সঙ্গে আরাকান আর্মীদের একটি দ্বন্দ্ব রয়েছে।
অনেকে বলছেন, কিছুদিন আগে চীনে গিয়ে মোহাম্মদ ইউনূস বলেছিলেন, সমুদ্রের অভিভাবক। ভারতের সাত রাজ্যকে ল্যান্ডলক বলে উল্লেখ করেছিলেন তিনি। কিন্তু এখন পার্বত্য চট্টগ্রামকে বাঁচাতেই চ্যালেঞ্জ মোহাম্মদ ইউনূসের।
এমনকি আরও একটি ভয়ঙ্কর ছবি সামনে এসেছে, সেটা হল বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের উপস্থিতি। তারা নাকি কোনও অস্ত্র ছাড়াই দাঁড়িয়ে ছিল। বান্দরবনের আরও ১০ কিলোমিটারের ভিতরে প্রবেশ করে ফেলেছে আরাকান আর্মি। চট্টগ্রামের কাছে একবারে পৌঁছে গিয়েছে। কাজেই কয়েকদিনের মধ্যে যে কিছু ঘটতে চলেছে, সেটা বলাই বাহুল্য। আসলে তাদের টার্গেট ফেনী নদীর উপর দুটি ব্রিজ। যেগুলি ভেঙে ফেললেই বাংলাদেশের ভূখণ্ডের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়বে পার্বত্য চট্টগ্রামের। আর সেটারই ফন্দি আটছে বিদ্রোহী গোষ্ঠী। তবে এটা জানেন বাংলাদেশের সেনাপ্রধানও। কিন্তু তারপরও আর্মিদের ভূমিকা তেমন লক্ষ্য করা যাচ্ছে না। যা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হচ্ছে বিভিন্ন মহলে। এখন দেখার, শেষমেশ করে আরাকান আর্মি এবং এর প্রেক্ষিতে বাংলাদেশের কি ভূমিকা থাকে।
Discussion about this post