পশ্চিমবঙ্গের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর ওপর হামলার ছোক কষছে বাংলাদেশি জঙ্গি সংগঠনগুলি। এই আবহে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা বাহিনী সতর্ক করেছে রাজ্য ও কলকাতা পুলিশকে। শুভেন্দু অধিকারীর প্রকাশ্যে বাংলাদেশ বিরোধী মন্তব্যের জেরেই এই পরিকল্পনা জঙ্গি সংগঠনের।
রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর উপর হামলার পরিকল্পনা ধীরে ধীরে প্রকট করছে বাংলাদেশী জঙ্গি। মূলত ২৪ – ২৬শে ডিসেম্বরের মধ্যেই হামলার পরিকল্পনা করা হচ্ছে, গোয়েন্দা সূত্রে খবর এমনটাই। ইতিমধ্যেই কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদের তরফ থেকে রাজ্য পুলিশ ও কলকাতা পুলিশকে জানানোও হয়েছে । পুলিশ আধিকারিকের বার্তা পাঠিয়ে আলোচনার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা বাহিনী সূত্রে খবর, মূলত একটি জনসভায় শুভেন্দু অধিকারী বাংলাদেশ বিরোধী মন্তব্য করেন। তার জেরেই এই হামলার পরিকল্পনা।
কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা বাহিনীর দাবি, বাংলাদেশের দুটি জঙ্গি সংগঠন হারাকত-উল-জিয়াদ-আল-ইসলামি ও হিজাব-উদ-তাহিরের এই হামলার পরিকল্পনা। ৩ দুষ্কৃতীকে এনিয়ে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে বলেও জানা গিয়েছে একাধিক সংবাদমাধ্যম সূত্রে। এদিকে শুভেন্দু অধিকারীর নিরাপত্তার দায়িত্বে রয়েছে সিআরপিএফ আধিকারিক ও কেন্দ্রীয় জওয়ানরা। বর্তমানে জেড ক্যাটাগরির নিরাপত্তা পান শুভেন্দু অধিকারী।
এদিকে এই হামলার আশঙ্কার বিষয়টি সামনে আসার পরেই কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা এনিয়ে বিভিন্ন মহলকে সতর্ক করেছে বলে খবর। কোনও জনসভায় বা অন্য কোথাও এই হামলা হতে পারে আশঙ্কা করা হচ্ছে। তাঁর নিরাপত্তা যাতে সুরক্ষিত থাকে সেকারণে যাবতীয় ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
সম্প্রতি একটি জনসভায় শুভেন্দুকে বলতে শোনা যায়, “হাসিমারাতে ৪০টি রাফাল আছে। আরও বহু জায়গায় রয়েছে। কাছাকাছির নামটা বললাম। মাত্র দু’টো রাফাল যদি উড়িয়ে দেয় ভারত, প্যান্টে বাথরুম করে ফেলবে।”
এছাড়াও বাংলাদেশের তরফে ভারতীয় পণ্য বয়কটের যে ডাক ওঠে, তা নিয়েও ওই মঞ্চে সরব হতে দেখা যায় শুভেন্দু আধিকারিকে। তিনি বলেন “আমরা বাংলাদেশের উপর নির্ভর করি না। বাংলাদেশ আমাদের উপর নির্ভরশীল। আমরা যদি পণ্য না পাঠাই, তোমরা চাল-ডাল, জামাকাপড় কিছু পাবে না। ঝাড়খণ্ডে উৎপাদিত বিদ্যুৎ যদি না পাঠাই তোমাদের ৮০ শতাংশ গ্রাম অন্ধকারে ডুবে থাকবে।”
আর বাংলাদেশ বিরোধী মন্তব্য করেই বাংলাদেশী জঙ্গিদের টার্গেট শুভেন্দু অধিকারী এমনটাই মনে করছেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা।
মনে করা হচ্ছে সম্প্রতি শুভেন্দু একটা সভায় বলেছিলেন, মাত্র ২টি রাফালকে যদি উড়িয়ে দেয় ভারত তবে প্যান্টে বাথরুম করে দেবে।
তবে প্রাথমিকভাবে যে তথ্য মিলেছে তার ভিত্তিতেই প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিচ্ছেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা।
সম্প্রতি, মঙ্গলবারও বাংলাদেশী জঙ্গিদের প্রসঙ্গে বেশ কিছু মন্তব্য করেন শুভেন্দু। তিনি বলেছিলেন, ‘সম্প্রতি বেঙ্গালুরুতে ৮জন জঙ্গি ধরা পড়ে। যাদের সঙ্গে বাংলার যোগ রয়েছে। তার কারণ পশ্চিমবঙ্গে বাসন্তী এক্সপ্রেসওয়ে, কামালগাজি মোড় থেকে যে রাস্তা ক্যানিং হয়ে গোসাবার ঘাট পর্যন্ত গিয়েছে এই রাস্তা দুটো জঙ্গিদের হাতে চলে গিয়েছে। মমতা ব্যানার্জির ভোট ব্যাঙ্কের রাজনীতির কারণে।’
এখানেই শেষ নয়। কোন রুটে জঙ্গিরা ঢুকছে তারও কথা জানিয়েছিলেন তিনি।
শুভেন্দুর ওই বাংলাদেশি বিরোধী মন্তব্য নিয়ে এর আগেও বিতর্কের ঝড় উঠেছিল। বাংলাদেশ থেকেও কটাক্ষ ও হুশিয়ারী ধেয়ে এসেছিল। কিন্তু এই বক্তৃতার জন্যই কি শুভেন্দুর উপর হামলার ছক? তা যদিও নির্দিষ্ট করে খোলসা করা হয়নি। ।
Discussion about this post