শুরু করা যাক পদ্মাপারের এক নেতার জ্বালাময়ী ভাষণ দিয়ে। তিনি যা বলেছেন, একেবারে দাঁড়ি, কমা, সেমিকোলন সমেত এখানে তুলে ধরা হল। সামান্য সম্পাদনাও করা হয়নি। শোনাই পদ্মাপারের নেতার সেই জ্বালাময়ী ভাষণ।
‘দেশের পরিবেশকে যারা অস্থিতিশীল করতে চাইছে, হাদি ভাইকে যারা হত্যা করেছে, নির্বাচন যারা বানচাল করতে চাইছে, সীমান্তে যারা আমাদের ভাইদেরকে বোনদেরকে মেরে ঝুলিয়ে রাখে, তাদের আশ্রয়ে এবং প্রশ্রয়দাতা, পৃষ্ঠপোষকতা দিচ্ছে ভারত। ভারতকে স্পষ্ট ভাষায় বলতে চাই – আপনারা যেহেতু তাদেরকে আশ্রয়, প্রশ্রয় দিচ্ছেন, কথা স্পষ্ট করে বলে দিতে চাই ভারতের যারা সেপারেটিস্ট আছে বাংলাদেশে আমরা তাদেরকে আশ্রয় প্রশ্রয় দিয়ে যে সেভেন সিস্টার্স রয়েছে, সেই সেভেন সিস্টার্সকে ভারত থেকে আলাদা করে দেব।’ এই নেতার সঙ্গে আমাদের দর্শক এবং পাঠকের আরও একবার পরিচয় করিয়ে দেওয়া যাক।
এনার শুভ নাম হাসনাত। ইনি বাংলাদেশের কিংসপার্টির একজন শান্তশিষ্ট, ল্যাজবিশিষ্ট একজন নেতা। লেজটা বেরিয়ে ছিল গত জুলাই অগাস্টে, হাসিনা ক্ষমতা থেকে সরে যাওয়ার পর। অবশ্য, তাঁর একার কথা বলিই বা কেন? যে হুমকি তিনি দিয়েছেন, সেই একই হুমকি তো পদ্মাপারের আরও অনেকে দিয়েছিলেন। কিন্তু সেভেন সিস্টার্স যে তারা জীবনে দখল করতে পারবে না, সেটা তাদের কে বোঝায়। কারণ, সীমান্ত পেরিয়ে ভারত ভূখণ্ডে ঢুকলে আমাদের সেনার গুলি তাঁদের এফোঁড়- ওফোঁড় করে দেবে। কিম্বা বিমানে চাপিয়ে আবার বাংলাদেশে ফেরত পাঠিয়ে দেবে। অথচ এরা ভারতের চাল খাচ্ছে, ভারতে পিঁয়াজ খাচ্ছে। ভারত থেকে রফতানি করা লঙ্কা দিয়ে তারা আলুসেদ্ধর সঙ্গে মাখিয়ে খাচ্ছে। আর ভারতের চাল খেয়ে ভারতের বিরুদ্ধে হুমকি দিচ্ছে। কী হাস্যকর!
এই প্রসঙ্গে সেনাপ্রধান ওয়াকারের গত জানুয়ারিতে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারের প্রসঙ্গ উত্থাপন করতে হয়। সেই সাক্ষাৎকারে ওয়াকার বলেন, বাংলাদেশ ও ভারত বহু ক্ষেত্রে একে অপরের পরিপূরক। তার ওপর ভিত্তি করে ভারতের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখতে হবে। বাংলাদেশ প্রতিবেশীর কৌশলগত স্বার্থের বিরুদ্ধে যাবে না। আশা করবে ভারতও বাংলাদেশের স্বার্থকে অগ্রাধিকার দেবে।
আর ইউনূস মহাজন, হাসনাত, সারজিসরা বারে বারে সেভেন সিস্টার্স ভারত থেকে বিচ্ছিন্ন করার হুমকি দিচ্ছেন। এমনকী বাংলাদেশে দিল্লির মসনদ জ্বালিয়ে দেওয়ার মতো হুমকিও এসেছে। হুমকি দিয়েছেন হাসনাত। এবার একটু অন্যদিকে চোখ রাখা যাক।
মূল্যস্ফীতির চাপ সামলাতে ভারত থেকে ৫০ হাজার টন চাল কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। আগামী অর্থবর্ষে এই খাতে ব্যয় ধরা হয়েছে ২১৪কোটি ৭০ লক্ষ ৩৭ হাজার ৬৫০টাকা। বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি শুরু করেছে বাংলাদেশ। প্রতিকেজি ৪৩ টাকা। গত সোমবার এবং বুধবার দুই দিনে ১২০ মেট্রিকটন পেঁয়াজ পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে বাংলাদেশে পৌঁছেছে। ভারত যদি চাল, পেঁয়াজ, লঙ্কা পদ্মাপারে রফতানি বন্ধ করে দেয়, তাহলে তদারকি সরকার যে মহা ফ্যাসাদে পড়বে সেটা এই উঠতি নেতারা বুঝতে পারছে না। সব থেকে নজর করার মতো বিষয় হল, এই জঙ্গি নেতারা যা খুশি তাই বলে চলেছে। আর ইউনূস মহাজন চুপ করে সে সব তাড়িয়ে তাড়িয়ে উপভোগ করছে। আপনার সময় যে শেষ হয়ে আসছে ইউনূস সাহেব।












Discussion about this post