বাংলাদেশের পূর্বতন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবার সাঁড়াশি চাপে। তাঁর বিরুদ্ধে এর আগে শয়ে শয়ে মামলা দায়ের হয়েছিল। এবার তাঁর ছেলে, মেয়ে ও বোনের নামেও একাধিক মামলা দায়ের হল বাংলাদেশে। শুধু তাই নয়, হাসিনার দুই সন্তানের যাবতীয় ব্যঙ্ক অ্যাকাউন্ট সিল করার নির্দেশ দিয়েছে ইউনূস সরকার। ফলে এবার আরও বিপাকে পড়লেন বাংলাদেশের পূর্বতন প্রধানমন্ত্রী শেথ হাসিনা।
বিশিষ্ট পরমানুবিজ্ঞানী ডঃ ওয়াজেদ মিঁয়া এবং বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রীর প্রথম সন্তান হলেন সজীব আহমেদ ওয়াজেদ জয়। তিনি এখন যুক্তরাষ্ট্রে কর্মরত। অপরদিকে দ্বিতীয় সন্তান হলেন সায়মা ওয়াজেদ পুতুল। তিনি বর্তমানে দিল্লিতে অবস্থিত বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার আঞ্চলিক পরিচালক হিসেবে কর্মরত এবং বিশিষ্ট অটিজম বিশেষজ্ঞ। শেখ হাসিনা পদত্যাগের পর তাঁর বোন শেখ রেহানাকে সঙ্গে নিয়েই বাংলাদেশ ছেড়েছিলেন। এখন বাংলাদেশের তদারকি সরকার শেখ হাসিনাকে ভারত থেকে ফিরিয়ে নিয়ে আসতে মরিয়া। এরই প্রক্রিয়া হিসেবে প্রথমে শতাধিক মামলা সাজানো হয়েছে। শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে খুন, ষড়যন্ত্র, গণহত্যা, অপহরণ ও অপরাধমূলক ষড়যন্ত্রের মতো গুরুতর অভিযোগ রয়েছে। এবার ইউনূস সরকারের লক্ষ্য হাসিনার ছেলে এবং মেয়ে।
বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজদ জয় ও মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুলের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট সিল করল বাংলাদেশ সরকার।সোমবারই বাংলাদেশ সরকারের তরফে সে দেশের সমস্ত ব্যাঙ্ক এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কাছে চিঠি পাঠানো হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, সজীব ওয়াজেদ জয় ও সায়মা ওয়াজেদ পুতুলের ব্যক্তিগত ও ব্যক্তিমালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানের ব্যাঙ্ক হিসাব ফ্রিজ থাকবে আগামী ৩০ দিন। এই সময় সেই সমস্ত অ্যাকাউন্টগুলির সমস্ত লেনদেন বন্ধ থাকবে। মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনের আওতায় এই চিঠি দেওয়া হয়েছে। ওই চিঠিতে আরও জানানো হয়েছে, প্রয়োজনে এই সময়সীমা আরও বাড়ানো হতে পারে। এছাড়া, হাসিনার দুই ছেলে-মেয়ের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ থাকাকালীন তাঁদের সমস্ত লেনদেনের হিসেব নিকেশ এবং তথ্য জমা করতে হবে ব্যাঙ্কগুলিকে। তবে শুধু শেখ হাসিনার পরিবার নয়, তাঁর বোন শেখ রেহানার ছেলে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিকি ববির ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টও সিল করা হয়েছে।
কূটনৈতিক মহলের দাবি, এবার আন্তর্জাতিক চাপ বাড়াতেই শেখ হাসিনা এবং তাঁর পরিবারের বিরুদ্ধে আর্থিক নয়ছয়ের মামলা সাজাতে তৎপর ইউনূস সরকার। যাতে ভারত না চাইলেও হাসিনাকে প্রত্যর্পণ করতে বাধ্য হয়। এর আগে শেখ হাসিনার কূটনৈতিক পাসপোর্ট বাতিল করেছিল বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। ফলে তিনি ভারতে ৪৫ দিনের বেশি কূটনৈতিক আশ্রয় নিয়ে থাকতে পারতেন না। সেই সময়সীমা পেরিয়ে গেলেও ভারত শেখ হাসিনাকে ফেরানোর বিষয়ে কোনও উদ্যোগ নেয়নি। এবার আটঘাঁট বেঁধেই আসরে নামছে ইউনূস সরকার। ইতিমধ্যেই হাসিনা সরকারের আমলে ভারতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোস্তাফিজুর রহমানকে দেশে ফিরিয়ে নিয়েছে বর্তমান তদারকি সরকার। তাঁর জায়গায় ইউনূসের পছন্দের কাউকে পাঠানো হতে পারে। এখন দেখার হাসিনার প্রত্যর্পণ নিয়ে নয়া দিল্লি কি অবস্থান নেয়।
Discussion about this post