হাসিনা এবং তাঁর আমলের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকে নিয়ে দিল্লির সঙ্গে এঁটে উঠতে ঢাকা পারেনি। না পেরে তারা সিদ্ধান্ত নিল ভারত থেকে চাল সরাসরি কিনবে। ভারতে চাল কিনবে। তবে সেটা সিঙ্গাপুর থেকে। মানে ঘুরিয়ে নাক দেখা। ইউনূস সরকার সিদ্ধান্ত নেয় ভারত থেকে পেঁয়াজ, কাঁচালঙ্কা রপ্তানির পরিমাণ কমিয়ে দেবে। তার জন্য যা হওয়ার সেটা হয়েছে। বাংলাদেশের বাজারে একসময় এক কিলো পেঁয়াজের দাম ১৫০ টাকায় গিয়ে পৌঁছায়। কোথাও কোথাও আবার এক কিলো পেঁয়াজ ১৬০ টাকাতেও বিক্রি হয়েছে। আর তাতেই মাথায় বাজ পড়ে ইউনূস সরকারের। জিভ কামড়ে সিদ্ধান্ত বদলে ফেলে। এতো গেল চাল, পেঁয়াজ, কাঁচা লঙ্কার গল্প।
এবার আসা যাক হাদিকে নিয়ে। মারল কারা, আর নাম জড়িয়ে দেওয়া হল ভারতের। তার কোনও পাকাপোক্ত প্রমাণ তারা দিতে পারেনি। বলছে, হাদির ঘাতকেরা সীমান্ত পেরিয়ে না কি অসমে চলে গিয়েছে। তারা রয়েছে গুয়াহাটিতে। কীসের ভিত্তিতে তাদের এই দাবি, তার কোনও প্রমাণ তারা আজ পর্যন্ত দিতে পারেনি। ভারতের বিরুদ্ধে না বললেই নয়, তাই বলা। এখানেই শেষ নয়। কিছুদিন আগে বাংলাদেশে ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মাকে তলব করে তাদের পররাষ্ট্র মন্ত্রক। তাঁকে বসিয়ে রেখে বেইজ্জত করা হয়েছে। ভারতের বিরুদ্ধে এমন সব অভিযোগ তোলা হয়েছে, যা শুনে সাউথব্লক ধৈর্য্য হারিয়ে ফেলে। যেদিন প্রণয় ভার্মাকে ডেকে পাঠানো হয়, সেদিন বিকেল দিল্লিতে বাংলাদেশের হাইকমিশনার রিয়াজ হামিদুল্লাহকে ডেকে পাঠায় বিদেশ মন্ত্রক। জানিয়ে দেওয়া হয়, বাংলাদেশ যেন ভদ্র এবং সংযত আচরণ করে।
সেটা তারা করেনি। মঙ্গলবার আরও একবার হাইকমিশনার ভার্মাকে তলব করে তাদের বিদেশমন্ত্রক। ডেকে পাঠান তাদের পররাষ্ট্র সচিব আসাদ আলম রিয়াম। এই নিয়ে গত ১০ দিনে ভারতের হাইকমিশনারকে দ্বিতীয়বার তলব করা হল। সূত্রের খবর, এদিনের তলবে ভার্মাকে বলা হয়েছে দিল্লি এবং শিলিগুড়িতে বাংলাদেশ হাইকমিশনের সামনে যা কিছু হয়েছে, তাতে ঢাকা রীতিমতো উদ্বিগ্ন। পরে বিদেশ মন্ত্রকের তরফে জারি করা হয় বিবৃতি। সেখানে বলা হয়, ‘বাংলাদেশ এই ধরনের সহিংসতা বা কূটনৈতিক স্থাপনার প্রতি হুমকিমূলক কাজকর্মের নিন্দা জানায়। এ সব কর্মকাণ্ড কেবল কূটনৈতিক কর্মীদের নিরাপত্তাই বিঘ্নিত করে না। বরং পারস্পরিক সম্মান, শান্তি ও সহনশীলতার মূল্যবোধকেও ক্ষুণ্ন করে। ’
বেশ সুন্দর কথা। শুনতে মন্দ লাগে না। গত দেড় বছর ধরে পদ্মাপারের নেতারা যে সব বক্তব্য দিয়ে এসেছেন, সেভেন সিস্টার্স ভারত থেকে আলাদা করে দেওয়ার হুমকি দিয়েছেন, ‘তখন পারস্পরিক সম্মান, শান্তি ও সহনশীলতার মূল্যবোধকে’ ক্ষুণ্ণ করেনি? হাসিনার বিদায়ের পর থেকে বাংলাদেশ হয়ে উঠেছিল ভারত-বিদ্বেষী। সেখানকার মাটি ব্যবহার করে ভারতের বুকে হয়েছে সন্ত্রাসী হামলা। তখন মূল্যবোধ জেগে ওঠেনি? তখন কি বিবেক ঘুমাচ্ছিল? তখন কোথায় ছিল পারস্পরিক সম্মানের কথা? আর এখন যেহেতু দিল্লি এবং শিলিগুড়ির হাইকমিশনের সামনে বিক্ষোভ প্রদর্শন হয়েছে, তখন আঁতে ঘা লেগেছে। সম্মানে লেগেছে। বিবেক বোধ হঠাৎ জেগে উঠেছে। আর গত দেড় বছরে কেউ বলেছে দেখে নেব, কেউ বলছে ভারতে থাকা সেপারেটিস্টদের আশ্রয় প্রশ্রয় দেওয়া হবে। যে হাদির জন্য তাদের চোখের জল পড়ছে, সেই হাদি কি কিছু কম বলেছে।
আসলে এত কিছু করেও দিল্লিকে জব্দ করতে পারেনি। তাই, ভিসা সেন্টার বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হল। কিন্তু তাতে তো উলটো পড়বে বাংলাদেশের। সে দেশ থেকে বহু মানুষ আসেন উন্নত চিকিৎসার জন্য এ দেশে আসেন। ভিসা সেন্টার বন্ধের ফলে তারা এ দেশে আসতে পারবেন না। এ দেশে তাদের যারা আত্মীয়স্বজন রয়েছে, তাঁরাও তো বিপদে পড়লেন। তাহলে ভিসা সেন্টার বন্ধ করে তো বাংলাদেশ নিজের পায়ে নিজেরাই কুড়ুল মারল। মানে নিজের নাক কেটে পরের যাত্রা ভঙ্গ করা।
বাংলাদেশে সমস্ত নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের দাম আকাশছৌঁয়া, শুধু সস্তা হল লাশ। তৌহিদি জনগনকে খুশি করতে হলে শুধু টাকা পয়সা এবং...
Read more












Discussion about this post