বাংলাদেশের রাজনীতিতে বিভিন্ন সম্ভাবনা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। সম্প্রতি চার দিনের বিদেশ সফর সারলেন বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা মোহাম্মদ ইউনুস। এই সফরের আগে দেখা গিয়েছিল ব্রিটেনের লেবার পার্টির রাজনীতিবিদ টিউলিপ সিদ্দিক সাক্ষাৎকারের আবেদন জানিয়ে একটি চিঠি পাঠিয়েছিলেন মোহাম্মদ ইউনুসকে। কিন্তু প্রশ্ন উঠছে এই চিঠির সিদ্ধান্ত কি একান্তই টিউলিপের ব্যক্তিগত নাকি শেখ হাসিনার পরামর্শেই এই চিঠি ছিল টিউলিপের? মোহাম্মদ চাপে ফেলতে কি নতুন কোন পরিকল্পনা ছিল স্বয়ং শেখ হাসিনা ও বোন শেখ রেহানার কন্যা টিউলিপ সিদ্দিক এর?
মোঃ ইউনুস অন্তর্বর্তী সরকারের ক্ষমতায় আসার পর থেকে এই বারে বারে দাবি তুলে আসছেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তিনি বাংলাদেশে কোটি কোটি টাকা লুট করে বিদেশে পাচার করে বাংলাদেশের অর্থনীতির পরিস্থিতি একেবারে তলানিতে নিয়ে গিয়েছে লাগাতার এই ধরনের অভিযোগ করা হয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার তরফে। এমনকি বাংলাদেশের দুর্নীতি তেমন কমিশনে টিউলিপ সিদ্দিকের নামেও একাধিক অভিযোগ করা হয়েছে। এবার টিউলিপ সরাসরি প্রধান উপদেষ্টা কে চ্যালেঞ্জ করলেন। অর্থাৎ টিউলিপের দাবি তার বিরুদ্ধে যে সকল অভিযোগ রয়েছে তাতে বাংলাদেশের দুদক যে তদন্ত চালাচ্ছে সেগুলির কোনটাতেই বাস্তবতা নেই পুরোটাই ফ্যান্টাসি। এই দাবির পরিপ্রেক্ষিতে রাজনৈতিক ক্ষেত্রে সকল মনে করছেন মোহাম্মদ ইউনুস যদি প্রকৃত গণতান্ত্রিক হতেন তবে এই বৈঠকটি তিনি করতেন, অর্থাৎ এই বৈঠক এড়িয়ে যাওয়ার ফলে এটাই প্রমাণিত হচ্ছে টিউলিপের বিরুদ্ধে যে সমস্ত অভিযোগে তদন্ত চলছে সেগুলো সবটাই ভিত্তিহীন।
আবার টিউলিপস থেকে এই চিঠি পাঠানোর সময়টিকে ঘিরেও নানা রকম জল্পনা তৈরি হয়েছে রাজনৈতিক মহলে অনেকেই মনে করছেন ঠিক যখন এই উপলক্ষে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা মোহাম্মদ ইউনুসের মধ্যে শুভেচ্ছা বিনিময় হল এবং সেই শুভেচ্ছা বার্তা সমাজ মাধ্যমে পোস্ট করা হল, তাতে অনেকেই মনে করেছিল ভারত বাংলাদেশের সম্পর্ক হয়তো কিছুটা উন্নত হতে চলেছে। কিন্তু মুহাম্মদ ইউনুসের শাসনের এই দশ মাসে দেখা গিয়েছে যে ইউনুসের বিভিন্ন কার্যকলাপে ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্কের ভয়ংকর অবনতি ঘটেছে। নির্বাচন নিয়ে যখন বাংলাদেশে বিভিন্ন মতবিরো সৃষ্টি হতে দেখা যায়। সে দেশে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করা হয় তখন ভারত সরকার স্পষ্ট জানায়, বাংলাদেশে অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচন করাতে হবে। তবে ভারতের এই মন্তব্যের পর অনেকেই বলেছিলেন ২০২৪ এর নির্বাচনের সময় ভারত অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচন নিয়ে কোন কথা কেন বলেনি। তার প্রেক্ষিতে ই বিশ্লেষ চক্র বলছেন ২০২৪ এ বাংলাদেশি যে নির্বাচন হয়েছিল তাতে বিএনপি কে কেউ নিষিদ্ধ করেনি বা তাদের বলা হয় নির্বাচনে অংশগ্রহণ তারা করতে পারবেনা। বিএনপি নানাবিধ অভিযোগ তুলে নির্বাচন থেকে বিরত থেকেছে। আর আওয়ামী লীগকে রীতিমতো নিষিদ্ধ করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। ফলে বাংলাদেশ অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচন করাতে হবে সেই চাপ রয়েছে ভারত সহ পশ্চিমা দেশগুলির তরফে।
আর এইসব ঘটনার পরেই বর্তমানে মোহাম্মদ শেখ হাসিনার সম্পর্ক ভয়ংকর তিক্ততার দিকে এগিয়েছে। মোহাম্মদ ইউনুসকে যেমন স্বৈরাচার দুর্নীতিবাজ মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী সুদখোর জঙ্গিনেতা বিভিন্ন আখ্যা দিয়েছেন শেখ হাসিনা তেমনই হাসিনাকে ইউনুসের সহযোগীরা ঘুম ও লুটপাট এর জননী আখ্যা দিয়ে নির্বাচনের নামে প্রহসনকরা, আওয়ামী লীগের শাসনকালে গোটা দেশের সম্পদ লুটপাট চালিয়ে দেশকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দেওয়া হয়েছে বলে নানাবিধ অভিযোগ করা হয়েছে। আর এখন অনেকে মনে করছেন সরকারের তরফে আওয়ামী লীগকে বাংলাদেশে নিষিদ্ধ করে কোন লাভ নেই। আওয়ামী লীগের নেতৃত্বরা দলকে পুনরুজ্জীবিত করছে পুনর্গঠন করছে। আর অন্যদিকে সাধারণ মানুষ তারা বর্তমান বাংলাদেশের পরিস্থিতি এবং অচেনা সরকারের আমলে পরিস্থিতি নিয়ে যথেষ্ট অবগত। তাই স্বাভাবিকভাবে সাধারণ জনগণের সমর্থনও থাকছে আওয়ামী লীগের পক্ষে। অর্থাৎ এখন দেশের নাগরিক চাইছেে বাংলাদেশের একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন হক যেখানে অংশগ্রহণ করবে আওয়ামী লীগ। তবে শেখ হাসিনার দেশে ফেরার যে জল্পনা সেটা এখনো পর্যন্ত ধোয়াশাতেই রয়ে গেছে বলে মনে করা হচ্ছে। কিন্তু এখন আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতৃত্বে এবং মুহাম্মদ ইউনুসের অন্তর্ভুক্তি সরকারের নেতৃত্বদের মধ্যে কোনরকম কি অভ্যন্তরীণ কোন কথোপকথন শুরু হচ্ছে? তারা কি নতুন কোন কথোপকথনের ভিত্তি প্রস্তর সামনে আনতে চলেছে? কারণ টিউলিপ সিদ্দিক এর সাক্ষাৎকারের আবেদন জানিয়ে মোহাম্মদ ইউনুসকে চিঠি, এই চিঠি রাজনৈতিক তাৎপর্য বহন করে বলেই মনে করা হচ্ছে।
Discussion about this post