ভারতের বিরুদ্ধে হুমকির পরিণতি যে কি হতে পারে তা, টের পাচ্ছে চিন। ভারত বরাবরই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সমঝোতা এসে অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে নিজেদের পথ প্রশস্ত হতে উদ্যোগে থাকে। এর ফলে আমেরিকান ভারতের উপর থেকে সমস্ত টেরিফ তুলে নেবে যার ফলে লাভবান হবে ভারত। আর সেটাই মেনে নিতে পারবে না চিন। কারণ এর আগে চীনের তরফ থেকে আমেরিকার বিরুদ্ধে ট্রেড ওয়ার শুরু করার প্রস্তাব এসেছিল ভারতের কাছে। কিন্তু ভারত তাতে রাজি না হয় ট্রাম্পের সঙ্গে হাত মিলিয়ে দুই দেশের সম্পর্ককে আরও উন্নত করার দিকে এগিয়ে চলে।
জানা যায় ভারত এবং গোটা মার্কিন বিশ্বের উপর টারিফ কমাতে ডোনাল্ড ট্রাম্প পুরো ২৪৫ শতাংশ টেরিফ চীনের উপর চাপিয়ে দেয়। যার ফলে একেবারে আর্থিক বিপর্যয়ের সম্মুখীন। আর এই পরিস্থিতিতে ভারতের ওপর ক্রোধ প্রকাশ করে নিজের পরিকল্পনা সাজাতে শুরু করে চীন।
সম্প্রতি, চীন সরকার আমেরিকান শুল্ক থেকে মুক্তি পেতে, তাদের দেশের সাথে বাণিজ্য বন্ধ করার বিরুদ্ধে ভারত সহ অন্যান্য দেশগুলিকে যারা আমেরিকার সঙ্গে বাণিজ্যিক চুক্তি স্থাপনে উদ্যত তাদের, সাবধান করে দিয়েছে এবং এইসব দেশগুলির বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
পাশাপাশি,চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে যে তারা সংবাদমাধ্যমে জানাচ্ছে যে ট্রাম্পের প্রশাসন আলোচনার কৌশল হিসেবে চীনের সাথে বাণিজ্যের জন্য অন্যান্য দেশগুলিকে চাপ দেওয়ার চেষ্টা করছে।
মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে স্পষ্ট বলেছে “তুষ্টি শান্তি বয়ে আনবে না, এবং আপস সম্মান অর্জন করবে না ।”
“চীনের স্বার্থের বিনিময়ে যেকোনো পক্ষের চুক্তিতে পৌঁছানোর দৃঢ় বিরোধিতা করে,” অর্থাৎ স্পষ্ট ভাবে বলা হয় , চীন দৃঢ়ভাবে এর পাল্টা ব্যবস্থা নেবে।
এরপরে ভারত পাল্টা চীনের বিরুদ্ধে নতুন কৌশল শুরু করে দিয়েছে চীনের হুঁশিয়ারির পাল্টা প্রতিক্রিয়া হিসেবে। বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অপরিশোধিত ইস্পাত উৎপাদনকারী দেশ হিসেবে খ্যাত ভারত। এবার ভারতই কিছু ইস্পাত আমদানির উপর ১২% অস্থায়ী শুল্ক আরোপ করেছে, যা স্থানীয়ভাবে একটি সুরক্ষা শুল্ক হিসাবে পরিচিত, এটি মূলত চীন থেকে সস্তা চালানের বৃদ্ধি রোধ করার জন্য গুরুত্বপূর্ণ একটি পদক্ষেপ। গোটা বিশ্বে ভারত এমনই একটি দেশ যারা স্থানীয় শিল্পকে রক্ষা করার জন্য আমদানি রোধে পদক্ষেপ নেওয়ার পরিকল্পনা করেছে।
উল্লেখ্য গত কয়েক বছরে চীনা ইস্পাতের কারণে কিছু ভারতীয় মিল তাদের কার্যক্রম কমিয়ে আনতে এবং কর্মী ছাঁটাইয়ের কথা ভাবতে বাধ্য হয়েছে।
অর্থ মন্ত্রণালয় এক সরকারি বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে যে, ২১ এপ্রিল থেকে ২০০ দিনের জন্য এই শুল্ক কার্যকর থাকবে, যদি না প্রত্যাহার, বাতিল বা সংশোধিত হয় এর আগেই।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এপ্রিল মাসে বিভিন্ন দেশের উপর বিস্তৃত শুল্ক আরোপের পর থেকে চীনের সাথে তীব্র বাণিজ্য যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে এটি নয়াদিল্লির প্রথম বড় বাণিজ্য নীতি পরিবর্তন হিসেবেই দেখছে কূটনৈতিক মহল।
Discussion about this post