বাংলাদেশের সনাতন জাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র তথা চট্টগ্রামের পুণ্ডরীক ধামের অধ্যক্ষ চিন্ময় কৃষ্ণ দাস-সহ ১৯ জনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা দায়ের হয়েছে। যা নিয়ে নতুন করে উত্তাল হয়ে উঠছে বাংলাদেশ। হিন্দু ধর্মগুরুর বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া এই মামলা প্রত্যাহার করে নিতে হবে, এই দাবিতে গোটা বাংলাদেশ জুড়েই হিন্দুদের রাস্তা দখলের ডাক দেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশের একাধিক সংগঠন হিন্দু সমাজকে পথে নামার আহ্বান জানিয়েছে।
সূত্রের খবর, গত শুক্রবার চট্টগ্রামের লালদিঘি ময়দানে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের একটি সভার শেষে আশপাশে টাঙানো বাংলাদেশের জাতীয় পতাকার অমর্যাদা করা হয়েছে বলে অভিযোগ ওঠে। অভিযোগ, সেই পতাকাগুলি বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের সময় ছাত্রদের লাগানো। সেই পতাকাই ছেঁড়া হয়েছে। লালদিঘির সেই সভার মূল বক্তা ছিলেন চট্টগ্রামে ইসকনের পুণ্ডরীক ধামের অধ্যক্ষ চিন্ময় কৃষ্ণ দাস। হিন্দুদের সেই সভা থেকে আট দফা দাবি পেশ করা হয়। এবং দাবি না মিটলে ঢাকা পর্যন্ত লং মার্চের হুঁশিয়ারিও দেওয়া হয়েছিল। এরপরই জাতীয় পতাকার অমর্যাদার অভিযোগ ওঠে।
বাংলাদেশের হিন্দু সংগঠনগুলির দাবি, হিন্দুদের উপর নির্যাতন, হামলার ঘটনায় এই প্রথমবার সরাসরি আন্দোলনের রাস্তায় দেখা গিয়েছিল সাধু-সন্তদের। গেরুয়া বসনধারী সন্নাসীরাও লালদিঘির সভায় হাজির হয়েছিলেন। এছাড়া ওই সভায় ভিড় হয়েছিল নজরকাড়া। সভার ভিড় দেখে অনেকেই বিস্মত হন। উদ্যোক্তারাও স্বীকার করে নিয়েছেন, এত মানুষের জমায়েত তাঁদের প্রত্যাশার অতীত ছিল। জানা যাচ্ছে ওই সভায় এত মানুষের জমায়েত হয়েছিল, যে বন্দরনগরী চট্টগ্রামের বহু রাস্তা দীর্ধক্ষণ অবরুন্ধ হয়ে গিয়েছিল। হিন্দু সংগঠনগুলির দাবি, বাংলাদেশের হিন্দুদের প্রতিবাদ সভায় এত ভিড় দেখেই আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন প্রশাসনের একাংশ। পাশাপাশি উগ্র মৌলবাদী দলগুলিও অপপ্রচার শুরু করে দেয়। এরপরই সেই সভায় প্রধান বক্তা ইসকনের মহারাজ চিন্ময় কৃষ্ণ-সহ ১৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়েছে। এটাকে চক্রান্ত হিসেবেই দেখছেন হিন্দু সংগঠনগুলির নেতৃত্ব। তাঁরা এককাট্টা হয়ে আন্দোলনের রাস্তায় নামবেন বলে জানিয়ে দিয়েছেন। আগামী সোমবারের মধ্যে দেশদ্রোহিতার মামলা প্রত্যাহার করা না হলে তাঁরা বড় কর্মসূচির ডাক দেবেন বলেও হুঁশিয়ারি দিয়ে রেখেছেন তাঁরা।
অপরদিকে, মার্কিন রাষ্ট্রপতি পদপার্থী তথা পূর্বতন রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্পও বাংলাদেশে সংখ্যালঘু হিন্দুদের উপর আক্রমণ নিয়ে সরব হয়েছেন। তিনি সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এক্সে লিখেছেন, অশান্ত বাংলাদেশে হিন্দু, খ্রিস্টান ও অন্যান্য সংখ্যালঘুরা প্রতিনিয়ত দুষ্কৃতীদের হাতে আক্রান্ত হচ্ছেন। সেখানে লুঠপাট চলছে। আমি এর তীব্র ভাষায় নিন্দা জানাচ্ছি। আমি ক্ষমতায় থাকলে, এমন কখনও হত না। কমলা হ্যারিস ও জো বাইডেন আমেরিকায় এবং বিশ্বজুড়ে হিন্দুদের গুরুত্ব দেননি। ইজরায়েল থেকে ইউক্রেন, এমনকী আমাদের নিজেদের দক্ষিণ সীমান্তেও বিপর্যয় ঘটিয়েছে। তবে আমরা ফের আমেরিকাকে শক্তিশালী করব এবং শক্তির মাধ্যমেই শান্তি ফিরিয়ে আনব। আমরা হিন্দু মার্কিন নাগরিকদেরও কট্টর বামপন্থীদের ধর্ম-বিরোধী অ্যাজেন্ডা থেকে রক্ষা করব। আমরা আপনাদের স্বাধীনতার জন্য লড়ব। আমার প্রশাসনের অধীনে ভারত ও আমার ভাল বন্ধু নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গেও সুসম্পর্ক আরো মজবুত করব।
Discussion about this post