শুক্রবার জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে প্রধান উপদেষ্টা মহম্মদ ইউনূস জানান ২০২৬ এর এপ্রিলের প্রথমার্ধে দেশে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এরপর থেকে প্রধান উপদেষ্টার এর সিদ্ধান্তে আপত্তি জানায় বিএনপি পাশাপাশি সেনাপ্রধানের দাবি কেও পিছনের ফেলে মোহাম্মদ ইউনুসের নির্বাচনের এই নয়া সিদ্ধান্ত। এবার প্রধান উপদেষ্টা সংবিধান সংস্কারের পদ্ধতি নিয়ে বিভ্রান্তিকর ও অসম্পূর্ণ বক্তব্য দিয়েছেন বলে মন্তব্য করলো রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন।
মঙ্গলবার রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, প্রধান উপদেষ্টা সংবিধান সংস্কারের যে পদ্ধতির কথা বলেছেন, তা জুলাই অভ্যুত্থানের শহীদদের আকাঙ্ক্ষার পরিপন্থী। গত ৬ জুন ঈদের একদিন আগেই জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা। কিন্তু সেই ভাষণে সংবিধান সংস্কারের পদ্ধতি সম্পর্কে জাতিকে সঠিক পথিনির্দেশনা দিতে ব্যর্থ প্রধান উপদেষ্টা, দাবি করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের আরও দাবি , প্রধান উপদেষ্টা সংসদের প্রথম অধিবেশনে সংবিধান সংস্কারের জন্য বিল উত্থাপন করতে সে দেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলগুলোর কাছ থেকে অঙ্গীকার আদায়ের পরামর্শ দিয়েছেন জনগণকে। সেটিও বিভ্রান্তিকর এবং জুলাই অভ্যুত্থানের শহীদদের আকাঙ্ক্ষার পরিপন্থী হয়ে দাঁড়াচ্ছে।
পাশাপাশি, জনগণের প্রত্যাশা পূরণ করতে প্রথমে সংবিধানের সংস্কার পরবর্তীতে ওই সংবিধান সংস্কারের মাধ্যমে দেশে সরকার পরিচালনার জন্য জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজন করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। কিন্তু সংবিধান সংশোধন এবং সংবিধান সংস্কারের মধ্যে পার্থক্য বুঝে উঠতে পারছেন না প্রধান উপদেষ্টা ।
অর্থাৎ, নির্বাচনসংক্রান্ত সংশয় দূর করতে ১৯৭০ সালের মতো একসঙ্গে সংবিধান সংস্কার সভা এবং জাতীয় সংসদ নির্বাচন করার দাবি জানিয়েছে রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন।
প্রধান উপদেষ্টা নির্বাচনের যে সময় ঘোষণা করেছেন, তাতে নির্বাচন নিয়ে যে ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছিল তা অনেকাংশে দূর হয়েছে,রাখাইনে সহায়তা পাঠাতে করিডর না দেওয়ার প্রসঙ্গে অন্তর্বর্তী সরকারের অবস্থান স্পষ্ট করে জানানোর ফলে সাধারণ মানুষের মনে কিছুটা স্বস্তি দেখা দিয়েছে বলে মন্তব্য করেছে রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন।
প্রসঙ্গত, সেনাপ্রধানের পরামর্শ কিংবা বিএনপিসহ অধিকাংশ দলগুলোর দাবিকে উপেক্ষা করে সরকার জামায়াতে ইসলামী ও এনসিপির পরামর্শকেই নির্বাচনের জন্য গ্রহণ করেছে বলেই অনেকে মনে করছেন। পাশাপাশি কেউ মনে করা হচ্ছে নির্বাচন ডিসেম্বরের মধ্যে সম্ভব না হওয়ার পিছনে সুনির্দিষ্ট কোন কারণ দর্শাতে ব্যর্থ হয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা। এছাড়া রমজান, পাবলিক পরীক্ষা ও আবহাওয়া দুর্গম পরিস্থিতি বিবেচনায় ডিসেম্বরের মধ্যেই নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবি পুনর্ব্যক্ত করে সভায় জানানো, নির্দলীয়-নিরপেক্ষ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দাবি থাকলেও এটি এখন একটি বিশেষ রাজনৈতিক গোষ্ঠীর দ্বারা প্রভাবিত হয়ে পড়েছে। ফলে প্রধান উপদেষ্টার নির্বাচনের এই নয়া সিদ্ধান্ত ঘিরে বিএনপির ক্ষোভকে আরও প্রকট করল অন্তর্বর্তী সরকার।
Discussion about this post