গত বছর বিক্ষুব্ধ ছাত্র জনতার আন্দোলনের মুখে পড়ে বাংলাদেশ ছেড়ে পালিয়ে আসতে হয় শেখ হাসিনাকে। গঠিত হয় মোহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার। রাজনৈতিক পট পরিবর্তন হলো বাংলাদেশে।
তবে এখন সবচেয়ে প্রাসঙ্গিক বিষয়, হাসিনা পরবর্তী সময়ে দেশের নাগরিক কি পেলেন সেটা নিয়েই এখন ক্ষুব্ধ অধিকাংশ মানুষ। কারণ, এই মুহূর্তে বাংলাদেশে প্রতিনিয়ত খুন, মারধর, চুরি, ডাকাতি, নারী ও শিশু নিগ্রহ এবং ধর্ষণের ঘটনা ঘটে চলেছে। যা থামানোর কোনও লক্ষণ দেখাচ্ছে না মুহাম্মদ ইউনূসের তদারকি সরকার। ফলে তাঁরা এখন সেনা শাসন চাইছেন। তবে,২৮ মার্চ গভীর রাতেই কি সেনা, দেশের শাসন হাতে তুলে নেওয়ার পরিকল্পনা করলেন?
কিন্তু সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার উজ জামান সেনাশাসনের পথে যেতে নারাজ। তিনি শান্তি স্থাপন করতে চান। কিন্তু প্রশ্ন উঠছে, যে দেশের সরকার ও উপদেষ্টারা এখন মধ্যযুগীয় ইসলামিক শাসনব্যবস্থার দিকে যেতে চাইছে, যে দেশে জঙ্গিদের মুক্তাঞ্চল গড়ে উঠেছে। সেই দেশে শান্তি প্রতিষ্ঠা করা কতটা কঠিন, সেটা রীতিমতো টের পাচ্ছেন সেনাপ্রধান। তিনি এখন নিজেই স্বীকার করছেন, যে কোনও সময় বাংলাদেশে বড় ধরণের নাশকতামূলক হামলা হতে পারে। আর এই খবর এসেছে বিভিন্ন গোয়েন্দা সূত্র থেকে। কিন্তু সেনাপ্রধান কেন নিজের হাতে ক্ষমতা তুলে নিচ্ছেন না অথবা রাষ্ট্রপতি শাসন জারি করছেন না সেটাই এখন মূল ভাবার বিষয়। তবে একটা বিষয় পরিস্কার সেনাপ্রধান ওয়াকার উজ জামান এই পরিস্থিতিতে একটি টানাপোড়েনে পড়ে গিয়েছেন। কারণ তার উপরে সৃষ্টি হয়েছে প্রবল চাপ, একদিকে ভারত অন্যদিকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি দুদিনের সফরকালে লেফটেন্যান্ট জেনারেল জোয়েল পি ভয়েল অতিরিক্ত বাংলাদেশের সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার উজ জামানসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গেও বৈঠক করেন। বৈঠকে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনীর দীর্ঘদিনের দৃঢ়সম্পর্ক অব্যাহত রাখার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন। সেই সঙ্গে তিনি পারস্পরিক নিরাপত্তা স্বার্থ ও চলমান সহযোগিতার বিষয়গুলোও তুলে ধরেন।
এখন প্রশ্ন হল আচমকা কেন এই মার্কিন সেনাকর্তা বাংলাদেশ সফরে এলেন? বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর তরফে জারি করা বিবৃতিতে যদিও বলা হয়েছে আরাকান আর্মি সংক্রান্ত কিছু বিষয়ে আলোচনা এবং বাংলাদেশের সেনাবাহিনীর কর্মদক্ষতা বাড়ানো নিয়েই আলোচনা হয়েছে। কিন্তু এটাই কি সত্যি? খবর পাওয়া যাচ্ছে, মূলত ইউনুসকে হটানোর নির্দেশ দিয়ে গেলেন ওই মার্কিন সেনা কর্তা। অপরদিকে ওয়াকার উজ জামানের কাছে ভারতেরও প্রবল চাপ রয়েছে, কারণ যে ভারতীয় গোয়েন্দাদের রিপোর্টের ভিত্তিতে নিজের পদ রক্ষা করতে পেরেছিলেন সেনাপ্রধান। আর ভারতও চায় দ্রুত ইউনুসকে সরিয়ে সেখানে নির্বাচনের মাধ্যমে একটি স্থায়ী সরকার আসুক। ফলে এখন দেখার এই উভয় চাপ সামলানোর ক্ষমতা ও দেশের ক্ষমতা নিজের হাতের মুঠোয় নিয়ে আসার সাহস কতটা রয়েছে সেদেশের সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার উজ জামান এর।
Discussion about this post